ঢাকা ০৫:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
“উৎসবমুখর বেসিস নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা “ বিড়ি শিল্পের শুল্ক প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন ঐহিত্য হারাচ্ছে নবীনগর সরকারি কলেজ রাজশাহী গোদাগাড়ীর ছয়ঘাটিতে রাতের আঁধারে ২০ বিঘা ফসলী জমির মাটি বিক্রির অভিযোগ হবিগঞ্জে স্বামীর ছুরিকাঘাতে গৃহবধুর নাড়ি-ভূড়ি বের হয়ে গেছে –২৪ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানের মাধ্যমে ‘বরগুনা জেলার সদর এলাকায় চাঞ্চল্যকর ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ’ মামলার পলাতক প্রধান আসামি খলিল ও বশির’কে রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ ও র‌্যাব-০৮ এর যৌথ আভিযানিক দল। –ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইনসহ কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সোহাগ @ গুটি সোহাগসহ ০২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। ডেমরার পরে আবারো সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীর কাছে হামলার শিকার হলেন সাংবাদিক কর্মীরা ডিআইজি, খুলনা রেঞ্জ কর্তৃক ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন। সিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের রেকার অপারেটর সোহেলের আত্মকাহিনী

সৌন্দর্যের স্বর্গরাজ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার পেনাং দ্বীপ

সারজিদ আহম্মেদ অপু
মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

প্রকৃতি যেন দু’হাত ভরে সম্পদ দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায়। চকচকে ও ঐতিহ্যের শহর কুয়ালালামপুর। লঙ্কাভি মানে সমুদ্রতট। গেনতিং হাইল্যান্ড বলতে পাহাড়। আর এসব এক সঙ্গে পাওয়া যাবে পেনাংয়ে। উত্তর-পশ্চিমের ওই দ্বীপরাজ্য আকর্ষক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে মালয়েশিয়া। পাহাড়-পর্বত আর দ্বীপের সমাহার এই মালয়েশিয়ায় পেনাং একটি অসাধারণ দ্বীপ। এটি একটি প্রদেশও। এই দ্বীপ প্রদেশের রাজধানীর নাম জর্জ টাউন। মূল ভূখন্ড থেকে দ্বীপে যাতায়াতের জন্য মোট দুইটি সেতু রয়েছে। ইতিহাস আর নান্দনিকতার মিশেল পেনাংকে আরো মোহনীয় করেছে। এক সঙ্গে এমন রসায়ন সহজে মেলে না। পেনাং-কে সে’দেশের ভোজন-রাজধানীও বলা হয়। এত বৈচিত্র্যময় খাদ্যের সম্ভার সেখানে। আবার চিনা নববর্ষ-সহ বেশ কিছু জমকালো, রঙিন উৎসবও হয় সেখানে। পেনাং শুধু বিনোদন-ভ্রমণের জন্য নয়, বাণিজ্যিক অধিবেশনেরও কেন্দ্র। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্থার ব্যবসায়িক সম্মেলন ও হয় ওখানে। পেনাং দ্বীপ মালয়েশিয়ার রাজ্য পেনাং এর প্রধান দ্বীপ। এটি মালয়েশিয়া উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে মালাক্কা প্রণালীতে অবস্থিত, এটি পেনাং প্রণালী দ্বারা মূল ভূখণ্ড থেকে পৃথক হয়েছে। পেনাংয়ের প্রায় অর্ধেক লোক এই দ্বীপে বাস করে; জর্জ টাউন শহর পুরো দ্বীপ জুড়ে এবং আরো পাঁচটি প্রত্যন্ত দ্বীপ নিয়ে গঠিত। জনসংখ্যায় জর্জ টাউন মালয়েশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর।
এর আয়তন ২৯৩ বর্গকিলোমিটার (১১৩ বর্গমাইল)
এর জনসংখ্যা প্রায় ৭,২২,৩৮৪ (২০১০)

পেনাং এ সৌন্দর্য ‌,

রাষ্ট্রীয় মসজিদ

পেনাং এর রাষ্ট্রীয় মসজিদ গ্রীনলেন উপশহরে ৪.৫ একর জুড়ে বিস্তৃত। এটা মালয়েশিয়ার সবচেয়ে জমকালো মসজিদ হিসেবে চিহ্নিত। মসজিদে প্রার্থনা হলে একটি ঝাড়বাতি রয়েছে যার মাপ বিশ ফিট বাই ষোল ফিট। মসজিদ ভ্রমণ করতে রাষ্ট্রীয় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এখানে পরিদর্শনে আসতে বিশেষ ধরনের পোষাকও পরিধান করতে হয় সুতরাং আসার আগে অবশ্যই পোষাক সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।

চায়ামাংকালারাম

এটা একটা বৌদ্ধ মন্দির যা ৫ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে। চায়ামাংকালারাম পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হেলানো বুদ্ধ মুর্তি। এখানে বুদ্ধ মুর্তির পিছনে প্রচুর কুলুঙ্গি রয়েছে যার মধ্যে পরিবারের সদস্য ও আত্বীয়-স্বজনের দেহভস্মসহ প্রচুর ভস্মাধার রয়েছে। ওয়াত চায়ামাংকালারাম এ মালয়েশিয়ার সর্ববৃহত প্যাগোডা রয়েছে যা নয় তলা উঁচু এবং মাপে ১৬৫ ফুট। এখানকার সারা কমপ্লেক্স জুড়ে রহস্যময় নাগা সর্প মুর্তি রয়েছে যেগুলি স্বর্গ ও মর্তের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরী করেছে। এখানে অবাধে প্রবেশ করা যায় কিন্তু প্রধান মন্দিরের মধ্যে ছবি তোলা নিষিদ্ধ।

পেনাং রাষ্ট্রীয় যাদুঘর

এই যাদুঘরে চিত্রাংকনের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে যার মধ্যে ক্যাপ্টেন রবার্ট স্মীথের দশটি মূল চিত্রাংকনের আটটিই রয়েছে। এখানে আরও রয়েছে বাবা নিওনিয়ার চীনা মাটির বাসন-কোসন, জুয়েলারী, পোষাক এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় মূল্যবান সামগ্রী যেগুলির সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অতুলনীয়।

পেনাং পাহাড়

পেনাং পাহাড় স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় মিলনস্থান । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৩০ মিটার উচ্চ এই পাহাড়ে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত নেমে আসে এবং এখান থেকে জর্জ টাউনের সুন্দর চলমান দৃশ্য ও মালয় উপদ্বীপের উপকুলভূমির দৃশ্য দেখা যায়।

উদ্ভিদ উদ্যান

এই ধরনের উদ্ভিদ উদ্যান মালয়েশিয়ায় মাত্র একটিই রয়েছে। এর আয়তন ৩০ হেক্টর এবং এটা জঙ্গলপূর্ণ পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। এখানে বিশাল ক্রান্তীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংগ্রহ রয়েছে। এখানে পেনাং ব্রীজের রেপ্লিকা, একটা পাঠাগার এবং রয়েছে প্রচুর রেসাস বানর।

বন চিত্তবিনোদন পার্ক

পেনাঙ এর উত্তর-পূর্ব অংশে ১০০ হেক্টর জমি নিয়ে এই সুন্দর পার্কটি অবস্থিত। এখানে কয়েকটি স্বচ্ছ পানির পুল, ফুটপাথ, বিশ্রাম ঘর, শিশুদের খেলার মাঠ এবং বন যাদুঘর আছে যেখানে গ্রীষ্মমন্ডলীয় কাষ্ঠ সামগ্রী এবং সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রজাতির পোকা রয়েছে।

ফোর্ট কর্ণওয়ালিস এবং রাজা এডওয়ার্ড সার্কাস ক্লক টাওয়ার

৬০ ফুট দীর্ঘ ক্লক টাওয়ারের জন্য বিখ্যাত এই দুর্গের প্রবেশ পথে নির্মিত এই টাওয়ার ১৮৯৭ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার হীরকজয়ন্তীতে তাঁকে উপহার প্রদান করা হয়। এর প্রতি ফুট রানীর প্রতি বছর শাসনকালের স্মরণে করা হয়। এই কাঠামো মূলতঃ কাঠের তৈরী এবং কামান দ্বারা বেষ্টিত যেগুলি বৃটিশরা অধিকার করেছিল। প্রধান কামানটির নাম সেরি র্যামবো যা ১৬১৩ সালের। স্থানীয় বিশ¦াস মতে, নারীগন যদি বিশেষ প্রার্থনা করেন ও এই কামানের চোঙায় ফুল দেন তাহলে সন্তান ধারনে সক্ষম হবেন।

কিভাবে যাবেন,

পেনাং দ্বীপে যাওয়া খুবই সহজ। ১৯৮৫ সালে পেনাং মালয় উপদ্বীপের মূলভূমির সাথে পেনাং ব্রীজ দ্বারা যুক্ত হয় যা প্রথিবীর অন্যতম বৃহত একটি সেতু। রেন্ট এ কার, মোটরবাইক অথবা ট্যাক্সি করে সহজেই এখানে আসা সম্ভব। আপনি যদি ট্যাক্সিতে যেতে চান তবে অবশ্যই রেট জেনে তারপর ভাড়া করবেন নতুবা আপনাকে পেনাং যেতে অতিরিক্ত চার্জ গুনতে হতে পারে। বাজেটের সমস্যা থাকলে বাসে করেও কম ভাড়ায় পেনাং যাওয়া সম্ভব। মালয়েশিয়ান রেলওয়ের যেসব ট্রেন সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালাম পুরের মধ্যে চলাচল করে পেনাং এ সেগুলির স্টপেজ রয়েছে।

নৌপথে,

পেনাং এ যাওয়ার জন্য বেশ কিছু ফেরী চলাচল করে নিয়মিত। ফেরীতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগে যা আপনাকে পেনাং এর মনোলোভা সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহায্য করবে।

আকাশ পথে,

মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স ও অন্যান্য বিমান সংস্থা নিয়মিত পেনাং এ ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। কিছু এয়ারলাইন্স ছুটির সময়ে আলাদা প্যাকেজ প্রদান করে থাকে, এবিষয়ে আপনার ট্রাভেল এজেন্সীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন আগেভাগে।

কোথায় থাকবেন,

পেনাং (Penang Island) এ শত শত হোটেল আর পর্যটক নিবাস রয়েছে। পেনাং এর সবচেয়ে ভাল কিছু হোটেল আর পর্যটক নিবাস হলো দি কপথর্ণ অর্কিড পেনাং, ফেরিঙ্গি মুতিয়ারা এপার্টমেন্ট, হলিডে ইন পেনাং, বেইয়ান লেপাস এর নিকট হোটেল ইকুয়াটোরিয়াল পেনাং, লোন পাইন হোটেল পেনাং, ইডেন ফেয়ারওয়ে কনডোমোনিয়াম পেনাং, পারসিয়ান গারনি হোটেল পেনাং, সেরি মালয়েশিয়া হোটেল, শাংগ্রী-লা’স রাসা সাইয়াঙ রিজোর্ট অথবা শাংগ্রী-লা’স গোল্ডেন স্যান্ডস রিজোর্ট পেনাং। আপনি আপনার সাধ্যমত 1 তারকা হোটেল থেকে 5 তারকা হোটেলে থাকতে পারবেন।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

“উৎসবমুখর বেসিস নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা “

সৌন্দর্যের স্বর্গরাজ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার পেনাং দ্বীপ

আপডেট টাইম ০২:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

সারজিদ আহম্মেদ অপু
মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

প্রকৃতি যেন দু’হাত ভরে সম্পদ দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায়। চকচকে ও ঐতিহ্যের শহর কুয়ালালামপুর। লঙ্কাভি মানে সমুদ্রতট। গেনতিং হাইল্যান্ড বলতে পাহাড়। আর এসব এক সঙ্গে পাওয়া যাবে পেনাংয়ে। উত্তর-পশ্চিমের ওই দ্বীপরাজ্য আকর্ষক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে মালয়েশিয়া। পাহাড়-পর্বত আর দ্বীপের সমাহার এই মালয়েশিয়ায় পেনাং একটি অসাধারণ দ্বীপ। এটি একটি প্রদেশও। এই দ্বীপ প্রদেশের রাজধানীর নাম জর্জ টাউন। মূল ভূখন্ড থেকে দ্বীপে যাতায়াতের জন্য মোট দুইটি সেতু রয়েছে। ইতিহাস আর নান্দনিকতার মিশেল পেনাংকে আরো মোহনীয় করেছে। এক সঙ্গে এমন রসায়ন সহজে মেলে না। পেনাং-কে সে’দেশের ভোজন-রাজধানীও বলা হয়। এত বৈচিত্র্যময় খাদ্যের সম্ভার সেখানে। আবার চিনা নববর্ষ-সহ বেশ কিছু জমকালো, রঙিন উৎসবও হয় সেখানে। পেনাং শুধু বিনোদন-ভ্রমণের জন্য নয়, বাণিজ্যিক অধিবেশনেরও কেন্দ্র। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্থার ব্যবসায়িক সম্মেলন ও হয় ওখানে। পেনাং দ্বীপ মালয়েশিয়ার রাজ্য পেনাং এর প্রধান দ্বীপ। এটি মালয়েশিয়া উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে মালাক্কা প্রণালীতে অবস্থিত, এটি পেনাং প্রণালী দ্বারা মূল ভূখণ্ড থেকে পৃথক হয়েছে। পেনাংয়ের প্রায় অর্ধেক লোক এই দ্বীপে বাস করে; জর্জ টাউন শহর পুরো দ্বীপ জুড়ে এবং আরো পাঁচটি প্রত্যন্ত দ্বীপ নিয়ে গঠিত। জনসংখ্যায় জর্জ টাউন মালয়েশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর।
এর আয়তন ২৯৩ বর্গকিলোমিটার (১১৩ বর্গমাইল)
এর জনসংখ্যা প্রায় ৭,২২,৩৮৪ (২০১০)

পেনাং এ সৌন্দর্য ‌,

রাষ্ট্রীয় মসজিদ

পেনাং এর রাষ্ট্রীয় মসজিদ গ্রীনলেন উপশহরে ৪.৫ একর জুড়ে বিস্তৃত। এটা মালয়েশিয়ার সবচেয়ে জমকালো মসজিদ হিসেবে চিহ্নিত। মসজিদে প্রার্থনা হলে একটি ঝাড়বাতি রয়েছে যার মাপ বিশ ফিট বাই ষোল ফিট। মসজিদ ভ্রমণ করতে রাষ্ট্রীয় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এখানে পরিদর্শনে আসতে বিশেষ ধরনের পোষাকও পরিধান করতে হয় সুতরাং আসার আগে অবশ্যই পোষাক সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।

চায়ামাংকালারাম

এটা একটা বৌদ্ধ মন্দির যা ৫ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে। চায়ামাংকালারাম পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হেলানো বুদ্ধ মুর্তি। এখানে বুদ্ধ মুর্তির পিছনে প্রচুর কুলুঙ্গি রয়েছে যার মধ্যে পরিবারের সদস্য ও আত্বীয়-স্বজনের দেহভস্মসহ প্রচুর ভস্মাধার রয়েছে। ওয়াত চায়ামাংকালারাম এ মালয়েশিয়ার সর্ববৃহত প্যাগোডা রয়েছে যা নয় তলা উঁচু এবং মাপে ১৬৫ ফুট। এখানকার সারা কমপ্লেক্স জুড়ে রহস্যময় নাগা সর্প মুর্তি রয়েছে যেগুলি স্বর্গ ও মর্তের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরী করেছে। এখানে অবাধে প্রবেশ করা যায় কিন্তু প্রধান মন্দিরের মধ্যে ছবি তোলা নিষিদ্ধ।

পেনাং রাষ্ট্রীয় যাদুঘর

এই যাদুঘরে চিত্রাংকনের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে যার মধ্যে ক্যাপ্টেন রবার্ট স্মীথের দশটি মূল চিত্রাংকনের আটটিই রয়েছে। এখানে আরও রয়েছে বাবা নিওনিয়ার চীনা মাটির বাসন-কোসন, জুয়েলারী, পোষাক এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় মূল্যবান সামগ্রী যেগুলির সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অতুলনীয়।

পেনাং পাহাড়

পেনাং পাহাড় স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় মিলনস্থান । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮৩০ মিটার উচ্চ এই পাহাড়ে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত নেমে আসে এবং এখান থেকে জর্জ টাউনের সুন্দর চলমান দৃশ্য ও মালয় উপদ্বীপের উপকুলভূমির দৃশ্য দেখা যায়।

উদ্ভিদ উদ্যান

এই ধরনের উদ্ভিদ উদ্যান মালয়েশিয়ায় মাত্র একটিই রয়েছে। এর আয়তন ৩০ হেক্টর এবং এটা জঙ্গলপূর্ণ পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। এখানে বিশাল ক্রান্তীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংগ্রহ রয়েছে। এখানে পেনাং ব্রীজের রেপ্লিকা, একটা পাঠাগার এবং রয়েছে প্রচুর রেসাস বানর।

বন চিত্তবিনোদন পার্ক

পেনাঙ এর উত্তর-পূর্ব অংশে ১০০ হেক্টর জমি নিয়ে এই সুন্দর পার্কটি অবস্থিত। এখানে কয়েকটি স্বচ্ছ পানির পুল, ফুটপাথ, বিশ্রাম ঘর, শিশুদের খেলার মাঠ এবং বন যাদুঘর আছে যেখানে গ্রীষ্মমন্ডলীয় কাষ্ঠ সামগ্রী এবং সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রজাতির পোকা রয়েছে।

ফোর্ট কর্ণওয়ালিস এবং রাজা এডওয়ার্ড সার্কাস ক্লক টাওয়ার

৬০ ফুট দীর্ঘ ক্লক টাওয়ারের জন্য বিখ্যাত এই দুর্গের প্রবেশ পথে নির্মিত এই টাওয়ার ১৮৯৭ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার হীরকজয়ন্তীতে তাঁকে উপহার প্রদান করা হয়। এর প্রতি ফুট রানীর প্রতি বছর শাসনকালের স্মরণে করা হয়। এই কাঠামো মূলতঃ কাঠের তৈরী এবং কামান দ্বারা বেষ্টিত যেগুলি বৃটিশরা অধিকার করেছিল। প্রধান কামানটির নাম সেরি র্যামবো যা ১৬১৩ সালের। স্থানীয় বিশ¦াস মতে, নারীগন যদি বিশেষ প্রার্থনা করেন ও এই কামানের চোঙায় ফুল দেন তাহলে সন্তান ধারনে সক্ষম হবেন।

কিভাবে যাবেন,

পেনাং দ্বীপে যাওয়া খুবই সহজ। ১৯৮৫ সালে পেনাং মালয় উপদ্বীপের মূলভূমির সাথে পেনাং ব্রীজ দ্বারা যুক্ত হয় যা প্রথিবীর অন্যতম বৃহত একটি সেতু। রেন্ট এ কার, মোটরবাইক অথবা ট্যাক্সি করে সহজেই এখানে আসা সম্ভব। আপনি যদি ট্যাক্সিতে যেতে চান তবে অবশ্যই রেট জেনে তারপর ভাড়া করবেন নতুবা আপনাকে পেনাং যেতে অতিরিক্ত চার্জ গুনতে হতে পারে। বাজেটের সমস্যা থাকলে বাসে করেও কম ভাড়ায় পেনাং যাওয়া সম্ভব। মালয়েশিয়ান রেলওয়ের যেসব ট্রেন সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালাম পুরের মধ্যে চলাচল করে পেনাং এ সেগুলির স্টপেজ রয়েছে।

নৌপথে,

পেনাং এ যাওয়ার জন্য বেশ কিছু ফেরী চলাচল করে নিয়মিত। ফেরীতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগে যা আপনাকে পেনাং এর মনোলোভা সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহায্য করবে।

আকাশ পথে,

মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স ও অন্যান্য বিমান সংস্থা নিয়মিত পেনাং এ ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। কিছু এয়ারলাইন্স ছুটির সময়ে আলাদা প্যাকেজ প্রদান করে থাকে, এবিষয়ে আপনার ট্রাভেল এজেন্সীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন আগেভাগে।

কোথায় থাকবেন,

পেনাং (Penang Island) এ শত শত হোটেল আর পর্যটক নিবাস রয়েছে। পেনাং এর সবচেয়ে ভাল কিছু হোটেল আর পর্যটক নিবাস হলো দি কপথর্ণ অর্কিড পেনাং, ফেরিঙ্গি মুতিয়ারা এপার্টমেন্ট, হলিডে ইন পেনাং, বেইয়ান লেপাস এর নিকট হোটেল ইকুয়াটোরিয়াল পেনাং, লোন পাইন হোটেল পেনাং, ইডেন ফেয়ারওয়ে কনডোমোনিয়াম পেনাং, পারসিয়ান গারনি হোটেল পেনাং, সেরি মালয়েশিয়া হোটেল, শাংগ্রী-লা’স রাসা সাইয়াঙ রিজোর্ট অথবা শাংগ্রী-লা’স গোল্ডেন স্যান্ডস রিজোর্ট পেনাং। আপনি আপনার সাধ্যমত 1 তারকা হোটেল থেকে 5 তারকা হোটেলে থাকতে পারবেন।