ঢাকা ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

জমিও নেই, ঘরও নেই, খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বৃদ্ধা সালেহার বসবাস

কালকিনি(মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
মোর কোন জমিও নাই, ঘরও নাই, থাকার মত কোন স্থান নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন মতে অন্যের জমিতে পলিথিন দিয়ে খুপড়ি ঘর বানিয়ে থাকি। রাতে ঘুমাতে পারিনা, কারন বৃষ্টির দিনে ছিদ্র চালা দিয়ে ঘরের কাতা-বালিশসহ সব কিছু ভিজে যায় পানিতে আর শীতের দিনে প্রচন্ড শীত ঢোকে ঘরের ভেতরে। ঝর হলে এ ঘরে থাকতে পারিনা, উলোটপালট করে দিয়ে যায় সব। তহন মোগো আশ্রায় নিতে হয় কোন সাইক্লোন সেন্টারে। এ রকম নানামুখি সমস্যা নিয়ে চোখের জ্বল ফেলে কথাগুলো বললেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম পুয়ালী গ্রামের অসহায় বৃদ্ধা সালেহা বেগম-(৬০)। তিনি আরো বলেন, মোর স্বামী রহমান হাওলাদার বয়সের ভারে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। সে কোন কাজকর্মও করতে পারেনা। মোর চারটি মেয়ে, কোন ছেলে নাই। স্বামীর যা ছিল সব বিক্রি করে বহু কষ্টে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে, এখন তারা যে যার মত করে স্বামীর সঙ্গে আছে। ছোট মেয়ে সাথী পঞ্চম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে কিন্তু অর্থের অভাবে তারে আর পড়াতে পারছিনা। অনেক সময় না খেয়ে থেকে দিন চলে যায়। একদিকে খেতেও পারিনা অন্যদিকে মাথার গোজার ঠাইও নাই। রোদ,বৃষ্টি, ঝড়, শীত সবই মোর আর মোর পরিবারে মাথার উপর দিয়া যায়। হের পরও মোর ভাগ্যে আজ পর্যন্ত একখানা ঘর জুটলোনা। মুই এহন পরিবার লইয়া কই যাইমু। শেখের বিটি হাসিনা যদি দয়া করে মোরে একখান ঘর দিত তাহলে মোদের একটু মাথা গোজার ঠাই হত।
সরেজমিনে গিয়ে যানাগেছে, ২০০৭ইং সালের প্রলংকারী ঘুর্নিঝড় সিডরে বৃদ্ধ সালেহা বেগমের স্বামীর একমাত্র সম্বল দুই চালা টিনের বসত ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে যায়। এতে করে সালেহা পরিবার নিয়ে থাকার জন্য কোন স্থান ছিলনা। এরপর থেকে সালেহা বেগমকে পার্শবর্তী দক্ষিন গোপালপুর গ্রামের রহিম কাজী অস্থায়ীভাবে তার পরিত্যক্ত একটি ভিটায় থাকার জন্য জায়গা দেন। পরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কিছু টিন ও পলিথিন সংগ্রহ করে সেখানে সালেহা বেগম ছোট একটি এক চালা খুপড়ি ঘর বানিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এরপর সালেহা বেগম এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনের কাছে বছরের পর বছর ধর্না দিয়েও একটি ঘর তার কপালে জোটেনি। বর্তমানে তিনি তার পরিবার নিয়ে একটি ঘরের অভাবে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
বৃদ্ধা সালেহা বেগম বলেন, এই দুনিয়াতে কার খবর কেডা রাহে একখান ঘরের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেকবার গিয়েও আজ পর্যন্ত পাইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার শেষ দাবি তিনি একখান ঘর মোরে দিলে পরিবার নিয়ে সুখে থাকতে পারতাম। আর তা না হলে কবরে গিয়েও শান্তি পামুনা।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বর বলেন, ভুলক্রমে তার নামটা ঘরের তালিকায় যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বৃদ্ধা সালেহার নাম তালিকায় উঠে না থাকলেও তাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

জমিও নেই, ঘরও নেই, খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বৃদ্ধা সালেহার বসবাস

আপডেট টাইম ০৮:২৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

কালকিনি(মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
মোর কোন জমিও নাই, ঘরও নাই, থাকার মত কোন স্থান নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন মতে অন্যের জমিতে পলিথিন দিয়ে খুপড়ি ঘর বানিয়ে থাকি। রাতে ঘুমাতে পারিনা, কারন বৃষ্টির দিনে ছিদ্র চালা দিয়ে ঘরের কাতা-বালিশসহ সব কিছু ভিজে যায় পানিতে আর শীতের দিনে প্রচন্ড শীত ঢোকে ঘরের ভেতরে। ঝর হলে এ ঘরে থাকতে পারিনা, উলোটপালট করে দিয়ে যায় সব। তহন মোগো আশ্রায় নিতে হয় কোন সাইক্লোন সেন্টারে। এ রকম নানামুখি সমস্যা নিয়ে চোখের জ্বল ফেলে কথাগুলো বললেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম পুয়ালী গ্রামের অসহায় বৃদ্ধা সালেহা বেগম-(৬০)। তিনি আরো বলেন, মোর স্বামী রহমান হাওলাদার বয়সের ভারে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। সে কোন কাজকর্মও করতে পারেনা। মোর চারটি মেয়ে, কোন ছেলে নাই। স্বামীর যা ছিল সব বিক্রি করে বহু কষ্টে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে, এখন তারা যে যার মত করে স্বামীর সঙ্গে আছে। ছোট মেয়ে সাথী পঞ্চম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে কিন্তু অর্থের অভাবে তারে আর পড়াতে পারছিনা। অনেক সময় না খেয়ে থেকে দিন চলে যায়। একদিকে খেতেও পারিনা অন্যদিকে মাথার গোজার ঠাইও নাই। রোদ,বৃষ্টি, ঝড়, শীত সবই মোর আর মোর পরিবারে মাথার উপর দিয়া যায়। হের পরও মোর ভাগ্যে আজ পর্যন্ত একখানা ঘর জুটলোনা। মুই এহন পরিবার লইয়া কই যাইমু। শেখের বিটি হাসিনা যদি দয়া করে মোরে একখান ঘর দিত তাহলে মোদের একটু মাথা গোজার ঠাই হত।
সরেজমিনে গিয়ে যানাগেছে, ২০০৭ইং সালের প্রলংকারী ঘুর্নিঝড় সিডরে বৃদ্ধ সালেহা বেগমের স্বামীর একমাত্র সম্বল দুই চালা টিনের বসত ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে যায়। এতে করে সালেহা পরিবার নিয়ে থাকার জন্য কোন স্থান ছিলনা। এরপর থেকে সালেহা বেগমকে পার্শবর্তী দক্ষিন গোপালপুর গ্রামের রহিম কাজী অস্থায়ীভাবে তার পরিত্যক্ত একটি ভিটায় থাকার জন্য জায়গা দেন। পরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কিছু টিন ও পলিথিন সংগ্রহ করে সেখানে সালেহা বেগম ছোট একটি এক চালা খুপড়ি ঘর বানিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এরপর সালেহা বেগম এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনের কাছে বছরের পর বছর ধর্না দিয়েও একটি ঘর তার কপালে জোটেনি। বর্তমানে তিনি তার পরিবার নিয়ে একটি ঘরের অভাবে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
বৃদ্ধা সালেহা বেগম বলেন, এই দুনিয়াতে কার খবর কেডা রাহে একখান ঘরের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেকবার গিয়েও আজ পর্যন্ত পাইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার শেষ দাবি তিনি একখান ঘর মোরে দিলে পরিবার নিয়ে সুখে থাকতে পারতাম। আর তা না হলে কবরে গিয়েও শান্তি পামুনা।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বর বলেন, ভুলক্রমে তার নামটা ঘরের তালিকায় যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বৃদ্ধা সালেহার নাম তালিকায় উঠে না থাকলেও তাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।