চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামে কর্ণফুলীতে উপজেলা আ.লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি,উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

রবিবার (১৭মার্চ) বিকেলে ৪টায় উপজেলার মজ্জ্যারটেক আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু চত্বর এলাকায় স্থানীয় সাংসদ
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা করেছে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ (একাংশ) ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান তালুকদারের সঞ্চালনায় ও উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম টুকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী রনি।

এদিকে একই এলাকায় একই বিষয়ে বেলা পাঁচটার দিকে শিকলবাহার একটি খোলা মাঠে (আনোয়ারা কর্ণফুলী) সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি,অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি-মন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মদিনের কেক কাটা ও দোয়া মাহফিল করেছেন কর্ণফুলী উপজেলা তৃণমূল আওয়ামী ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

এতে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় ও চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমদ ও প্রধান বক্তা ছিলেন শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।

যদিও এ দোয়া মাহফিল হওয়ার কথা ছিলো কর্ণফুলী গার্ডেন নামের একটি স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে,কিন্তু কর্মসূচির ঠিক আগের রাতে আইন শৃঙ্খলার বিষয়টি বিবেচনায় এনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই কমিউনিটি সেন্টারের পিছনে একটি খোলা মাঠে কেক কাটা ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন করেন।

এর আগে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের একই সময় পাশাপাশি স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ডাক দেওয়ায় রাজনীতির মাঠে চরম উত্তেজনা দেখা যায়,এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝেও বড় ধরনের সংঘর্সের আশংকা বিরাজ করছিল,জনমনে দেখা গিয়েছিল বিরূপ প্রতিক্রিয়া। উত্তেজনায় এড়াতে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শেষ হয় আলোচনা সভা।

মূলত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে (আনোয়ার-কর্ণফুলী) চট্টগ্রাম-১৩ এই আসনটি এককভাবে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর পক্ষে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছিলো বেশ দৃশ্যমান।পরে তার মৃত্যুতে হালধরে ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এতে মাঠ পর্যায়ের তৃণমূল রাজনৈতিক কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন সংকটে আন্তদহন সৃষ্টি হয় কর্মীদের মাঝে। চলতি সংসদ মেয়াদে মন্ত্রনালয়ের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি-মন্ত্রীর দায়িত্বে আসে ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি’র নাম।এর পর থেকে বদলে যায় আনোয়ারা-কর্ণফুলীর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, শুরু হয় রাজনীতির নতুন মেরুকরণ। মুহুর্তে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় আনোয়ারা কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের চলমান রাজনীতির মাঠ,উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে তৃণমূল থেকে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

সম্প্রতি দেশের প্রথম নারী অর্থ প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ায় ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি’কে চলতি মাসের ৯ তারিখে কর্ণফুলীতে বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা নাগরিক কমিটি।কিন্তু সেই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি স্থানীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অনুসারীদের।

এরপর থেকে শুরু হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও একে অপরের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি মূলক বক্তব্য,ফলে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে।