সে কী চমৎকার পাহাড়ি উপত্যকা—প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে হারানোর মুহূর্ত; তবু পথে যেতে যেতে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা দেখে মনের কোণে মেঘ জমে উঠত। তাই ইথিওপিয়ার দক্ষিণাঞ্চল মনের ভেতর বেশ দাগ কেটে গেছে। প্রায় শুকনো নদী থেকে হলুদ প্লাস্টিকের বোতলে করে পানি তুলে আনার দৃশ্য, পথের পাশে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড রোদে কয়লা বিক্রি, পাহাড় থেকে শুকনো খড়ি বয়ে আনা সেই পাহাড়ি মা আর ছোট মেয়েটির চাহনি—সবই এখন ভেসে আসছে দুচোখের পাতাজুড়ে। জীবনের ভিন্নতা মানুষে মানুষে, কিন্তু কোথাও যেন একই সুরে গাথা এই জীবন।
১৪ মে। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার ভোরের পাখির ডাকে চোখ খুলল। চোখ মেলেই দেখি সকাল ছয়টা। আরবা মিঞ্চের দিকে যাত্রীবাহী বাস ততক্ষণে ছেড়ে গেছে। হা–হুতাশ না করে একটা ভিন্নধর্মী অ্যাডভেঞ্চারের চিন্তা করলাম। হাত-মুখ ধুয়ে একটা লোকাল বাসে রওনা দিলাম ‘মিস্ট্রিজ অব সাউথ ইথিওপিয়া’খ্যাত আরবা মিঞ্চের দিকে। বাসটি আরামদায়ক না হলেও খুব একটা খারাপ ছিল না। ভিনদেশি দেখে যাত্রীরা খুব যত্ন করে বসাল। পাশের আসনে বসলেন তরুণ এক ইথিওপীয় চিকিৎসক। হাসিমুখেই জানতে চাইলেন বাংলাদেশের কথা। তাঁর পাশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করা এক ছাত্র। প্রায় ৮ ঘণ্টা পথ চলতে চলতে অনেক কথা হলো।