বাকেরগঞ্জ( বরিশাল) প্রতিনিধি।
বাকেরগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব ও দুই দিনের চলমান টানা বৃষ্টিতে স্বপ্নের সোনালী ফসল ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
কয়েকদিন পরেই সোনালি আমন ধান কৃষকেরা ঘরে তুলবে। কৃষকদের সেই বুক ভরা স্বপ্ন ছিল । কিছু কিছু ধান প্রায় পেকেও আসছিলো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মিধিলার কারনে সে স্বপ্ন এখন মাটিতে মিশে রইল। দুই দিনের টানা বৃষ্টির পানি আর ঝড়ো হাওয়ায় ধান গাছ সব মাটির সাথে শুইয়ে পড়েছে।
অনেক কৃষক ধারদেনা করে আবার অনেকে বিভিন্ন এনজিও থেকে টাকা তুলে বাৎসরিক মেয়াদে জমি লিজ নিয়ে ধানের চাষ করেছিল
স্বপ্ন ছিল নতুন ধান ঘরে উঠলে দেনা পরিশোধ করে কিছুটা হলেও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করবে। কিন্তুু হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় মিধুলী সব আশা চুরমার করে দিল।
১৭/১১/২০২৩ ইং সরেজমিনে উপজেলার ভরপাশা, গারুরিয়া, কবাই সহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে টানা দুই দিন বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ১৪ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবে রয়েছে।
এক মাসের মধ্যেই ঘরে ঘরে নতুন ফসল তোলার আনন্দে যখন কৃষক পরিবার মাতোয়ারা হওয়ার কথা। যখন চারদিকে মৌ মৌ করবে পাকা ধানের সুঘ্রাণে। ঠিক তখন তার উল্টোটা হয়ে আনন্দ বিষাদে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অধিকাংশ ধানক্ষেতের গাছে কেবল শিস ধরেছে কিছুদিন গেলেই ধানগুলো পরিপক্ক হতো। এমন সময় বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানির নিচে হাজার হাজার হেক্টর ধান ক্ষেত বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বাকেরগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ২৭ হাজার ৫ শত ২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে নিজস্ব জমির মালিক ও বর্গা চাষি রয়েছেন। কারও জমি ১০ বিঘা আবার কারও এক বিঘা রয়েছে। আবার কেউ বর্গাচাষি। ফলে ক্ষতির পরিমানেও ভিন্নতা রয়েছে। যাদের জমির ধান আগাম পেকে গেছে তাদের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। তবে অধিকাংশ মাঠেই এখন ধানের ফলন ধরেছে। এই সময় অধিক বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কৃষকদের।
এ প্রসঙ্গে বাকেরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনিতি কুমার সাহা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব ও ঝড়-বৃষ্টির কারনে ক্ষেতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা এখন চলমান রয়েছে এর মধ্যেও মাঠে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। যারা রবিশস্যের চাষাবাদ করেন সেই সকল কৃষকদের ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আবাস পেয়েই আগাম সতর্ক করা হয়েছে। বন্যা শেষ হলে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে। ক্ষতি নিরূপণ করে কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে।