ঢাকা ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নবীনগরে কোয়েল চাষে স্বাবলম্বী আশরাফুল আলম সোহাগ

মো. নেয়ামত উল্লাহ্ (নবীনগর):   নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য আর ইচ্ছা থাকলে অনেকভাবেই আয় করা যায়। এমনই এক দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছেন আশরাফুল আলম সোহাগ নামের এক যুবক। কোয়েল পাখির খামার দিয়ে ডিম ও পাখি বিক্রি করে তিনি এলাকার যুবকদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছেন। নিজেও হয়েছেন স্বাবলম্বী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাশারুক গ্রামের ছেলে আশরাফুল আলম সোহাগ। বাড়ির আঙিনায় পা রাখতেই দেখা গেল তাঁর হাতে গড়া কোয়েলের তিনটি খামার। বাড়ির পাশে নিজেদের জমিতে ঘর তৈরি করে তার চারপাশে নেট নিয়ে তৈরি করেছেন কোয়েলের খামার। খামারের পাশেই ছোট এক ঘরে বসে কোয়েল চাষের নানা বিষয় নিয়ে কথা হল সোহাগের সাথে।

সোহাগ বলেন, ২০০৫ সালে স্থানীয় একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন তিনি। এরপর ২০০৭ সালে চলে যান দুবাই। সেখানেই কর্ম জীবনের শুরু। প্রায় নয় বছর প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফেরেন ২০১৫ সালে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ৩মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে শুরু করেন কোয়েল চাষ। প্রথম দিকে ৩০ দিনের ১০০ কোয়েলের বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন। প্রতিটি কোয়েলের বাচ্চা ৭টাকা দরে কেনেন। ১মাস পালনের পর সেই বাচ্চা গুলো ২৭ টাকা দরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। প্রথম মাসে খরচ বাদে তাঁর লাভ হয়েছিল ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। এভাবে আস্তে আস্তে তাঁর খামারের বিস্তার বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার খামারে কয়েক হাজার কোয়েল আছে। এর মধ্যে পুরুষ কোয়েল গুলোকে তিনি বিক্রি করে দেন। এরপর কোয়েলের পাশাপাশি ডিম বিক্রি ও শুরু হয়। একটি স্ত্রী কোয়েল ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ডিম পাড়া শুরু করে। এরা ১৮ মাস পর্যন্ত ডিম দেয়।

তিনি আরোও বলেন, এখন আমি প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ ডিম পাই। শিতের সময় ডিমের চাহিদা বেশি থাকে। এসব ডিম প্রতিদিনই কয়েকজন হকার বাড়ি থেকে এসে নিয়ে যায়। প্রতি হালি ডিমের দাম রাখা হয় ৮ টাকা। এছাড়া স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারের কাছেও তিনি ডিম বিক্রি করেন। পাইকারদের কাছে ১ হাজার ডিম ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা বিক্রি করেন। সোহাগ বলেন, সব মিলিয়ে খরচ বাদে এখন প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করেন। তবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কিংবা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে ব্যবসা আরো সম্প্রসারিত করবেন, এমনটাই আসা সোহাগের।

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

নবীনগরে কোয়েল চাষে স্বাবলম্বী আশরাফুল আলম সোহাগ

আপডেট টাইম ০২:৫৭:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৮

মো. নেয়ামত উল্লাহ্ (নবীনগর):   নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য আর ইচ্ছা থাকলে অনেকভাবেই আয় করা যায়। এমনই এক দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছেন আশরাফুল আলম সোহাগ নামের এক যুবক। কোয়েল পাখির খামার দিয়ে ডিম ও পাখি বিক্রি করে তিনি এলাকার যুবকদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছেন। নিজেও হয়েছেন স্বাবলম্বী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাশারুক গ্রামের ছেলে আশরাফুল আলম সোহাগ। বাড়ির আঙিনায় পা রাখতেই দেখা গেল তাঁর হাতে গড়া কোয়েলের তিনটি খামার। বাড়ির পাশে নিজেদের জমিতে ঘর তৈরি করে তার চারপাশে নেট নিয়ে তৈরি করেছেন কোয়েলের খামার। খামারের পাশেই ছোট এক ঘরে বসে কোয়েল চাষের নানা বিষয় নিয়ে কথা হল সোহাগের সাথে।

সোহাগ বলেন, ২০০৫ সালে স্থানীয় একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন তিনি। এরপর ২০০৭ সালে চলে যান দুবাই। সেখানেই কর্ম জীবনের শুরু। প্রায় নয় বছর প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফেরেন ২০১৫ সালে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ৩মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে শুরু করেন কোয়েল চাষ। প্রথম দিকে ৩০ দিনের ১০০ কোয়েলের বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন। প্রতিটি কোয়েলের বাচ্চা ৭টাকা দরে কেনেন। ১মাস পালনের পর সেই বাচ্চা গুলো ২৭ টাকা দরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। প্রথম মাসে খরচ বাদে তাঁর লাভ হয়েছিল ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। এভাবে আস্তে আস্তে তাঁর খামারের বিস্তার বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার খামারে কয়েক হাজার কোয়েল আছে। এর মধ্যে পুরুষ কোয়েল গুলোকে তিনি বিক্রি করে দেন। এরপর কোয়েলের পাশাপাশি ডিম বিক্রি ও শুরু হয়। একটি স্ত্রী কোয়েল ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ডিম পাড়া শুরু করে। এরা ১৮ মাস পর্যন্ত ডিম দেয়।

তিনি আরোও বলেন, এখন আমি প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ ডিম পাই। শিতের সময় ডিমের চাহিদা বেশি থাকে। এসব ডিম প্রতিদিনই কয়েকজন হকার বাড়ি থেকে এসে নিয়ে যায়। প্রতি হালি ডিমের দাম রাখা হয় ৮ টাকা। এছাড়া স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারের কাছেও তিনি ডিম বিক্রি করেন। পাইকারদের কাছে ১ হাজার ডিম ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা বিক্রি করেন। সোহাগ বলেন, সব মিলিয়ে খরচ বাদে এখন প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করেন। তবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কিংবা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে ব্যবসা আরো সম্প্রসারিত করবেন, এমনটাই আসা সোহাগের।