ঢাকা ১০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
টাঙ্গাইলে পাহাড়ি টিলা কাটছে মাটিখেকোরা, জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে “কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ” চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিন খাতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চাইলেন মেয়র রেজাউল বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা। গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় খাদে প্রাইভেটকার, নিহত ৩ সিলেটে আগাম বন্যার আশঙ্কায়!! হাওরজুড়ে কৃষকের ব্যস্ততা শিশুদের মনোবিকাশে প্রয়োজন সংস্কৃতি চর্চা: মেয়র রেজাউল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার, প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই রোগী দেখে সবার মন জয় করেলেন ডাক্তার মোঃ হুমায়ুন রশিদ শাকিল

মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে একটি বট গাছের নিচে অধাবেলা এ মেলা হয়ে থাকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্থ্যাৎ হুড় হুড় করে এ মেলা শুরু হয় এবং হুড় হুড় করে শেষ হয় বলে হুর মেলা নামে পরিচিত। জানাগেছে, গত কয়েকশ বছর থেকে চেরাগপুর গ্রামের বট গাছকে কেন্দ্র করে এ গাছের নিচে হুর মেলা হয়ে আসছে। এটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় মেলা বলে দাবী করেন এলাকাবাসী। মাটির একটি ঘরের মধ্যে মন্ডব ও মাজার। মাদার নামে এক ব্যক্তির নামে এ মাজার। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্ডবে আর মুসলমানরা মাজারে আসেন নিজেদের মন বাসনা পূর্ন করতে। মানত পুরণ হলে বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার তারা এসে মানত উদ্যেশে রান্না করে সবাইকে খাইয়ে থাকেন। প্রতি বছর এ মেলা হয়ে থাকে বলে কৃষিযন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও পোশাক-পরিচ্ছদ, দই, মিষ্টি মেলা থেকে কিনেন এলাকাবাসীরা। বছরের এ দিনটিকে ঘিরে গ্রামে যেন আনন্দের জোয়ার বয়ে আসে। মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত করে নিয়ে আসা হয়। ঘরে ঘরে যেন উৎসবের আমেজ বইতে থাকে। মান্দার মৈনম গ্রাম থেকে আসা সাইদুল বিশ্বাস ও বদলগাছী থেকে আসা জাকারিয়া জাকির বলেন, এ মেলার অনেক ইতিকথা শুনেছি। তাই মেলার দেখার জন্য পরিবার সহ বেড়াতে আসছি। মহিষের গোস্ত অন্য সময় পাওয়া যায়না। এ মেলার ঐতিহ্য হচ্ছে মহিষের গোস্ত। বয়জ্যেষ্ঠ রইচ উদ্দিন বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। অনেকে মন বাসনা পূরন করতে মেলায় আসেন। আবার অনেকে এখানে পরিবারের সবাই দল বেঁধে এসে রান্না করে খান। এক কথায় এখানে মিলন মেলায় পরিনত হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় এখানে দোকানীরা দোকান নিয়ে বসেছিল তখন লোকজনকে নিষেধ করেও মেলা ভাঙা যায়নি। কারণ পাঞ্জাবীরা যদি কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় তাহলে সবকিছু নিশ্চিন্ন হয়ে যাবে। সে বছর সুষ্ঠু ভাবে মেলা সম্পন্ন হয়েছিল। মাজারের খাদেম শুকচান বলেন, আলাদা ধর্মের মানুষদের জন্য আলাদা উপাসনালয় আছে। কিন্তু এখানে যারা মানত করেন সকল ধর্মবর্ণের মানুষরা এসে এ মাজারে সিজদা করেন। যে যার মতো করে মানত করেন। তাদের মানত পূর্ন হলে এখানে এসে সিন্নি (রান্না) করে উপস্থিত সবার মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। চেরাগপুর গ্রামের মেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, এ মেলায় মাজার এবং মন্ডপ দুটোই আছে। মেলায় ধর্মবর্ণ বির্নিশেষে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের আগমণ ঘটে। বাড়ি বাড়ি আত্মীয়দের সমাগম ঘটে। আর আধাবেলা অনুষ্ঠিত এ মেলা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে ঐরুশে ছিন্নি ও তবারক উপস্থিত সবাইকে বিতরণ করা হয়। এক কথায় মিলন মেলায় পরিনত হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

টাঙ্গাইলে পাহাড়ি টিলা কাটছে মাটিখেকোরা, জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে

মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা

আপডেট টাইম ০৫:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে একটি বট গাছের নিচে অধাবেলা এ মেলা হয়ে থাকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্থ্যাৎ হুড় হুড় করে এ মেলা শুরু হয় এবং হুড় হুড় করে শেষ হয় বলে হুর মেলা নামে পরিচিত। জানাগেছে, গত কয়েকশ বছর থেকে চেরাগপুর গ্রামের বট গাছকে কেন্দ্র করে এ গাছের নিচে হুর মেলা হয়ে আসছে। এটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় মেলা বলে দাবী করেন এলাকাবাসী। মাটির একটি ঘরের মধ্যে মন্ডব ও মাজার। মাদার নামে এক ব্যক্তির নামে এ মাজার। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্ডবে আর মুসলমানরা মাজারে আসেন নিজেদের মন বাসনা পূর্ন করতে। মানত পুরণ হলে বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার তারা এসে মানত উদ্যেশে রান্না করে সবাইকে খাইয়ে থাকেন। প্রতি বছর এ মেলা হয়ে থাকে বলে কৃষিযন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও পোশাক-পরিচ্ছদ, দই, মিষ্টি মেলা থেকে কিনেন এলাকাবাসীরা। বছরের এ দিনটিকে ঘিরে গ্রামে যেন আনন্দের জোয়ার বয়ে আসে। মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত করে নিয়ে আসা হয়। ঘরে ঘরে যেন উৎসবের আমেজ বইতে থাকে। মান্দার মৈনম গ্রাম থেকে আসা সাইদুল বিশ্বাস ও বদলগাছী থেকে আসা জাকারিয়া জাকির বলেন, এ মেলার অনেক ইতিকথা শুনেছি। তাই মেলার দেখার জন্য পরিবার সহ বেড়াতে আসছি। মহিষের গোস্ত অন্য সময় পাওয়া যায়না। এ মেলার ঐতিহ্য হচ্ছে মহিষের গোস্ত। বয়জ্যেষ্ঠ রইচ উদ্দিন বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। অনেকে মন বাসনা পূরন করতে মেলায় আসেন। আবার অনেকে এখানে পরিবারের সবাই দল বেঁধে এসে রান্না করে খান। এক কথায় এখানে মিলন মেলায় পরিনত হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় এখানে দোকানীরা দোকান নিয়ে বসেছিল তখন লোকজনকে নিষেধ করেও মেলা ভাঙা যায়নি। কারণ পাঞ্জাবীরা যদি কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় তাহলে সবকিছু নিশ্চিন্ন হয়ে যাবে। সে বছর সুষ্ঠু ভাবে মেলা সম্পন্ন হয়েছিল। মাজারের খাদেম শুকচান বলেন, আলাদা ধর্মের মানুষদের জন্য আলাদা উপাসনালয় আছে। কিন্তু এখানে যারা মানত করেন সকল ধর্মবর্ণের মানুষরা এসে এ মাজারে সিজদা করেন। যে যার মতো করে মানত করেন। তাদের মানত পূর্ন হলে এখানে এসে সিন্নি (রান্না) করে উপস্থিত সবার মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। চেরাগপুর গ্রামের মেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, এ মেলায় মাজার এবং মন্ডপ দুটোই আছে। মেলায় ধর্মবর্ণ বির্নিশেষে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের আগমণ ঘটে। বাড়ি বাড়ি আত্মীয়দের সমাগম ঘটে। আর আধাবেলা অনুষ্ঠিত এ মেলা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে ঐরুশে ছিন্নি ও তবারক উপস্থিত সবাইকে বিতরণ করা হয়। এক কথায় মিলন মেলায় পরিনত হয়।