বাকেরগঞ্জ ( বরিশাল) প্রতিনিধি।
বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ভরপাশা ইউনিয়নের দুধল মৌ গ্রামের মৃত্যু রুস্তুম আলী হাওলাদারের বৃদ্ধ স্ত্রী মাহমুদা বেগমের জীবন চলে ভিক্ষায়। পলিথিন আর টিনের চালার ঝুপড়ি ঘরে অসহায় বিধবা মাহমুদা বেগমের বসবাস, ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বেসরকারি কোন সহায়তা। যেদিন ভিক্ষা করতে পারেন না, সেদিন অনাহারে দিন কাটে অসহায় বৃদ্ধ ভিক্ষুক মাহমুদা বেগমের। স্থানীয় মেম্বর চেয়ারম্যানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অনেকটাই ক্লান্ত এ বৃদ্ধ ভিক্ষুক বিধবা নারী মাহমুদা বেগম।
ভরপাশা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের উত্তর দুধল মৌ গ্রামে পায়রা নদীর চরে মাহমুদা বেগমের বসবাস। ১২ বছর আগে স্বামী রুস্তুম আলী হাওলাদার মৃত্যুর পরে নিঃসন্তান মাহমুদার কেউ খোঁজ রাখেননি, স্বামীকে হারিয়েছেন এক যুগ ধরেই অন্যের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করেই দু’মুঠো ভাত জোটে তার। বৃদ্ধ ভিক্ষুক মাহমুদার এমন বিপদে এগিয়ে আসেননি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় প্রশাসন ও বিত্তবান কেউ! অসহায় এই নারীর জীবনের শেষ প্রান্তে ৬৬ বছর বয়সে এখন পর্যন্ত তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি কার্ড কিংবা মাথা গোঁজার মতো ঠাঁই একটা ঘর।
সরেজমিনে মাহমুদা বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কোনো রকমের ভাঙ্গাচোরা পলিথিন পুরনো কাঁথা ও টিন দিয়ে তৈরি ছোট একচালা একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। নেই ঘরের বেড়া, যেদিন রাতে বৃষ্টি আসে সেদিন বিছানার এক কোণে বসে পলিথিন মুড়িয়ে কেটে যায় তার রাত। কখনো অন্যের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটান তিনি। বৃষ্টির পানিতে সব কিছু ভিজে যায়। বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তিনি।
জানতে চাইলে বৃদ্ধ ভিক্ষুক মাহমুদা বেগম কান্নাজড়িত বলেন, আমার খোঁজখবর নিয়া কি হইবে, দীর্ঘদিন অসুখে থাইকা ১২ বছর আগে স্বামী মারা গেছেন। যেইখানে বসবাস করি এই জমিটুকু অন্যের। তারা দয়া ধরেছেন তাই এখানে একটু পলিথিনের বেড়া দিয়ে বসবাস করছি। আমার স্বামী সহায়-সম্পদ কিছুই রেখে যাননি, এখন যেখানে আছি তাও আবার পায়রা নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে। গত বছর মেম্বারের কাছে গিয়ে একটা ঘরের কথা বলেছি সে টাকা চেয়েছে টাকা দিতে পারিনি তাই ঘরের তালিকায় আমার নাম দেয় নাই।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি-বাদলের দিনে খুব কষ্ট হয় এই বিধবা মাহমুদা বেগমের। মাহমুদা অতি দরিদ্র হলেও তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতা সহ সরকারি সহায়তা ও একটা সরকারি ঘর।
ভরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশ্রাফুজ্জামান খান খোকন বলেন, তিনি আমার কাছে একবার আসছিলেন। আমি তখন অসুস্থ ছিলাম। মাহমুদা বেগমের খোজ খবর নিয়ে জরুরী ভিত্তিত্বে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল বলেন, মুজিব বর্ষের চতুর্থ ধাপের ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। নতুন করে আবার ঘর আসলে মাহমুদা বেগমকে জমি সহ ঘর দেয়া হবে।