ঢাকা ১০:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

সৈয়দপুরে ইটভাটার ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা অবশেষে ক্ষতিপূরণ পেলো

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণের ওই নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম লোকমান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেন। এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব দাস, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আসাদুজ্জামান আশা, কৃষক প্রতিনিধি মোঃ শফিকুল আলম, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ আফছার আলী ও মোঃ আজিজুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। গত ৩০ এপ্রিল সৈয়দপুর উপজেলার এক নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর এলাকায় অবস্থিত একই মালিকের মেসার্স এম জেড এইচ ব্রিকস্ধসঢ়; নামের দুইটি ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রভাবে আশপাশের জমির উঠতি বোরো ধান ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে পুঁড়ে যায়। ঋণ ও ধারকর্জ করে চাষাবাদ করা ক্ষতিগ্রস্থ উঠতি বোরো ধান ক্ষেত দেখে কৃষকদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় অনেক কৃষক ক্ষেতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন; কেউবা করেন বিলাপ। এ নিয়ে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ইটভাটা মালিকের সাথে কথা বললে ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেও কোন পাত্তায় দিচ্ছিলেন না। উপরন্তু ইটভাটা মালিকদের দাবি প্রচন্ড খরতাপে কৃষকদের ওই সব বোরো ধান ক্ষেত পুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের প্রভাবে বিপুল পরিমাণ জমির বোরো ধানের ক্ষেত পুঁড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে গত ১ মে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ হোমায়রা মন্ডল, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহ্ধসঢ়;জাহান পাশাসহ কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় ঘটনাটি তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব দাসের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আসাদুজ্জামান আশা, কামারপুকুর ইউপি’র চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা। এ তদন্ত কমিটি ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও জমির পরিমাণ নিরূপন করে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও বরাবরে জমা দেন। এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. গোলাম কিবরিয়া বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক এবং স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে ইউএনও ইটভাটা মালিক মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে আলোচনা করেন। অনেক দেন দরবারের পর ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হন। পরবর্তীতে ইটভাটা মালিক মোঃ. হারুণ-অর-রশিদ তাঁর ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ও ধোঁয়ার প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। আর কৃষি বিভাগের কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী ১৭৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

সৈয়দপুরে ইটভাটার ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা অবশেষে ক্ষতিপূরণ পেলো

আপডেট টাইম ০৫:৪৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণের ওই নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম লোকমান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেন। এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব দাস, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আসাদুজ্জামান আশা, কৃষক প্রতিনিধি মোঃ শফিকুল আলম, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ আফছার আলী ও মোঃ আজিজুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। গত ৩০ এপ্রিল সৈয়দপুর উপজেলার এক নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর এলাকায় অবস্থিত একই মালিকের মেসার্স এম জেড এইচ ব্রিকস্ধসঢ়; নামের দুইটি ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রভাবে আশপাশের জমির উঠতি বোরো ধান ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে পুঁড়ে যায়। ঋণ ও ধারকর্জ করে চাষাবাদ করা ক্ষতিগ্রস্থ উঠতি বোরো ধান ক্ষেত দেখে কৃষকদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় অনেক কৃষক ক্ষেতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন; কেউবা করেন বিলাপ। এ নিয়ে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ইটভাটা মালিকের সাথে কথা বললে ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেও কোন পাত্তায় দিচ্ছিলেন না। উপরন্তু ইটভাটা মালিকদের দাবি প্রচন্ড খরতাপে কৃষকদের ওই সব বোরো ধান ক্ষেত পুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের প্রভাবে বিপুল পরিমাণ জমির বোরো ধানের ক্ষেত পুঁড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে গত ১ মে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ হোমায়রা মন্ডল, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহ্ধসঢ়;জাহান পাশাসহ কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় ঘটনাটি তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব দাসের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আসাদুজ্জামান আশা, কামারপুকুর ইউপি’র চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা। এ তদন্ত কমিটি ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও জমির পরিমাণ নিরূপন করে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও বরাবরে জমা দেন। এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. গোলাম কিবরিয়া বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক এবং স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে ইউএনও ইটভাটা মালিক মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে আলোচনা করেন। অনেক দেন দরবারের পর ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হন। পরবর্তীতে ইটভাটা মালিক মোঃ. হারুণ-অর-রশিদ তাঁর ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ও ধোঁয়ার প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। আর কৃষি বিভাগের কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী ১৭৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।