ঢাকা ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, প্রথম ধাপ ইন্দুরকানীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইভিএম ভোট কেন্দ্র চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে একসাথে কাজ করবে চসিক ও সিএমপি নির্বাচনী ছড়া বাড়ছে সাংবাদিক কমছে সাংবাদিকতা-মোঃ রাব্বী মেল্লা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাতুয়াইলে বাস ও পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও আহত ২ লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে শপথ বাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী বরিশালে সার্বজনীন পেনশন মেলা ২০২৪ উদ্বোধন হিরাঝীলে বিশ্বাস মঞ্জিল নামের একটি বিল্ডিং হেলে পড়ে,নিরাপত্তাহীনতায় এলাকাবাসী বাকেরগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জন প্রিয়তার শীর্ষে সাইফুল ইসলাম ডাকুয়া। বাকেরগঞ্জে যুবদল সভাপতি টুকুর মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল

শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই এখন রোগীঃ দেখার যেন কেউ নেই

এসএম স্বপন, বেনাপোলঃ  চিকিৎসক স্বল্পতা, যন্ত্রপাতি অপ্রতুল, অপরিচ্ছন্নতা, রোগীদের ওষুধ না দেয়া সহ নানা সঙ্কটে জর্জরিত শার্শার একমাত্র সরকারি বুরুজবাগান (নাভারন) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কাজেই শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিজেই এখন রোগী। দেখার যেন কেউ নেই।
জানা যায়, শার্শার ১১টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৬২ সালে নির্মিত হাসপাতালটি এখন শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মানুষের একমাত্র নির্ভরতার জায়গা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোনো সুযোগ-সুবিধাই বাড়েনি এ হাসপাতালে। লোকবল, যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সামগ্রী সহ সবকিছু এখনও পুরনো ধাঁচের। হাসপাতালে প্রতিদিন ৩ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। গড়ে পাঁচ থেকে আটজন রোগী ভর্তি হন।
তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে মেডিকেল কর্মকর্তার পদ সংখ্যা ২২টি থাকলেও খাতা কলমে ৪ জন, কর্মরত আছেন ৩ জন। বাকি এক জন সর্ব সময় ছুটিতে থাকেই। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখানে কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। বহির্বিভাগে টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও চিকিৎসক না থাকায় সেবা থেকে বি ত হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালটিতে একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি প্রায় সময় থাকে নষ্ট। মাঝে মধ্যে ঠিক হলেও থাকে না ফ্লিম। অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় গরিব ও অসহায় রোগীদের বাধ্য হয়ে ৩৬ কিলোমিটার দূরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। শুধূ মাত্র কমিশনের আশায়। হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগ থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার মান দিন দিন নিম্নমানের হয়ে পড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এখানকার রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ পান না। জরুরি বিভাগে সাধারণ চিকিৎসা দেয়া, রোগীদের অতি নিম্নমানের খাবার ও নোংরা বিছানা পরিবেশন করা হয়। শৌচাগার গুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। সার্জারি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও অপারেশন থিয়েটার ও যন্ত্রপাতির সংখ্যা বাড়েনি। হাসপাতালে নেই কোনো ডেন্টাল, গাইনি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৮টায় অফিস শুরুর নিয়ম থাকলেও ডাক্তার আসেন সাড়ে ১০টায়। উপজেলার একমাত্র এ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীরা সকাল ৮টার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ১০টার আগে বহির্বিভাগে টিকিট দেয়া হয় না। অনেক সময় টিকিট সংগ্রহ করেও চিকিৎসকের দেখা পান না রোগীরা। বাধ্য হয়ে পাশের বে-সরকারী হাসপাতালই তাদের ভরসা।
আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. এনাম উদ্দিন বলেন, জরুরি বিভাগে আমার কোনো ডিউটি করার কথা ছিল না। আসলে জরুরি বিভাগে কোনো মেডিকেল কর্মকর্তার ডিউটি করার নিয়ম নেই। আমরা যেটুকু করি তা অনুরোধ ক্রমে। সেখানে শুধু মাত্র একজন সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তার ডিউটি করার নিয়ম আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অশোক কুমার সাহা জানান, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় খাতা-কলমে উন্নীত হলেও কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। পর্যাপ্ত ডাক্তার ও জনবলের অভাবে আমরা জনগণকে তাদের চাহিদামত সেবা দিতে পারছি না।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, প্রথম ধাপ ইন্দুরকানীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইভিএম ভোট কেন্দ্র

শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই এখন রোগীঃ দেখার যেন কেউ নেই

আপডেট টাইম ০১:৪০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
এসএম স্বপন, বেনাপোলঃ  চিকিৎসক স্বল্পতা, যন্ত্রপাতি অপ্রতুল, অপরিচ্ছন্নতা, রোগীদের ওষুধ না দেয়া সহ নানা সঙ্কটে জর্জরিত শার্শার একমাত্র সরকারি বুরুজবাগান (নাভারন) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কাজেই শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিজেই এখন রোগী। দেখার যেন কেউ নেই।
জানা যায়, শার্শার ১১টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৬২ সালে নির্মিত হাসপাতালটি এখন শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মানুষের একমাত্র নির্ভরতার জায়গা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোনো সুযোগ-সুবিধাই বাড়েনি এ হাসপাতালে। লোকবল, যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সামগ্রী সহ সবকিছু এখনও পুরনো ধাঁচের। হাসপাতালে প্রতিদিন ৩ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। গড়ে পাঁচ থেকে আটজন রোগী ভর্তি হন।
তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে মেডিকেল কর্মকর্তার পদ সংখ্যা ২২টি থাকলেও খাতা কলমে ৪ জন, কর্মরত আছেন ৩ জন। বাকি এক জন সর্ব সময় ছুটিতে থাকেই। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখানে কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। বহির্বিভাগে টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও চিকিৎসক না থাকায় সেবা থেকে বি ত হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালটিতে একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি প্রায় সময় থাকে নষ্ট। মাঝে মধ্যে ঠিক হলেও থাকে না ফ্লিম। অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় গরিব ও অসহায় রোগীদের বাধ্য হয়ে ৩৬ কিলোমিটার দূরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। শুধূ মাত্র কমিশনের আশায়। হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগ থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার মান দিন দিন নিম্নমানের হয়ে পড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এখানকার রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ পান না। জরুরি বিভাগে সাধারণ চিকিৎসা দেয়া, রোগীদের অতি নিম্নমানের খাবার ও নোংরা বিছানা পরিবেশন করা হয়। শৌচাগার গুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। সার্জারি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও অপারেশন থিয়েটার ও যন্ত্রপাতির সংখ্যা বাড়েনি। হাসপাতালে নেই কোনো ডেন্টাল, গাইনি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৮টায় অফিস শুরুর নিয়ম থাকলেও ডাক্তার আসেন সাড়ে ১০টায়। উপজেলার একমাত্র এ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীরা সকাল ৮টার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ১০টার আগে বহির্বিভাগে টিকিট দেয়া হয় না। অনেক সময় টিকিট সংগ্রহ করেও চিকিৎসকের দেখা পান না রোগীরা। বাধ্য হয়ে পাশের বে-সরকারী হাসপাতালই তাদের ভরসা।
আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. এনাম উদ্দিন বলেন, জরুরি বিভাগে আমার কোনো ডিউটি করার কথা ছিল না। আসলে জরুরি বিভাগে কোনো মেডিকেল কর্মকর্তার ডিউটি করার নিয়ম নেই। আমরা যেটুকু করি তা অনুরোধ ক্রমে। সেখানে শুধু মাত্র একজন সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তার ডিউটি করার নিয়ম আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অশোক কুমার সাহা জানান, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় খাতা-কলমে উন্নীত হলেও কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। পর্যাপ্ত ডাক্তার ও জনবলের অভাবে আমরা জনগণকে তাদের চাহিদামত সেবা দিতে পারছি না।