সাহিদ বাদশা বাবু:: লালমনিরহাটে ফতোয়াবাজির শিকার এক পরিবার
লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের বৈরাগীকুমর গ্রামের মোল্লাবাজারে স্থানীয় সমাজপতিদের দ্বারা ফতোয়াবাজির শিকার হয়ে সামাজিকভাবে একঘরে করে দেওয়া হয়েছে। এত ওই পরিবার নিরাপত্তাহীন ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
গত শুক্রবার বিকালে স্থানীয় মসজিদে বসে একঘরে করে দেওয়ার রায় দেন সমাজপতিরা। প্রভাবশালী সমাজপতিদের ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় কিংবা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার জানাতে পারছেন না।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,পার্শ্ববর্তী ভোলারচওড়া গ্রামের সুলতান মুন্সীর ছেলে আব্দুস ছালামের সাথে মোবাইলের সূত্র ধরে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে বৈরাগীকুমর গ্রামের এশরাফুলের মেয়ে শরিফার। এদিকে চতুর ছালাম বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মেয়েটির সাথে অনৈতিক সর্ম্পক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তাদের অবৈধ সর্ম্পকের ফলে অন্তসত্বা হয়ে পড়ে মেয়েটি। কিন্তু ছালাম মেয়েটিকে বিয়ে না করে কৌশলে গর্ভপাত ঘটায়।
এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক মেয়ের পরিবারের ওপর দোষ
চাপিয়ে অর্থের বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্ঠা চালায়। অপরদিকে স্থানীয় দালালবাড়ী জামে মসজিদে গত শুক্রবার বিকালে এক বৈঠকের মাধ্যমে মেয়েটির পরিবারকে দোষারোপ করে পরিবারটিকে একঘরে করে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়ে ফতোয়া জারী করে মসজিদ কমিটির লোকজন।
এ ব্যাপারে ওই মসজিদ কমিটির সেক্রেটারী আরফান আলী বলেন, যেহেতু মেয়েটি অন্যায় ও জঘণ্য কাজ করেছে তাই সকলে মিলে মসজিদে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। তবে ছেলেটির শাস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে সেক্রেটারী কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
তিনি জানান, মেয়ের পরিবার যতদিন পর্যন্ত বিয়ের কাবিননামা দেখাতে না পারবে ততদিন তারা একঘরে অবস্থায় থাকবে। এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী সেই পরিবারের কারো দেখা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা নিষেধও সমাজপতিদের।
আর অভিযুক্ত আব্দুস ছালামের পিতা সুলতান মুন্সী জানান,ওই মেয়েকে দিয়ে আমার ছেলেকে বিয়ে দেয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। ইউপি সদস্য আবু বক্কর দায়িত্ব নিয়েছে বিচারের। তাকে টাকা পয়সা দেয়া আছে ,তিনি বিচারে যা করবেন তাই হবে। তবে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক কে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি ফোন ধরেননি।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম জানান,বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে ভুক্তভোগী পরিবার কোন অভিযোগ করেননি।তবে যেহেতু ফতোয়াবাজির মতো ঘটনা ঘটেছে তাই আমরা খোঁজ নিচ্ছি।