ঢাকা ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

ডেঙ্গু আক্রান্ত চৌগাছার শিশু হালিমা চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে এখন বাড়িতে

(চৌগাছা প্রতিনিধি) যশোরের চৌগাছায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হালিমা খাতুন (১৪) ঢাকাতে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। চরম অসহায় হালিমাকে সুস্থ্য অবস্থায় ফিরে পেয়ে বাড়ির সকলেই যেন আকাশের চাঁদকে হাতে পেয়েছে। খুশির অশ্রুতে ভিজেছে অনেকের চোখের পাঁপড়ি। হালিমা এখনও শারীরীক ভাবে বেশ দূর্বল কিন্তু সে আবার স্কুলে যাবে সহপাঠিদের সাথে খেলবে এই ভেবে খুশিতে আত্মহারা। মা হারা শিশুটি বাক প্রতিবন্ধি পিতা ও চাচা চাচির ভালবাসা মুগ্ধ। তাকে সুস্থ্য করে তুলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র যে ভূমিকা রেখেছে তাতে ওই পরিবার তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

সূত্র জানায়, চৌগাছা পৌর সদরের ডাকবাংলা পাড়ার বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী হাসু মিয়ার একমাত্র মেয়ে স্থানীয় ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যারয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা খাতুন (১৪)। সে চলতি মাসের ১৬ আগস্ট ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়।

হাসপাতালে হালিমার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তৃপক্ষ তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। যশোর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে একদিন রেখে হালিমাকে শহরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও হালিমার শারীরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কুইন্স হাসপাতালের ডাক্তাররা হালিমাকে ঢাকাতে রেফার করে।

হালিমার জন্ম গরীব অসহায় পরিবারে, পিতা হাসু মিয়া বাক প্রতিবন্ধি, চাচা মমিনুর রহমান একটি সরকারী অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ঢাকাতে নেয়ার মত কোন টাকা তাদের ছিলনা। তাই বাধ্য হয়ে হালিমাকে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়ীতে ফেরত আনা হয়।

বাড়িতে ফেরত আনার পর হালিমার শারীরীক অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। ২১ আগষ্ট বুধবার বিকালে খবর পেয়ে ওই পরিবারে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ও পৌর মেয়ার নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল। সেখানে তাঁরা পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং হালিমাকে দ্রুত চৌগাছা হাপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে প্লাটিলেট কাউন্ট করা হলে দেখা যায় হালিমার প্লাটিলেক মাত্র ৬০ হাজার। হালিমাকে দ্রুত ঢাকাতে পাঠাতে হবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানের কোন টিকিট পাওয়া যাওয়ানি।

এমন এক পরিস্থিতিতে বিশেষ এম্মুলেন্সে করে ওই রাতেই হালিমাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে রবিবার রাত ২ টায় হালিমা চৌগাছাতে ফেরে, পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে দুই দিন তাকে ভর্তি রাখা হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

সেখান থেকে সোমবার সন্ধ্যায় সে চাচা মমিনুর রহমানের বাড়িতে ফিরেছে।
হালিমার চাচা মমিনুর রহমান জানান, মেয়েটির (হালিমা) বাবা হাসু মিয়া জন্ম থেকেই বাক প্রতিবন্ধি। হালিমার বয়স যখন ৩ বছর তখন মা বিউটি খাতুন তাকে রেখে অন্যত্র সংসার পেতেছে। হালিমা ছোট বেলা থেকেই আমার কাছে থেকে বড় হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তার শারীরীক অবস্থার যে অবনতী হয়েছিল তাতে আমরা সকলেই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর আশেষ রহমতে ওই মুহুর্তে ই্উএনও স্যার ও পৌর মেয়র আমাদের পাশে দাড়িয়েছে হালিমাকে আজ সুস্থ্য করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছে আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল জানান, মেয়েটিকে সুস্থ্য করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। সে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরেছে এটি সকলের জন্য নিশ্চয় খুশির খবর। নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, টাকার অভাবে একজন শিশুর চিকিৎসা হবে না এমনটি আমি ভাবতে পারেনি, তাই শিশুটির পাশে দাড়িয়েছি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

ডেঙ্গু আক্রান্ত চৌগাছার শিশু হালিমা চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে এখন বাড়িতে

আপডেট টাইম ০৬:৩৮:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৯

(চৌগাছা প্রতিনিধি) যশোরের চৌগাছায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হালিমা খাতুন (১৪) ঢাকাতে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। চরম অসহায় হালিমাকে সুস্থ্য অবস্থায় ফিরে পেয়ে বাড়ির সকলেই যেন আকাশের চাঁদকে হাতে পেয়েছে। খুশির অশ্রুতে ভিজেছে অনেকের চোখের পাঁপড়ি। হালিমা এখনও শারীরীক ভাবে বেশ দূর্বল কিন্তু সে আবার স্কুলে যাবে সহপাঠিদের সাথে খেলবে এই ভেবে খুশিতে আত্মহারা। মা হারা শিশুটি বাক প্রতিবন্ধি পিতা ও চাচা চাচির ভালবাসা মুগ্ধ। তাকে সুস্থ্য করে তুলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র যে ভূমিকা রেখেছে তাতে ওই পরিবার তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

সূত্র জানায়, চৌগাছা পৌর সদরের ডাকবাংলা পাড়ার বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী হাসু মিয়ার একমাত্র মেয়ে স্থানীয় ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যারয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা খাতুন (১৪)। সে চলতি মাসের ১৬ আগস্ট ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়।

হাসপাতালে হালিমার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তৃপক্ষ তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। যশোর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে একদিন রেখে হালিমাকে শহরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও হালিমার শারীরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কুইন্স হাসপাতালের ডাক্তাররা হালিমাকে ঢাকাতে রেফার করে।

হালিমার জন্ম গরীব অসহায় পরিবারে, পিতা হাসু মিয়া বাক প্রতিবন্ধি, চাচা মমিনুর রহমান একটি সরকারী অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ঢাকাতে নেয়ার মত কোন টাকা তাদের ছিলনা। তাই বাধ্য হয়ে হালিমাকে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়ীতে ফেরত আনা হয়।

বাড়িতে ফেরত আনার পর হালিমার শারীরীক অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। ২১ আগষ্ট বুধবার বিকালে খবর পেয়ে ওই পরিবারে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ও পৌর মেয়ার নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল। সেখানে তাঁরা পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং হালিমাকে দ্রুত চৌগাছা হাপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে প্লাটিলেট কাউন্ট করা হলে দেখা যায় হালিমার প্লাটিলেক মাত্র ৬০ হাজার। হালিমাকে দ্রুত ঢাকাতে পাঠাতে হবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানের কোন টিকিট পাওয়া যাওয়ানি।

এমন এক পরিস্থিতিতে বিশেষ এম্মুলেন্সে করে ওই রাতেই হালিমাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে রবিবার রাত ২ টায় হালিমা চৌগাছাতে ফেরে, পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে দুই দিন তাকে ভর্তি রাখা হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

সেখান থেকে সোমবার সন্ধ্যায় সে চাচা মমিনুর রহমানের বাড়িতে ফিরেছে।
হালিমার চাচা মমিনুর রহমান জানান, মেয়েটির (হালিমা) বাবা হাসু মিয়া জন্ম থেকেই বাক প্রতিবন্ধি। হালিমার বয়স যখন ৩ বছর তখন মা বিউটি খাতুন তাকে রেখে অন্যত্র সংসার পেতেছে। হালিমা ছোট বেলা থেকেই আমার কাছে থেকে বড় হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তার শারীরীক অবস্থার যে অবনতী হয়েছিল তাতে আমরা সকলেই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর আশেষ রহমতে ওই মুহুর্তে ই্উএনও স্যার ও পৌর মেয়র আমাদের পাশে দাড়িয়েছে হালিমাকে আজ সুস্থ্য করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছে আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল জানান, মেয়েটিকে সুস্থ্য করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। সে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরেছে এটি সকলের জন্য নিশ্চয় খুশির খবর। নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, টাকার অভাবে একজন শিশুর চিকিৎসা হবে না এমনটি আমি ভাবতে পারেনি, তাই শিশুটির পাশে দাড়িয়েছি।