জন্মের চার মাস থেকে থ্যালাসামিয়া রোগে আক্রান্ত দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বেল খুরিয়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে রোমানা আক্তার (১১)।
প্রতি মাসে এক ব্যাগ করে রক্ত দিতে হয় রোমানাকে। তবে টাকা অভাবে ঠিক মতো চিকিৎসা করতে পারছেন না হতদরিদ্র বাবা-মা। বর্তমান ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছে রোমানা। ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করলে সে সুস্থ হয়ে যাবে, তার অপরেশনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।
বাবা রমজান আলী পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। অন্যের অটোগাড়ি ভাড়ায় চলান তিনি। দুই ছেলে, এক মেয়ে। গাড়ি ভাড়া দিয়ে সারাদিনে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা উপার্জন করেন তিনি। সামান্য আয়ে ছেলে-মেয়ে-স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চলে কোনো মতে। এ অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসার্থে এত টাকার ব্যায়ভার বহন করা তার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। তাই বলে চোখের সামনে মেয়েটিকে এভাবে তিলে তিলে মরে যেতেও দেখতে পারেন না। তাই মেয়েটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থণা করেছেন তিনি।
থ্যালাসামিয়া রোগে ভুগছে রোমানা। প্রতি মাসে এক ব্যাগ রক্ত দিতে হয়। জন্মের পর থেকে বাবা রমজান আলী প্রতি মাসে এক ব্যাগ করে রক্ত দিয়ে আসছেন মেয়েকে। গত ৫ বছর ধরে স্থানীয় বিনা মূল্যে রক্তদান কেন্দ্র শিবির থেকে রক্ত পাচ্ছে রোমানা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রোমানার শরীরে রক্ত তৈরি হয় না। অভাবের মাঝেও মেয়েকে সুস্থ করে তোলার জন্য জমি জমা যা ছিলো তা বেচে ফেলেছেন রমজান আলী। মেয়ে যত বড় হচ্ছে, ততই চিন্তা বাড়ছে।
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছেন রমজান আলী। কিন্তু টাকার অভাবে ভাল চিকিৎসা করাতে পারেননি। রমজান আলী এখন একবারেই নিঃস্ব। তবু হাল ছাড়েনি।
রমজান আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি অসহায় গরিব মানুষ। জীবনে যা কামাই করেছি, তা মেয়েকে ভাল করার জন্য শেষ করে ফেলেছি। আমার কোনো সম্পদ নেই, যা দিয়ে মেয়ের চিকিৎসা করাব। সারাদিন ভাড়ায় অটো চালিয়ে যা পাই তাই দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। এতোগুলা টাকা কোথায় পাবো? মেয়েকে বাঁচাতে তাই সরকার ও সমাজের দয়ালু মানুষের কাছে সাহায্য চাইছি। দয়া করে আপনারা আমার অসহায় মেয়েটির পাশে দাঁড়ান। তাকে বাঁচান।
রোমানার মা হুসনেআরা বেগম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জন্মের চার মাস বয়স থেকে আমার মেয়ের শরীরে রক্ত দিতে হয়। মেয়েকে বাঁচাতে আমার স্বামী প্রতিমাসে এক ব্যাগ করে রক্ত দিয়েছে। এখন একটি রক্তদান সংগঠন থেকে রক্ত পাচ্ছি। তবে এভাবে আর কতদিন মানুষের শরীরের রক্ত দিয়ে মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখব?’
তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসপাতালের ডাক্তাররা বলেছেন আমার মেয়ের অপারেশন করলে, আর রক্ত দিতে হবে না। সুস্থ মানুষের মতো স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। চিকিৎসা করতে বহু টাকার দরকার। আমরা খুবই অভাবী মানুষ। কোনো মতো দিন চলে। মেয়েটাকে কীভাবে বাঁচাব? কোনো বাবা-মা এভাবে তিলে তিলে চোখের সামনে সন্তানকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে দেখতে পারে না। এটা সহ্য করা সম্ভব না।
‘১০/১২ লাখ টাকা আমাদের জন্য অনেক কিছু। কিন্তু অনেক ধনী এবং হৃদয়বান মানুষ আছেন যাদের কাছে এ টাকা কিছু্ই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সেসব হৃদয়বান মানুষের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। আমার মেয়েটাকে বাঁচান।”
যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি রোমানাকে সহায়তা করতে চান, তাহলে তাদের ব্যাংক হিসাব ও বিকাশ নম্বরে সহায়তা পাঠাতে পারেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। হিসাব নম্বর: ৩৫২৬৩১, বিকাশ: ০১৭৮১-৮১৫৯২৩।