ঢাকা ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইলে অবৈধভাবে মাটি কাটার মহোৎসব ট্রাফে ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ রাস্তা ধ্বংস

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইল সদর ‘সহ বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এ কাজে ব্যবহৃত ট্রাফে ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাকের কারণে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ধ্বংসের মুখে পড়ছে। ঘাটাইল উপজেলায় পাহাড় ও টিলার লাল মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। দেলদুয়ার, নাগরপুর, ভুঞাপুর ও কালিহাতি উপজেলায় একই অবস্থা।
বাসাইল উপজেলার ভৈরপাড়া সতীশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ঝিনাই নদীর তীর থেকে বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। অবৈধভাবে বালু ও মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এর ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত গ্রামীণ পাঁকা ও কাঁচা রাস্তা ধ্বংসের মুখে পরেছে। এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাসাইল ভৈরপাড়ায় বেশির ভাগ গরীব ও খেটে-খাওয়া মানুষের বসবাস। এখানে আমরা নদী তীরবর্তী তিন ফসলি জমিতে বোরো, সরিষা ও চৈতালী ফসল চাষ করি। পার্শ্ববর্তী গ্রাম আদাজানে বেশির ভাগ লোক নদীর ওপারে বসবাস করেন। এপারে তাদের কিছু জমি রয়েছে। আদাজানের জমিওয়ালাদের নদী পার করে শষ্যাদি নিতে কষ্ট হয় তাই তারা প্রতি বছর জমির মাটি বিক্রি করে দেন। এসময় মাটি ব্যবসায়ীরা আমাদের সরিষা ও বোরো ধানিজমির উপর দিয়ে মাটির গাড়ী চালিয়ে ফসল নষ্ট করে। আমরা সাধারণ মানুষ। কিছু কইতে পারি না। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন কে জানাতে গেলে তাদের লোকজন এসে আমাদেরকে হুমকি দেয়। তারা প্রভাবশালী। বাধ্য হযে ফসলের ক্ষতি পূরণবাবদ যা টাকা দেয় তাই নিয়ে চুপচাপ থাকি। মাঝে মাঝে পুলিশ আসে। আমরা তাদের মৌখিক ভাবে জানিয়েছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। গত কয়েক মাস ধরে সারা রাত টানা ভেকু চলছে । এছাড়া মাটির গাড়ী চলাচল করে। আমরা দিনশেষে শান্তিমত ঘুমাতেও পারি না। আমাদের জমির ফসল আর বাড়ীঘর ধুলোয় অন্ধকার। আমাদের পরিবারের ছোট শিশু আর বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টে ভূগছে।
তারা আরো জানান, আমাদের অভিযোগ প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে প্রশাসনের সঙ্গে আতাঁত করেই নাকি নদী থেকে বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর তীর ঘেঁষে প্রায় ৪০০ শতাংশ জমিতে কয়েকটি ভেকু বসিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। নদীর তীর প্রায় ৩০ ফুট গর্ত করে তলদেশ থেকে বালু কেটে নিচ্ছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। মাটি পরিবহনের জন্য ৩০-৩৫ টি মাঝারি ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর চলছে ফসলি জমি নষ্ট করে। গাড়ি দিয়ে এসব মাটি পরিবহনের ফলে ব্যহৃত হচ্ছে বোরো চাষাবাদ। নষ্ট হচ্ছে সরিষা আর ভুট্টা জাতীয় ফসল। ধুলোর আস্তরণ পড়েছে ফসলের উপর। বালুকাটা চক্রটি অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা কোন প্রকার প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, আমরা প্রশাসন ও পুলিশ ম্যানেজ করেই ব্যবসা পরিচালনা করছি। পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে কথা না বলে এসব ব্যবসা চলে না। এখানে গাড়ি চলাচলের জন্য জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ উচিতের চাইতে অনেক বেশি টাকা দিয়েছি। এ জমির মাটি কাটা কোন সমস্যা না। এ বছর কাটতেছি আগামী বছর দেখবেন ভরে গেছে। জমির মালিকদের শুধু লাভ আর লাভ। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বালু ব্যবসায়ীদের সাথে প্রশাসনের কোন আঁতাত নেই। তবে কে বা কারা নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি করছে খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

টাঙ্গাইলে অবৈধভাবে মাটি কাটার মহোৎসব ট্রাফে ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ রাস্তা ধ্বংস

আপডেট টাইম ০৫:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইল সদর ‘সহ বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এ কাজে ব্যবহৃত ট্রাফে ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাকের কারণে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ধ্বংসের মুখে পড়ছে। ঘাটাইল উপজেলায় পাহাড় ও টিলার লাল মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। দেলদুয়ার, নাগরপুর, ভুঞাপুর ও কালিহাতি উপজেলায় একই অবস্থা।
বাসাইল উপজেলার ভৈরপাড়া সতীশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ঝিনাই নদীর তীর থেকে বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। অবৈধভাবে বালু ও মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এর ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত গ্রামীণ পাঁকা ও কাঁচা রাস্তা ধ্বংসের মুখে পরেছে। এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাসাইল ভৈরপাড়ায় বেশির ভাগ গরীব ও খেটে-খাওয়া মানুষের বসবাস। এখানে আমরা নদী তীরবর্তী তিন ফসলি জমিতে বোরো, সরিষা ও চৈতালী ফসল চাষ করি। পার্শ্ববর্তী গ্রাম আদাজানে বেশির ভাগ লোক নদীর ওপারে বসবাস করেন। এপারে তাদের কিছু জমি রয়েছে। আদাজানের জমিওয়ালাদের নদী পার করে শষ্যাদি নিতে কষ্ট হয় তাই তারা প্রতি বছর জমির মাটি বিক্রি করে দেন। এসময় মাটি ব্যবসায়ীরা আমাদের সরিষা ও বোরো ধানিজমির উপর দিয়ে মাটির গাড়ী চালিয়ে ফসল নষ্ট করে। আমরা সাধারণ মানুষ। কিছু কইতে পারি না। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন কে জানাতে গেলে তাদের লোকজন এসে আমাদেরকে হুমকি দেয়। তারা প্রভাবশালী। বাধ্য হযে ফসলের ক্ষতি পূরণবাবদ যা টাকা দেয় তাই নিয়ে চুপচাপ থাকি। মাঝে মাঝে পুলিশ আসে। আমরা তাদের মৌখিক ভাবে জানিয়েছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। গত কয়েক মাস ধরে সারা রাত টানা ভেকু চলছে । এছাড়া মাটির গাড়ী চলাচল করে। আমরা দিনশেষে শান্তিমত ঘুমাতেও পারি না। আমাদের জমির ফসল আর বাড়ীঘর ধুলোয় অন্ধকার। আমাদের পরিবারের ছোট শিশু আর বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টে ভূগছে।
তারা আরো জানান, আমাদের অভিযোগ প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে প্রশাসনের সঙ্গে আতাঁত করেই নাকি নদী থেকে বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর তীর ঘেঁষে প্রায় ৪০০ শতাংশ জমিতে কয়েকটি ভেকু বসিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। নদীর তীর প্রায় ৩০ ফুট গর্ত করে তলদেশ থেকে বালু কেটে নিচ্ছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। মাটি পরিবহনের জন্য ৩০-৩৫ টি মাঝারি ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর চলছে ফসলি জমি নষ্ট করে। গাড়ি দিয়ে এসব মাটি পরিবহনের ফলে ব্যহৃত হচ্ছে বোরো চাষাবাদ। নষ্ট হচ্ছে সরিষা আর ভুট্টা জাতীয় ফসল। ধুলোর আস্তরণ পড়েছে ফসলের উপর। বালুকাটা চক্রটি অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা কোন প্রকার প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, আমরা প্রশাসন ও পুলিশ ম্যানেজ করেই ব্যবসা পরিচালনা করছি। পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে কথা না বলে এসব ব্যবসা চলে না। এখানে গাড়ি চলাচলের জন্য জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ উচিতের চাইতে অনেক বেশি টাকা দিয়েছি। এ জমির মাটি কাটা কোন সমস্যা না। এ বছর কাটতেছি আগামী বছর দেখবেন ভরে গেছে। জমির মালিকদের শুধু লাভ আর লাভ। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বালু ব্যবসায়ীদের সাথে প্রশাসনের কোন আঁতাত নেই। তবে কে বা কারা নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি করছে খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।