শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আবারও বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেল দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী। বাল্য বিয়ে করতে আসায় বরের এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রাম্যমান আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ওই সাজা দেন। দন্ডপ্রাপ্ত বরের নাম মো. রাব্বি ইসলাম ওরফে সোহাগ (২২)। সে উপজেলার ৪ নম্বর বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখুলী মুন্সিপাড়ার মো. ফজলুল হক ওরফে ইমদাদুল এর ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাব্বি ইসলাম সোহাগ (২২) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। একই এলাকার মোজাহারুল ইসলামের মেয়ে মোছা. মনিরা আক্তার (১৬) পড়ে দশম শ্রেণীতে। রাব্বি ইসলাম ওরফে সোহাগের বিয়ের বয়স হলেও মনিরা আক্তার অপ্রাপ্ত বয়সী। তারপরও সোহাগ ও মনিরার পরিবার তাদের বিয়ে ঠিক করে। গত শুক্রবার ছিল ওই বিয়ের দিনক্ষণ। এ বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়িতে তোরণ নির্মাণ করাসহ বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে কনের বাড়িতে চলে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন। আর এ অতিথি আপ্যায়ন চলে বিকেল অবধি। সন্ধ্যার পর পরই বর ও বর পক্ষের হাজির হন কনের বাড়িতে। তাদেরও যথারীতি আপ্যায়নও করা হয়। এরপর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার প্রস্তুতি চলছে। ঠিক সেই মুর্হূতে সৈয়দপুর ইউনাইটেড ভলেন্টিয়ার এসোসিয়েশন (সুভা)’র সদস্যদের মাধ্যমে বাল্য বিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে ওই বিয়ের বাড়িতে পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হন সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার। তাঁর উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও কনেকে রেখে সটকে পড়েন উভয় পক্ষের লোকজন। পরে বর রাব্বি ইসলাম ওরফে সোহাগ এবং কনে মনিরা আক্তারকে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাদের বসিয়ে রেখে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও তারা আর সেখানে আসেননি। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমান আদালতে অপ্রাপ্ত বয়সী মেয়েকে বিয়ে করতে আসার অভিযোগে বর রাব্বি ইসলাম ওরফে সোহাগকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতে বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার ওই কারাদন্ড দেন। আর কণে মনিরা আক্তারকে বিয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না মর্মে মুচলেকা নিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।