মুহাম্মদ আয়াজ চট্টগ্রাম
দীর্ঘ ২২ঘন্টা চেষ্টার পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর এলাকায় চিনি কলের ভয়াবহ আগুন, ফায়ার সার্ভসের ১৫টি ইউনিটের সাথে আগুন নেভানোর কাজে রাতেই যোগ দিয়েছিলেন বিমান,নৌ, সেনাবাহিনী ও কোসগার্ডের অসংখ্য কর্মীরা। এরই মধ্যে অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে ৭সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল বিকেল পৌনে চারটার দিকে কারখানার একটি গুদামে আগুন লাগে।যেখানে ছিলো ব্রাজিল থেকে আমদানিকৃত ১লাখ মেট্রিক টন চিনি তৈরির কাচামাল যার কিছুই অবশিষ্ট নাই বলে ধারণা করছেন কর্তৃপক্ষ। আগুন লাগার সময় কারখানাটি চালু ছিল। সেখানে প্রায় সাড়ে ৫০০ শ্রমিক কাজ করতেছিলেন বলে জানা যায়। আগুন লাগার পর কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারাখানা সূত্রে জানা যায়, কারখানায় মোট ৫টি গুদাম রয়েছে।আগুন লাগার গোডাউনে আনুমানিক ১৫০০ কোটি টাকার চিনি তৈরির কাঁচামাল রয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
এঘটনায় মো.আলম (৩৫) ও মো.তারেক (৩০) নামের দুইজন শ্রমিক আহত হয়েছেন,তারা দুইজনও ইছানগর এস আলম সুগার মিলে কর্মচারী শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মালেক জানান, রাত সাড়ে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। পরে যোগ দেয় নৌবাহিনীর একটি দল। রাত নয়টার দিকে যুক্ত হয় সেনাবাহিনীর একটি টিম।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে তারা এস আলমের চিনির কারখানায় আগুন লাগার সংবাদ পায়। এরপর প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট কাজ শুরু করে। এরপর পর্যায়ক্রমে ১০টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ফায়ার সার্ভিস কর্ণফুলী নদী থেকে পাইপের মাধ্যমে সরাসরি পানি ছিটাচ্ছে।
সবশেষ মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে এসে দেখা যায়,আগুনে চিনি পুড়ে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরেছে।কালো ধোয়ায় ওই এলাকার আকাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে,ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং র্যাবও রয়েছেন। তাঁরা উৎসুক জনতাকে সরানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়,বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড,বিমান,নৌ ও সেনাবাহিনীর টিম আজ সকালে তারা ঘটনাস্থনা ত্যাগ করে। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট।
গতকাল রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে নগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) শাকিলা ফারজানা জানান, আগুন লাগার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করার। পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এদিকে রাতে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে।