শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নবান্নের আনন্দে আমন ধান কাটার ধুম লেগেছে নীলফামারীতে। জেলায় আগামজাতের ধান কাটা মাড়াই চলছে পুরোদমে। মাঠের সোনালী ধান এখন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ জানায়, চলতি বছর আমন চাষে প্রতিকুল আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হয়েছে জেলার ছয় উপজেলার কৃষকদের। কিন্ত বর্তমানে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় নির্বিঘ্ননে ধান কাটা মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন কৃষক কৃষানিরা। মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের মৌ মৌ গন্ধে মনের আনন্দে কাজ করছেন তারা। কথা বলার মত ফুরসত নেই তাদের।
কৃষক ধান কেটে আঁটি বেঁধে অনেকেই কাঁদে করে, আবার অনেকেই বিভিন্ন যান বহনে করে বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছেন। বাসা বাড়ীর উঠানে চলছে আগামজাতের ধান মাড়াইয়ের কাজ। এসব ধান নিয়ে কৃষকের যেমন ব্যস্ততা তেমনী আনন্দ রয়েছে প্রচুর। অনেকের বাড়ীতে চলছে শীতের সকালে ভাপা পুলি, তেল পিঠা, নতুন চালের পায়েশ ও নাড়– মুড়ির মুখরোচক খাবার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, জেলার ছয় উপজেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই মৌসুমে জেলায় এক লক্ষ ১৩ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উফশি ৯৪ হাজার ১৩০ হেক্টর, স্থানীয় জাত ৫০৫ হেক্টর, ও হাইব্রিট ১৮ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এছাড়াও মোট আবাদের সুগন্ধি ব্রি-ধান ৩৪ হেক্টর রয়েছে। অপরদিকে, কয়েক দফার বন্যা এবং অতি বৃষ্টির কারনে নিন্মাঞ্চলের ৩৯৫ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের নটখানা আর্দশ পাড়ার কৃষক সফিয়ার রহমান জানান, প্রতিকুল আবহাওয়ার মধ্যেও ধানের বাম্পার ফলন করেছে কৃষকরা। অগ্রহায়ন মাসে পুরো ধান কাটা শুরু হলেও আগামজাতের বিভিন্ন ধান কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে কাটা শুরু করেছে।
একই এলাকার কৃষক ময়জুদ্দিন জানান, কয়েক দফা বন্যা আর অতি বৃষ্টির কারনে আমন ধান চাষে ব্যাঘাত ঘটলেও এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আগামজাতের ধানের বাম্পার ফলনে কৃষক বেজায় খুশি। এছাড়াও ওই জমিতে সার ছাড়া শীতের সবজির প্রচুর আবাদ হয়। এতে দুই দিকে কৃষকের লাভ হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, জেলায় এক লক্ষ ১৩ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক ধান কাটতে শুরু করেছেন। বাজারে ভাল দাম পেলে কৃষক এবার লাভবান হবে। পাশাপাশি কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্নের উৎসব। এ যেন বাঙালী সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী চিত্র ফুটে উঠেছে গ্রামে গঞ্জে। (ছবি আছে)