রাজু আহমেদ, গজারিয়া প্রতিনিধি:
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির পর এবার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে আলু জমিতে পানি জমায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির শঙ্কায় পড়েছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আলুচাষিরা।
শুক্রবার উপজেলাটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় গুয়াগাছিয়া, হোসেন্দী, ইমামপুর, বাউশিয়া ও ভবেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় টানা বৃষ্টিতে আলু জমিতে পানি জমে গেছে। সরু নালা কেটে কেউ আবার পানি সেচে জমি থেকে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন। এর আগে গত নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় মিথিলের প্রভাবে এই উপজেলা থেকে যারা আগাম আলু চাষ করেছিলেন তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। মাত্র ২০ দিনের মাথায় আবারও টানা বৃষ্টিতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী গ্রামের কৃষক আরমান প্রধান বলেন, চলতি বছর ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার এর মধ্যে এক বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছিলাম। বাকি ৪ বিঘা জমি আলুর রোপনের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে সদ্য আলু রোপন করা জমিতে পানি জমে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি আমি। অন্তত ৪০ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেল আমার।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলুচাষি কামরুল হাসান বলেন, আমি ৮ বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছিলাম। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে একবার বড় ধরনের আর্থিক হতে মুখে পড়েছিলাম। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধারে এনে পুনরায় আলু বীজ রোপন করেছিলাম এবার আবার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবের টানা বৃষ্টি হচ্ছে, কি করব ভেবে পাচ্ছি না। এত ভারী বর্ষণ হবে এটা আমাদের জানা ছিল না, সঠিক সময়ে আবহাওয়া পূর্বাভাস পেলে ক্ষতি কিছুটা কমানো যেত।
জষ্টিতলা এলাকার আলুচাষি বাদল মিয়া বলেন, ৫ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছিলাম আমি। টানা বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গেছে অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আলুগুলো পচে যাবে, পুনরায় আলু রোপন করতে হবে। সার-বীজ মিলিয়ে অনেক খরচ হয়ে গেছে। চলতি বছর টানা দুবার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লাম আমরা। সরকারি উদ্যোগে যদি ন্যায্যমূল্যে অথবা বিনামূল্যে আমাদের আলু বীজ সরবরাহ করা হয় তবে কৃষক প্রাণ বাঁচাতে পারবে অন্যথায় মনে হয় আলুর আবাদ করা সম্ভব হবে না।
গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, চলতি বছর গজারিয়া উপজেলায় ১৯৮৬ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আমাদের। ইতিমধ্যে প্রায় ১০০০ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়ে গিয়েছিল তবে টানা বৃষ্টিতে অনেক চাষির জমিতে পানি জমে গেছে। মাঠ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ১২২ হেক্টর জমিতে পানি জমে যাওয়ার তথ্য পেয়েছি আমরা। কৃষকরা নালা কেটে পানি বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছি। সরকার থেকে কোনো সহায়তা ঘোষণা করা হলে সেটা তাদের পৌঁছে দেওয়া হবে।