ঢাকা ১২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত। মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড তীব্রতাপ প্রভায়ে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ বগুড়া শাজাহানপুরে অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও “দেশ টিভির সাংবাদিককে লিগ্যাল নোটিশ” বাকেরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ শিক্ষার্থীর পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক :  উচ্চ রক্তচাপ খুব সাধারণ সমস্যা হলেও জীবনের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ে আসতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে থাকে মাথা ঘোরা এবং পেট ব্যথা। এই প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই আপনাকে প্রতিদিন রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে। যখন রক্তচাপ দ্রুত এবং গুরুতরভাবে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দনের ক্ষতি, স্ট্রোক, চোখের ক্ষতি এবং কিডনি ফাংশন হ্রাসের মতো নানা জটিলতারও সৃষ্টি হয়।

রক্তকে পূর্ণাঙ্গভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানোর জন্য হৃৎপিণ্ড প্রতিনিয়ত সংকোচন ও প্রসারণ করে থাকে। সংকোচন ও প্রসারণের সময় রক্তনালির মধ্য দিয়ে রক্ত যাওয়ার সময় শিরার ভেতরে এক প্রকার চাপ প্রয়োগ করে, যাকে আমরা রক্তচাপ বলি। রক্তচাপের কারণেই আমাদের সারা শরীরে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছাতে পারে। হৃৎপিণ্ড সংকোচনের সময় যে চাপ প্রয়োগ করে তাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ বলা হয়; যা সাধারণত ১২০ মিলিমিটার অব মার্কারি হয়ে থাকে। প্রসারণের সময় যে চাপ প্রয়োগ করে তাকে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বলে, যা সাধারণত ৮০ মিলিমিটার অব মার্কারি। একটি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ সাধারণত ১২০/৮০ মিলিমিটার অব মার্কারির সঙ্গে ১০ কমবেশি হতে পারে।

যখন একজন মানুষের হৃৎপিণ্ডের সংকোচনের চাপ ১৪০ মিলিমিটার অব মার্কারি থেকে বেশি ও প্রসারণের চাপ ৯০ মিলিমিটার থেকে বেশি হয় এবং তা সর্বনিম্ন টানা সাতদিন একই অবস্থায় থাকে, তখন এই অবস্থাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।

উচ্চ রক্তচাপ মূলত দুই প্রকার। প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ বা এসেনশিয়াল হাইপারটেনশন (৯০-৯৫ শতাংশ) এবং গৌণ উচ্চ রক্তচাপ বা সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন (১০-৫ শতাংশ)।

আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার অন্যান্য কার্যকরি উপায় হলো-

স্বাস্থ্যকর ডায়েট :  উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট পালন করা খুবই জরুরি। ডায়াটারি অ্যাপ্রোচেস টু স্টপ হাইপারটেনশন (ড্যাশ) বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ উপায়ে খাদ্যাভ্যাস পালন খুব জরুরি। ড্যাশ ডায়েটে তাজা সবজি, ফল, ননিহীন দুগ্ধজাতীয় খাবার, মাছ, ভূসি বা ভূসি সমেত খাবার, মুরগি এবং বাদাম থাকতে হবে। লাল মাংস, মিষ্টিজাতীয় খাবার এবং মিষ্টি এড়িয়ে যেতে হবে। এই ডায়েটে থাকবে উচ্চ পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন এবং আঁশ। চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন :  আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৫০ মিনিটের ব্যায়াম অবশ্যই প্রয়োজন। হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং, সাঁতার ও নাচের মতো অ্যারোবিক ব্যায়ামগুলো আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

লবণ কম গ্রহণ :  চর্বিযুক্ত এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার একেবারেই বাদ দিতে হবে। সোডিয়ামের গ্রহণ রক্তচাপকে বাড়িয়ে দেয়। খাবারে বাড়তি লবণ বা কাঁচা লবণ ব্যবহার করা যাবে না। তাই খাবার রান্নার সময়ই যতটুকু লবণ লাগে ব্যবহার করুন।

সুস্থ খাদ্য খান :  আপনার খাদ্যে প্রচুর তাজা ফল এবং সবজি যোগ করুন। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। কারণ এটি রক্তচাপের উপর সোডিয়ামের প্রভাবকে হ্রাস করতে সহায়তা করে। পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল কলা, অ্যাভোকাডো, পালং শাক, মাশরুম, শশা, ব্রোকলি, কমলালেবু এবং মিষ্টি আলু।

ধূমপান বন্ধ করুন :  ধূমপান শেষ করার পরেও বেশ কিছু মিনিট ধূমপান আপনার রক্তচাপ বাড়ায়। আপনার শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রা পুনরুদ্ধার করতে ধূমপান ছাড়ুন।

ক্যাফিন ছাড়ুন :  ক্যাফিন আপনার রক্তচাপ মাত্রা বাড়তে পারে। আপনার রক্তচাপ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনার ক্যাফিন জাতীয় খাবার খাওয়া সীমিত করুন।

কম চাপ নিন :  চাপ উচ্চ রক্তচাপ মাত্রা বাড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ। স্ট্রেস বা মানসিক চাপের প্রতি আপনার মনোভাব পরিবর্তন করে কম চাপ নিন। যোগ এবং ধ্যানও চাপ হ্রাস করার ভাল উপায়।

Tag :

আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়

আপডেট টাইম ০১:১৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

স্বাস্থ্য ডেস্ক :  উচ্চ রক্তচাপ খুব সাধারণ সমস্যা হলেও জীবনের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ে আসতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে থাকে মাথা ঘোরা এবং পেট ব্যথা। এই প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই আপনাকে প্রতিদিন রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে। যখন রক্তচাপ দ্রুত এবং গুরুতরভাবে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দনের ক্ষতি, স্ট্রোক, চোখের ক্ষতি এবং কিডনি ফাংশন হ্রাসের মতো নানা জটিলতারও সৃষ্টি হয়।

রক্তকে পূর্ণাঙ্গভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানোর জন্য হৃৎপিণ্ড প্রতিনিয়ত সংকোচন ও প্রসারণ করে থাকে। সংকোচন ও প্রসারণের সময় রক্তনালির মধ্য দিয়ে রক্ত যাওয়ার সময় শিরার ভেতরে এক প্রকার চাপ প্রয়োগ করে, যাকে আমরা রক্তচাপ বলি। রক্তচাপের কারণেই আমাদের সারা শরীরে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছাতে পারে। হৃৎপিণ্ড সংকোচনের সময় যে চাপ প্রয়োগ করে তাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ বলা হয়; যা সাধারণত ১২০ মিলিমিটার অব মার্কারি হয়ে থাকে। প্রসারণের সময় যে চাপ প্রয়োগ করে তাকে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বলে, যা সাধারণত ৮০ মিলিমিটার অব মার্কারি। একটি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ সাধারণত ১২০/৮০ মিলিমিটার অব মার্কারির সঙ্গে ১০ কমবেশি হতে পারে।

যখন একজন মানুষের হৃৎপিণ্ডের সংকোচনের চাপ ১৪০ মিলিমিটার অব মার্কারি থেকে বেশি ও প্রসারণের চাপ ৯০ মিলিমিটার থেকে বেশি হয় এবং তা সর্বনিম্ন টানা সাতদিন একই অবস্থায় থাকে, তখন এই অবস্থাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।

উচ্চ রক্তচাপ মূলত দুই প্রকার। প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ বা এসেনশিয়াল হাইপারটেনশন (৯০-৯৫ শতাংশ) এবং গৌণ উচ্চ রক্তচাপ বা সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন (১০-৫ শতাংশ)।

আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার অন্যান্য কার্যকরি উপায় হলো-

স্বাস্থ্যকর ডায়েট :  উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট পালন করা খুবই জরুরি। ডায়াটারি অ্যাপ্রোচেস টু স্টপ হাইপারটেনশন (ড্যাশ) বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ উপায়ে খাদ্যাভ্যাস পালন খুব জরুরি। ড্যাশ ডায়েটে তাজা সবজি, ফল, ননিহীন দুগ্ধজাতীয় খাবার, মাছ, ভূসি বা ভূসি সমেত খাবার, মুরগি এবং বাদাম থাকতে হবে। লাল মাংস, মিষ্টিজাতীয় খাবার এবং মিষ্টি এড়িয়ে যেতে হবে। এই ডায়েটে থাকবে উচ্চ পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন এবং আঁশ। চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন :  আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৫০ মিনিটের ব্যায়াম অবশ্যই প্রয়োজন। হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং, সাঁতার ও নাচের মতো অ্যারোবিক ব্যায়ামগুলো আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

লবণ কম গ্রহণ :  চর্বিযুক্ত এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার একেবারেই বাদ দিতে হবে। সোডিয়ামের গ্রহণ রক্তচাপকে বাড়িয়ে দেয়। খাবারে বাড়তি লবণ বা কাঁচা লবণ ব্যবহার করা যাবে না। তাই খাবার রান্নার সময়ই যতটুকু লবণ লাগে ব্যবহার করুন।

সুস্থ খাদ্য খান :  আপনার খাদ্যে প্রচুর তাজা ফল এবং সবজি যোগ করুন। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। কারণ এটি রক্তচাপের উপর সোডিয়ামের প্রভাবকে হ্রাস করতে সহায়তা করে। পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল কলা, অ্যাভোকাডো, পালং শাক, মাশরুম, শশা, ব্রোকলি, কমলালেবু এবং মিষ্টি আলু।

ধূমপান বন্ধ করুন :  ধূমপান শেষ করার পরেও বেশ কিছু মিনিট ধূমপান আপনার রক্তচাপ বাড়ায়। আপনার শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রা পুনরুদ্ধার করতে ধূমপান ছাড়ুন।

ক্যাফিন ছাড়ুন :  ক্যাফিন আপনার রক্তচাপ মাত্রা বাড়তে পারে। আপনার রক্তচাপ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনার ক্যাফিন জাতীয় খাবার খাওয়া সীমিত করুন।

কম চাপ নিন :  চাপ উচ্চ রক্তচাপ মাত্রা বাড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ। স্ট্রেস বা মানসিক চাপের প্রতি আপনার মনোভাব পরিবর্তন করে কম চাপ নিন। যোগ এবং ধ্যানও চাপ হ্রাস করার ভাল উপায়।