ভাস্কর মজুমদার, কমলনগর উপজেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর ।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরবাসীকে ভাঙ্গন থেকে বাঁচাতে নদীতীরে বাঁধ নির্মাণের দাবীতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ৩১ মে সোমবার সকাল ১০টায় রামগতি ও কমলনগর বাঁচাও মঞ্চের ব্যানারে কমলনগরের মাতাব্বর হাট এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মঞ্চের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার ফলোয়ান, সাংবাদিক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, ওয়াজি উল্যা জুয়েল, যুবলীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন হেলাল, চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, রাকিব হোসেন লোটাস প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা দাবী করেন, মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গনে প্রতিনিয়ত গৃহহীন হয়ে পড়ছে শত শত মানুষ। বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, সরকারি- বেসরকারি বহু স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে এ দু’উপজেলার লাখো মানুষ। এখনো মেঘনার ভাঙ্গণ অব্যাহত রয়েছে। যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। এসময় নিন্মঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন। সদ্য বয়ে যাওয়া ঘুর্নিঝড় ইয়াসের পানিতেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এ উপকূলে।
রামগতি- কমলনগর উপজেলার মেঘনার তীর এলাকার ৩১ কিলোমিটারে কোন বাঁধ না থাকায় এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় দেয়ার ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের দিকে তাকিয়ে আছে রামগতি-কমলনগরের প্রায় ছয় লক্ষ মানুষ। তাদের আশা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলীয় এ জনপদের মানুষের স্বপ্ন পূরণ করবেন। এজন্য তারা আশায় বুক বেধে আছেন।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের মেঘনার ভাঙন রোধে ৩ হাজার ৯০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। একনেক সভায় অনুমোদন পেলেই টেকসই বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানান লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ।
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৩১ কিলোমিটার মেঘনা নদী ভাঙ্গনরোদকারী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার অপেক্ষায় রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইতোমধ্যে তিন হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বরাদ্দের ফাইল তৈরি করা হয়েছে। গত ১৭ মে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ফাইলটিতে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তী একনেক সভায় ফাইলটি উপস্থাপনের কথা রয়েছে। একনেকে উপস্থাপনের পর ফাইলটিতে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করলে অর্থ ছাড় পাওয়া যাবে।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম নুরুল আমিন রাজু বলেন, ভাঙনে প্রতিদিনই মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুজ্জাহের সাজু ভাঙন রোধ প্রকল্পের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ফাইলটিতে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরে এ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য আবদুজ্জাহের সাজু বলেন, নদী ভাঙন রোধ এ অঞ্চলে মানুষের প্রাণের দাবি। জন্মভূমি রক্ষা এবং মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আমি বিভিন্ন কার্যালয়ে যোগাযোগ রেখেছি। প্রত্যাশা রাখছি, শিগগিরই অবহেলিত জনগোষ্ঠী কাঙ্ক্ষিত সুখবর পাবেন।