ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইলে অবৈধভাবে নদী ও ফসলী জমির মাটিকাটা হচ্ছে, প্রশাসন নিরব! সাধারন মানুষ হতাশ

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধভাবে নদী ও ফসলী জমির মাটিকাটা হচ্ছে, অনেকাংশেই প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় সাধারন মানুষ হতাশ। বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ধলেশ্বরী নদীর দু পাড়ের মাটি বিক্রির হিড়িক পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ২০-৩০ টি পয়েন্ট থেকে শতাধিক ট্রলি ট্রাক্টর ভরে নদীর তীর ও ফসলি জমির টপ সয়েল কাটছে স্থানীয় কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। আর এসব মাটি তারা বিক্রি করছে পার্শ্ববর্তী ইট ভাটা ও বসতবাড়ীতে। নাগরপুরে বৈধ-অবৈধ সচল প্রায় ২০ টি ইটের ভাটা রয়েছে। এসব ভাটার কাঁচা মাল ফসলি জমির মাটি। মাটি কাটার কারনে কৃষি জমি হারাচ্ছে উর্বরতা আর ভাঙ্গন আতঙ্কে পড়ছে নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ । অথচ এসব জমিতে ভুট্টা, কালাই, শীতকালীন সবজি সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল হতো। উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত শামসুল সেতুর দু’পাশ, সহবতপুরের নন্দপাড়া ধলেশ্বরীর শাখা নদী দু’পাড়, গয়হাটা ইউনিয়নের আগত গয়হাটা নদী, মোকনা ইউনিয়নের কেদারপুর শেখ হাসিনা সেতুর পূর্ব পাড়, সলিমাবাদ ও দপ্তিয়র ইউনিয়নের যমুনার শাখা নদী, মামুদনগর ইউনিয়নের ধল্লা নদী পাড়, ভারড়া ইউনিয়নের আগদিঘুলিয়া সহ পুরো উপজেলার নদী, খাল, বিল, খাষ জমি, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু ও আবাদি জমির মাটি যে যেমন পারছে কেটে সাবাড় করছে। দীর্ঘদিন যাবত এসব মাটি কেটে বিক্রির করলেও অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রভাবশালী মহল তাদের প্রভাব খাটিয়ে মাটির ব্যবসা করে যাচ্ছে। আর প্রশাসন এদের কিছুই বলছে না। প্রশাসনের এ নিরবতায় সাধারন মানুষের মনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। মাটি খেকোদের দাপট দিন দিন বাড়ছে। নাগরপুরে অবৈধ মাটি কাটা একমাত্র প্রশাসনই বন্ধ করতে পারবে বলে স্হানীয়রা মনে করছে। সচেতন ও ভুক্তভোগী মানুষ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকদের ইতিপূর্বে বলেছিলেন -অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অথচ স্থানীয় প্রশাসন কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহান বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন, নাগরপুরের পক্ষ থেকে আমি এবং সহকারী কমিশনার(ভূমি) শামসুল হক সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গিয়েছি এবং সরজমিনে গিয়ে জানতে পেরেছি যে সকল স্পটের কথা বলা হয়েছে সেগুলো অধিকাংশই পার্শ্ববর্তী উপজেলার আওতায় যেখানে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের আওতা বহির্ভূত। শেখ হাসিনা সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকায় এবং অন্যান্য এলাকায়ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযানের উদ্দেশ্যে যাওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, “ঘটনাস্থলে অপরাধ সংঘটিত হওয়াকালীন সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।” তা নাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়মিত মামলার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আতাউল গনি বলেন, ধলেশ্বরী থেকে মাটি কাটার বিষয়টি জানার পর, উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

টাঙ্গাইলে অবৈধভাবে নদী ও ফসলী জমির মাটিকাটা হচ্ছে, প্রশাসন নিরব! সাধারন মানুষ হতাশ

আপডেট টাইম ০৫:৩৩:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধভাবে নদী ও ফসলী জমির মাটিকাটা হচ্ছে, অনেকাংশেই প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় সাধারন মানুষ হতাশ। বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ধলেশ্বরী নদীর দু পাড়ের মাটি বিক্রির হিড়িক পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ২০-৩০ টি পয়েন্ট থেকে শতাধিক ট্রলি ট্রাক্টর ভরে নদীর তীর ও ফসলি জমির টপ সয়েল কাটছে স্থানীয় কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। আর এসব মাটি তারা বিক্রি করছে পার্শ্ববর্তী ইট ভাটা ও বসতবাড়ীতে। নাগরপুরে বৈধ-অবৈধ সচল প্রায় ২০ টি ইটের ভাটা রয়েছে। এসব ভাটার কাঁচা মাল ফসলি জমির মাটি। মাটি কাটার কারনে কৃষি জমি হারাচ্ছে উর্বরতা আর ভাঙ্গন আতঙ্কে পড়ছে নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ । অথচ এসব জমিতে ভুট্টা, কালাই, শীতকালীন সবজি সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল হতো। উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত শামসুল সেতুর দু’পাশ, সহবতপুরের নন্দপাড়া ধলেশ্বরীর শাখা নদী দু’পাড়, গয়হাটা ইউনিয়নের আগত গয়হাটা নদী, মোকনা ইউনিয়নের কেদারপুর শেখ হাসিনা সেতুর পূর্ব পাড়, সলিমাবাদ ও দপ্তিয়র ইউনিয়নের যমুনার শাখা নদী, মামুদনগর ইউনিয়নের ধল্লা নদী পাড়, ভারড়া ইউনিয়নের আগদিঘুলিয়া সহ পুরো উপজেলার নদী, খাল, বিল, খাষ জমি, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু ও আবাদি জমির মাটি যে যেমন পারছে কেটে সাবাড় করছে। দীর্ঘদিন যাবত এসব মাটি কেটে বিক্রির করলেও অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রভাবশালী মহল তাদের প্রভাব খাটিয়ে মাটির ব্যবসা করে যাচ্ছে। আর প্রশাসন এদের কিছুই বলছে না। প্রশাসনের এ নিরবতায় সাধারন মানুষের মনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। মাটি খেকোদের দাপট দিন দিন বাড়ছে। নাগরপুরে অবৈধ মাটি কাটা একমাত্র প্রশাসনই বন্ধ করতে পারবে বলে স্হানীয়রা মনে করছে। সচেতন ও ভুক্তভোগী মানুষ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকদের ইতিপূর্বে বলেছিলেন -অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অথচ স্থানীয় প্রশাসন কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহান বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন, নাগরপুরের পক্ষ থেকে আমি এবং সহকারী কমিশনার(ভূমি) শামসুল হক সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গিয়েছি এবং সরজমিনে গিয়ে জানতে পেরেছি যে সকল স্পটের কথা বলা হয়েছে সেগুলো অধিকাংশই পার্শ্ববর্তী উপজেলার আওতায় যেখানে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের আওতা বহির্ভূত। শেখ হাসিনা সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকায় এবং অন্যান্য এলাকায়ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযানের উদ্দেশ্যে যাওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, “ঘটনাস্থলে অপরাধ সংঘটিত হওয়াকালীন সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।” তা নাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়মিত মামলার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আতাউল গনি বলেন, ধলেশ্বরী থেকে মাটি কাটার বিষয়টি জানার পর, উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।