মাতৃভূমির খবর ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘বিজয় সমাবেশ’-এর আয়োজন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার দুপুর আড়াইটায় এ সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে উদ্যানের অভিমুখে ছুটে আসছেন।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভোর থেকেই এ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে পুলিশ-র্যাব- ডিবি- সাদাপোশাকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমান সদস্য।
শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, আইইবি, মৎস্যভবন, টিএসসি এলাকাসহ সামবেশস্থলে প্রবেশের সবগুলো গেটে অবস্থান নিয়েছে গোয়েন্দা, র্যাব-পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। প্রবেশস্থলে আর্চওয়ে গেট বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে সক্রিয় রয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রতিটি প্রবেশ পথে আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি চালিয়ে নেতাকর্মী ও মানুষকে ভেতরে প্রবেশ করানো হবে। অনুষ্ঠানস্থলে আগত ব্যক্তিদের কোনো প্রকার হ্যান্ডব্যাগ, ট্রলি ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ বা ধারালো কোনো বস্তু বহন না করাসহ কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন বলেন, সমাবেশস্থলে প্রবেশের সময় সবাইকে তল্লাশি করা হচ্ছে। সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে সজাগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, সমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত চারপাশে কঠোর নজরদারি বজায় থাকবে।
এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনের তথ্যসংবলিত পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানো হয়েছে।
সমাবেশস্থলে বেলা ১১টা থেকে প্রবেশ করতে শুরু করেছে নেতাকর্মীরা। এবারের মহাসমাবেশে সর্বসাধারণের প্রবেশের জন্য গেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা গেটের ব্যবস্থা।
সমাবেশে আসবেন যেভাবে
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচলে সুনির্দিষ্ট বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। সমাবেশে রাজধানীর গাবতলী, মিরপুর রোড হয়ে আসা নেতাকর্মীরা সায়েন্সল্যাব-নিউমার্কেট হয়ে নীলক্ষেতে নেমে হেঁটে টিএসসি হয়ে বিভিন্ন গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ করবেন।
আগতদের বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর ও নীলক্ষেত থেকে পলাশী পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে এক লাইনে পার্কিং করা যাবে। উত্তরা থেকে এয়ারপোর্ট রোড হয়ে মহাখালী-মগবাজার-কাকরাইল চার্চ-রাজমনি ক্রসিং-নাইটিঙ্গেল-পল্টন মোড়-জিরো পয়েন্ট অথবা খিলক্ষেত ফ্লাইওভার-বাড্ডা-গুলশান-রামপুরা রোড-মৌচাক ফ্লাইওভার-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজমনি ক্রসিং-নাইটিঙ্গেল হয়ে পল্টন মোড়/ জিরো পয়েন্ট হয়ে আগত ব্যক্তিরা পল্টন মোড়ে নেমে হেঁটে দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানের বিভিন্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন এবং তাদের বাসসমূহ মতিঝিল এলাকায় পার্কিং করবেন।
উত্তরা থেকে আসা গাড়িসমূহের পার্কিং স্থান মতিঝিল, গুলিস্তানে সংকুলান না হলে প্রয়োজনে হাতিরঝিল এলাকায় পার্কিং করা যাবে।
পূর্বাঞ্চল থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে এবং দক্ষিণাঞ্চল থেকে পোস্তগোলা হয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে আগত ব্যক্তিবর্গ গুলিস্তানে নেমে হেঁটে জিরো পয়েন্ট-দোয়েল চত্বর হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে গমন করতে বলা হয়েছে এবং তাদের বাসসমূহ মতিঝিল/গুলিস্তান এলাকায় পার্কিং করা যাবে।
এছাড়া যারা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে গমন করবেন তারা চাঁনখারপুল নেমে হেঁটে দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানের বিভিন্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন এবং তাদের বাসসমূহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে পার্কিং করা যাবে।
বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে আগতরা গোলাপশাহ মাজারে নেমে হেঁটে হাইকোর্ট-দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানের বিভিন্ন গেট দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করবেন এবং তাদের বাস গুলিস্তান এলাকায় পার্কিং করবেন।
বিশেষ নির্দেশনা
শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত সড়ক সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য বন্ধ থাকবে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারদিকের রাস্তায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির যাতায়াত উপলক্ষে ওইদিন ভোর থেকে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশের বিভিন্ন ইন্টারসেকশন যেমন-বাংলামোটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, শাহবাগ, কাটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশীবাজার, চাঁনখারপুল, গোলাপশাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল চার্চ, অফিসার্স ক্লাব, মিন্টু রোড ক্রসিংগুলো থেকে গাড়ি ডাইভারশন দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।