সিদ্ধিরগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ কদমতলীর ‘মার্চেন্ট ওয়ার্কারস(এম ডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ের’ বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে স্বপদে পুর্নবহাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে আমরা চাইনা বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। শিক্ষা বোর্ডে নির্দেশনার বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী মহল শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ে নানান দুর্নীতি ও অর্থ আত্নসাৎ করার অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ম্যানেজিং কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করেন প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদাকে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে বরখাস্ত করায় তৎকালিন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহার করে তাকে স্বপদে পুর্নবহালের জন্য ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিতে চিঠি দেন। কিন্তু ৩ মাস গত হলেও তাকে বহাল না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন ম্যানেজিং কমিটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়ার পর নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদা চলতি বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচমাধ্যমিক শিক্ষা বর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেন। ফলে বোর্ডের বিদ্যালয় উপ-পারিদর্শক আব্দুর রহমান শিকদার ও সেকশন অফিসার এস.এম জাকারিয়া আহম্মেদ অভিযোগ তদন্ত করার দায়িত্ব পান। তারা তদন্ত করে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে ও তাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে মর্মে ১৩ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে ১৬ জুলাই বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটি যাচাই বাছাই ও মতামতের ভিত্তিতে ২১ আগষ্ট ২২৮ তম বোর্ড সভায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নাজমুল হুদাকে স্বপদে পুর্নবহালের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর আজাদ হোসেন চৌধুরী স্বক্ষরিত (ঢাশিবো/বি/৬আএন্ডাআ/১০৫৬) নম্বর স্বারকে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নির্দেশ প্রদান করা হয় যে, পত্র ইস্যুর তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে স্বপদে পুর্নবহাল করে বোর্ডকে অবহিত করতে।
অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টি নাসিক ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত হলেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি। অবৈধ উপায়ে অর্থ উপর্জানের অভিযোগে যে মতির বিরুদ্ধে দুদুক মামলা করেছেন। বোর্ড থেকে পত্র ইস্যু করার পর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মতি তার অনুগত শিক্ষকদের উসকানি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষেপিয়ে তুলে বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে বাধ্য করেন। এসময় মতির ভাইয়ের স্ত্রী আসমা আক্তারের নেতৃত্বে ৬ নং ওয়ার্ডের বহু বহিরাগত নারী অভিভাবক সেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ততা পোষন করে মানববন্ধনে অংশ নেয়। প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদার অনিয়ম দুর্নীতি বিষয়ে জানতে চাইলে মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীর কিছু বলতে পারেনি। কেন আন্দোলন হচ্ছে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমাদের মানববন্ধন করতে বলেছেন।
এবিষয়ে জানতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে একাধিকবার ফোন করলে রিং হলেও তিনি রিসিভ করেননি।