ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

নদী তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা

আমিনুল ইসলাম আল-আমিন ;
,মতলব থেকে : পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদী বিধৌত চাঁদপুর জেলা। বর্ষা মৌসুমে নদী তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। এ বছরও বর্ষার শুরু থেকে নৌকা তৈরি শুরু হয়েছে, এখন বিক্রি প্রায় শেষে দিকে। জেলার মতলব উত্তর উপজেলার সটাকি, গালিমখাঁ বাংলাবাজার, মতলব দক্ষিণ উপজেলার বড়দিয়া, আড়ংবাজার ও নাগদা এলাকায় নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। ইতোমধ্যে এসব নৌকা বিক্রি প্রায় শেষের দিকে।

মতলব উত্তর উপজেলার সটাকি বাজারে ১০-১৫টি দোকান, গালিমখাঁ বাংলাবাজারে ১২টি দোকান রয়েছে নৌকা তৈরির। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় বিক্রি হয় তাদের তৈরি নৌকা।

মতলব পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের বড়দিয়া, আড়ংবাজার ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা তৈরির প্রায় ১৫টি কারখানা ও ছোট ছোট দোকান। কারিগররা নৌকা তৈরির কাজে লেগে পড়েছেন। অনেকেই নৌকা তৈরি করে পানিতে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ কারখানা ও ডাঙায় রেখেছেন। আর এসব নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে ৭ হাজার টাকায়।
জানা যায়, উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলিতে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা নৌকার মাধ্যমে স্কুলে যাতায়াত করে থাকে। বর্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এলাকার মৌসুমি জেলেরা নৌকা দিয়ে রাত দিন মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। উপজেলার নিচু এলাকার বাসিন্দারা নৌকার মাধ্যমে খেয়া পাড় হয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম ও স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, হাটবাজারে যায়।

নদী তীরবর্তী বিভিন্ন বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রীরা। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটায় ব্যস্ত কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক বা গজাল লাগাতে ও কাউকে আবার তৈরি নৌকা বিক্রি করতেও দেখা গিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন ক্রেতারা তাদের পছন্দসই নৌকা এখান থেকে কিনে নিচ্ছে।

সটাকি বাজারের নৌকা তৈরির এক কারিগর বলেন, তিনি দীর্ঘ ১০ বছর বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরি করে বিক্রি করেন। তিনি জানান, যেসব এলাকায় সড়কগুলো ভালো এবং উপজেলা সড়কের সঙ্গে যোগযোগ রয়েছে তাদের চলাচলে সমস্যা হয় না। কিন্তু নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষগুলোর বর্ষায় চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। এ সময় গ্রামগুলোর চারপাশে পানি থৈ-থৈ করে। তাই আমরা এক মাস আগে থেকেই নৌকা তৈরি শুরু করেছি।

একই এলাকার আরেক কারিগর বাবুল হোসেন বলেন, আমরা যেসব নৌকা তৈরি করি স্থানীয়ভাবে কোষা নৌকা বলা হয়। এসব কোষা নৌকা তৈরি করতে দুইজন কারিগরের একদিন সময় লাগে। ব্যবহার হয় কড়াই ও চাম্বল কাঠ। মজুরি, কাঠসহ ব্যয় হয় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। বিক্রি করেন ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। আবার অনেক সময় সাইজে ছোট হলে দামও কম হয়। আমরা গত বছর ৫০টিরও বেশি নৌকা বিক্রি করেছি। এখন নৌকা তৈরি করে রেখেছি, কয়েক দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু হবে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

নদী তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা

আপডেট টাইম ১২:৪৬:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১

আমিনুল ইসলাম আল-আমিন ;
,মতলব থেকে : পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদী বিধৌত চাঁদপুর জেলা। বর্ষা মৌসুমে নদী তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। এ বছরও বর্ষার শুরু থেকে নৌকা তৈরি শুরু হয়েছে, এখন বিক্রি প্রায় শেষে দিকে। জেলার মতলব উত্তর উপজেলার সটাকি, গালিমখাঁ বাংলাবাজার, মতলব দক্ষিণ উপজেলার বড়দিয়া, আড়ংবাজার ও নাগদা এলাকায় নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। ইতোমধ্যে এসব নৌকা বিক্রি প্রায় শেষের দিকে।

মতলব উত্তর উপজেলার সটাকি বাজারে ১০-১৫টি দোকান, গালিমখাঁ বাংলাবাজারে ১২টি দোকান রয়েছে নৌকা তৈরির। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় বিক্রি হয় তাদের তৈরি নৌকা।

মতলব পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের বড়দিয়া, আড়ংবাজার ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা তৈরির প্রায় ১৫টি কারখানা ও ছোট ছোট দোকান। কারিগররা নৌকা তৈরির কাজে লেগে পড়েছেন। অনেকেই নৌকা তৈরি করে পানিতে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ কারখানা ও ডাঙায় রেখেছেন। আর এসব নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে ৭ হাজার টাকায়।
জানা যায়, উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলিতে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা নৌকার মাধ্যমে স্কুলে যাতায়াত করে থাকে। বর্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এলাকার মৌসুমি জেলেরা নৌকা দিয়ে রাত দিন মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। উপজেলার নিচু এলাকার বাসিন্দারা নৌকার মাধ্যমে খেয়া পাড় হয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম ও স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, হাটবাজারে যায়।

নদী তীরবর্তী বিভিন্ন বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রীরা। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটায় ব্যস্ত কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক বা গজাল লাগাতে ও কাউকে আবার তৈরি নৌকা বিক্রি করতেও দেখা গিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন ক্রেতারা তাদের পছন্দসই নৌকা এখান থেকে কিনে নিচ্ছে।

সটাকি বাজারের নৌকা তৈরির এক কারিগর বলেন, তিনি দীর্ঘ ১০ বছর বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরি করে বিক্রি করেন। তিনি জানান, যেসব এলাকায় সড়কগুলো ভালো এবং উপজেলা সড়কের সঙ্গে যোগযোগ রয়েছে তাদের চলাচলে সমস্যা হয় না। কিন্তু নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষগুলোর বর্ষায় চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। এ সময় গ্রামগুলোর চারপাশে পানি থৈ-থৈ করে। তাই আমরা এক মাস আগে থেকেই নৌকা তৈরি শুরু করেছি।

একই এলাকার আরেক কারিগর বাবুল হোসেন বলেন, আমরা যেসব নৌকা তৈরি করি স্থানীয়ভাবে কোষা নৌকা বলা হয়। এসব কোষা নৌকা তৈরি করতে দুইজন কারিগরের একদিন সময় লাগে। ব্যবহার হয় কড়াই ও চাম্বল কাঠ। মজুরি, কাঠসহ ব্যয় হয় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। বিক্রি করেন ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। আবার অনেক সময় সাইজে ছোট হলে দামও কম হয়। আমরা গত বছর ৫০টিরও বেশি নৌকা বিক্রি করেছি। এখন নৌকা তৈরি করে রেখেছি, কয়েক দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু হবে।