জেলা প্রতিনিধি (পটুয়াখালী):
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার সর্বনাশা পায়রার করাল গ্রাসে ঘরবাড়ি ও ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন বসবাস করছেন। বেশ কয়েকটি পরিবার ৩থেকে ৪বার বসতঘর স্হানান্তর করেও শেষ রক্ষা হয়নি। পায়রার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সবকিছু।
১৮সেপ্টেম্বর সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাহের চরের পায়রার তীরের মানুষের হাহাকার। তাদের বসতভিটা, গাছপালা, পুকুর, ২টি মসজিদ, ১টি মন্দির, রাস্তা ঘাট, টিউবওয়েলসহ সবকিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী আ: রাজ্জাক, সুধীর পাইক, বিনয় পাইক ও পারুল বেগম বলেন,
বিগত কয়েক বছর যাবত এই ভয়াল পায়রার থাবায় সবকিছু হারিয়ে আশ্রয়হীন জীবনযাপন করছি। নদীর ভাঙন দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ঘরবাড়িসহ পুকুর ও রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে গেছে । এ পর্যন্ত চারবার বসতঘর স্হানান্তর করেও শেষ রক্ষা হয়নি। আমাদের ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট মসজিদ মন্দির হারিয়েছি। এমনকি গভীর নলকূপ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার কারণে সুপেয় পানি পর্যন্ত পান করতে পারছিনা। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি ।
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহিন গাজী বলেন, পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে অর্ধশত পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে, এখন তারা পাড়া প্রতিবেশীর বাড়িতে, রাস্তার পাশে, খাস জমিতে ছাপড়া দিয়ে কোন রকম মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আঙ্গারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ গোলাম মর্তুজা বলেন,
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে গতবছর ২২০০০ জিও ব্যাগ ভাঙন কবলিত স্থানে স্থাপন করা হয়েছিল যা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল অতি সামান্য। যা কোন কাজেই আসেনি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর আবেদনপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথেও দেখা করেছি। অদ্যবধি তাঁদের পূনর্বাসনের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। তিনি আরো জানিয়েছেন অনতিবিলম্বে ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে গ্রামটি নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে।
এব্যাপারে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল ইমরান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পার্শবর্তী সরকারি খাসজমিতে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছি এবং পরবর্তীতে তাদের পুনর্বাসনের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো দ্রুত সমস্যা সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ।