ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
যে পরিকল্পনায় খুন হন লোহাগড়ার চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ভাড়াটিয়া শুটার দুমকী উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা-পাল্টা হামলা বাকেরগঞ্জের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এমপির কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত করছেন একটি কুচক্রী মহল।। “ভাইয়া গ্রুপ প্রথম বাংলাদেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন,আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা হোটেল ও রিসোর্টের শেয়ার বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছেন” “এনএফএস’র নতুন কমিটি গঠন সভাপতি রাহাত, সম্পাদক হাসান” গজারিয়ায় তিতাসের অভিযান পাঁচ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন চুরি প্রতিরোধে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো।

কুমিল্লায় ১০১৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক, ৫২৪ সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য

আহসান হাবীব শামীম
কুমিল্লা জেলা ব্যুরোচীফ
≠======================

কুমিল্লায় ১০১৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক, ৫২৪ সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য
কুমিল্লার চান্দিনায় বিশ্বাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: ডেইলি মেসেঞ্জার

কুমিল্লায় প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়। জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২ হাজার ১০৭টি। এর মধ্যে ১ হাজার ১৮টি বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে এসব বিদ্যালয়ে ৫২৪ সহকারী শিক্ষকের পদও শুন্য রয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে কোমলমতি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

শিক্ষক সংকটে বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি বাড়তি চাপ সামাল দিতে হচ্ছে চাকরিরত শিক্ষকদের। অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরাও এ নিয়ে হতাশ। শিক্ষক সংকট নিরসনে জেলা শিক্ষা অফিসে ধরনা দিলেও এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেক অভিভাবক প্রতিনিধি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লায় ২১০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ লক্ষ ৫ হাজার ৩৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ১ হাজার ১৮টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এসব প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দিয়ে কোনো রকমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ দিকে এসব প্রতিষ্ঠানে ৫২৪টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। শিক্ষক স্বল্পতায় মানসম্মত পাঠদানের অভাবে ভালো ফলাফল করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকরা।

বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানিয়েছেন, শিক্ষক স্বল্পতার কারণে নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয় হচ্ছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে না। এ বিদ্যালয়গুলোয় সহকারী শিক্ষক দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তীব্র শিক্ষক সংকটে প্রতিদিনের পাঠদান কার্যক্রম চলছে কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে। অধিকাংশ উপজেলায় মহিলা শিক্ষকরা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় ও সহকারী অনেক শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণে থাকায় চলমান সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন ও প্রতিভা বিকাশের উপযুক্ত স্থান হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু সেখানে শিক্ষার্থীদেরকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাঠদান না করা হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

একাধিক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিজেদের ইচ্ছে মতো ক্লাস নিচ্ছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে অফিসের কাজের পাশাপাশি এক শিক্ষককে দুটি ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা একদিকে অতিরিক্ত কাজ আর পাঠদান কার্যক্রমে খেই হারাচ্ছে। অন্যদিকে এক বা দুটি বিষয় সারাদিন পড়া নিয়ে শিক্ষার্থীরাও বিরক্ত হচ্ছে। আর এ কারণেই অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছে।

এ বিদ্যালয়গুলোয় পরীক্ষার ফলাফল ও আশানুরূপ হচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেক অভিভাবকের। এ ছাড়া যেসব বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো হয় তারাও আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে না পারায় হতাশা বাড়ছে।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, প্রধান শিক্ষক সংকটের বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। বিষয়টি নিয়ে কিছু জটিলতা চলছে। আশা করি সরকার একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা দ্রুত সমাধান করবে।

তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে শিগগিরই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। সামনে নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হলে আমরা শতভাগ সহকারী শিক্ষক পাব। আর প্রধান শিক্ষক নিয়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী পদোন্নতি হবে। তবে শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যে পরিকল্পনায় খুন হন লোহাগড়ার চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ভাড়াটিয়া শুটার

কুমিল্লায় ১০১৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক, ৫২৪ সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য

আপডেট টাইম ০৮:৪২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩

আহসান হাবীব শামীম
কুমিল্লা জেলা ব্যুরোচীফ
≠======================

কুমিল্লায় ১০১৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক, ৫২৪ সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য
কুমিল্লার চান্দিনায় বিশ্বাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: ডেইলি মেসেঞ্জার

কুমিল্লায় প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়। জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২ হাজার ১০৭টি। এর মধ্যে ১ হাজার ১৮টি বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে এসব বিদ্যালয়ে ৫২৪ সহকারী শিক্ষকের পদও শুন্য রয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে কোমলমতি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

শিক্ষক সংকটে বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি বাড়তি চাপ সামাল দিতে হচ্ছে চাকরিরত শিক্ষকদের। অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরাও এ নিয়ে হতাশ। শিক্ষক সংকট নিরসনে জেলা শিক্ষা অফিসে ধরনা দিলেও এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেক অভিভাবক প্রতিনিধি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লায় ২১০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ লক্ষ ৫ হাজার ৩৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ১ হাজার ১৮টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এসব প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দিয়ে কোনো রকমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ দিকে এসব প্রতিষ্ঠানে ৫২৪টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। শিক্ষক স্বল্পতায় মানসম্মত পাঠদানের অভাবে ভালো ফলাফল করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকরা।

বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানিয়েছেন, শিক্ষক স্বল্পতার কারণে নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয় হচ্ছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে না। এ বিদ্যালয়গুলোয় সহকারী শিক্ষক দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তীব্র শিক্ষক সংকটে প্রতিদিনের পাঠদান কার্যক্রম চলছে কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে। অধিকাংশ উপজেলায় মহিলা শিক্ষকরা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় ও সহকারী অনেক শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণে থাকায় চলমান সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন ও প্রতিভা বিকাশের উপযুক্ত স্থান হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু সেখানে শিক্ষার্থীদেরকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাঠদান না করা হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

একাধিক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিজেদের ইচ্ছে মতো ক্লাস নিচ্ছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে অফিসের কাজের পাশাপাশি এক শিক্ষককে দুটি ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা একদিকে অতিরিক্ত কাজ আর পাঠদান কার্যক্রমে খেই হারাচ্ছে। অন্যদিকে এক বা দুটি বিষয় সারাদিন পড়া নিয়ে শিক্ষার্থীরাও বিরক্ত হচ্ছে। আর এ কারণেই অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছে।

এ বিদ্যালয়গুলোয় পরীক্ষার ফলাফল ও আশানুরূপ হচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেক অভিভাবকের। এ ছাড়া যেসব বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো হয় তারাও আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে না পারায় হতাশা বাড়ছে।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, প্রধান শিক্ষক সংকটের বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। বিষয়টি নিয়ে কিছু জটিলতা চলছে। আশা করি সরকার একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা দ্রুত সমাধান করবে।

তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে শিগগিরই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। সামনে নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হলে আমরা শতভাগ সহকারী শিক্ষক পাব। আর প্রধান শিক্ষক নিয়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী পদোন্নতি হবে। তবে শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।