–ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি আশারুল শেখ এবং তার প্রধান সহযোগী ইলিয়াস শেখ ও খায়রুল শেখ’কে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং খুন, অপহরনসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার পলাতক আসামী গ্রফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
২। ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানাধীন হাটঘাটা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নিজামউদ্দিন একই থানাধীন পার্শ্ববর্তী দিঘলিয়া এলাকায় মৃত জাহিদুল শেখের মেয়ে জামেলা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর নিজাম তার শ্যালিকা জলি খাতুনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি জলি খাতুনের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। নিজাম গত ২১/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সকালে তার শ্যালিকা জলিকে সঙ্গে নিয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ এক আত্মীয়কে দেখতে যান। সেখান থেকে জলিকে নিয়ে নিজাম তার বাড়িতে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে গত ২১/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ২৩:৩০ ঘটিকায় জলির পরিবারের লোকজনসহ ৯-১০ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘটনাস্থল মধুখালী থানাধীন হাটঘাটা এলাকার নিজামের বসত ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে নিজামের শ্যালক শরিফুলসহ বেশ কয়েকজন মিলে নিজামকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে জলিকে নিয়ে যায়। অতঃপর নিজামের আত্মীয়স্বজন ও আশপাশের লোকজন নিজামকে গুরুতর আহত উদ্ধার করে প্রথমে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নিজামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঐদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথিমধ্যে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় পৌছালে এ্যাম্বুলেন্সের ভিতর নিজাম মৃত্যুবরণ করেন।
৩। উক্ত ঘটনায় মৃত নিজামের ভাই মোঃ আজিম উদ্দিন শেখ (২৫), পিতা-মৃত মানিক শেখ, সাং-হাটঘাটা, থানা-মধুখালী, জেলা-ফরিদপুর বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় চাঞ্চল্যকর নিজামউদ্দিন হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত মোঃ শরিফুল শেখ ও মোসাঃ তথি বেগমসহ ৯-১০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৪, তারিখ-২২/০৩/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
৪। নৃশংস এই হত্যাকান্ডটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। উক্ত হত্যাকান্ডের বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।
৫। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যা মামলার যথাক্রমে ৫ নং ও ৬ নং পলাতক আসামি ১। মোঃ শরিফুল শেখ (২০), পিতা-মোঃ হারুন অর রশিদ ও ২। মোসাঃ তথি বেগম (৬২), স্বামী-মৃত হাশেম শেখ, সর্ব সাং-দীঘলিয়া, থানা-মধুখালী, জেলা-ফরিদপুর’দ্বয়কে গ্রেফতার করে।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তি ও তাদের দেয়া তথ্যমতে অদ্য ২০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ভোর ০৫:০০ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর নিজামউদ্দিন হত্যা মামলার ০১, ০২ ও ০৪ নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি ১। মোঃ আশারুল শেখ (২৮), ২। মোঃ ইলিয়াস শেখ (২৪) উভয় পিতা-মৃত জাহিদুল শেখ ও ৩। মোঃ খায়রুল শেখ (২২), পিতা-মোঃ হারুন অর রশিদ, সর্ব সাং-দীঘলিয়া, থানা-মধুখালী, জেলা-ফরিদপুরদের’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা উক্ত হত্যাকান্ডে তাদের সরাসরি সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করেছে।
৭। গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
——-xxxxxxxxxxxxx————
_____________________________
RCMC & MEDIA CELL
Rapid Action Battalion-10
Cell: +8801847474393
Cell: +8801847474394