আমজাদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর
—————————————————
লক্ষ্মীপুরে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। এগুলোর অধিকাংশেরই নেই কোনো নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।অথচ এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর লাইসেন্স পাওয়ার অন্যতম শর্তই হলো নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বর্জ্য পোড়ানোর চুল্লি (ইনসিনেটর) থাকতে হবে। আইনকে তোয়াক্কা না করে বিষাক্ত বর্জ্য বিশেষভাবে পরিশোধন করার বিধান থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তা করা হচ্ছে না! অসাধু ব্যবসায়ীরা পৌরসভা থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তিপত্র না নিলেও তারা বর্জ্য অপসারণের জন্য পৌরসভাকে মাসিক ৭ হাজার টাকা দিয়ে থাকে এমনটি জানিয়েছেন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক গুলোর মালিকপক্ষ। আবার কেঊ কেঊ বলেন তারা সাবেক মেয়র এর কাছ থেকে চুক্তিপত্র নিয়েছেন। আর পৌরসভাও মাসিক টাকা পেয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তিপত্রের কথা ভুলে গেছেন! পৌরসভার গাফিলতির কারণে চুক্তিপত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে মালিকরা। অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণের নিয়ম থাকলেও সেটি না করে পৌরসভার নিজস্ব সুইপারের মাধ্যমে একই গাড়িতে করে বিষাক্ত ও নরমাল বর্জ্য একসঙ্গে ট্রাকে বহন করে সে গুলো নিদিষ্ট কোন জায়গায় না পেলে শহরের উত্তর তেমুহনীতে নিয়ে রাখেন। যাহা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল। পৌরসভার হিসেব মতে শহরের ৪টি হাসপতাল ও ৯টি ডায়াগনস্টিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তিপত্র রয়েছে, আর বাকি গুলোর আছে কিনা, সেইটিরও জবাব নেই দ্বায়িত্বরতদের কাছে! কয়টি হাসপাতাল, আর কয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার? এমন কোন সুনিদৃষ্ট তালিকা নেই পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে!
এদিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সফেক্টর আব্দুল্যাহ হিল হাকিম বলেন, আমরা অচিরেই সকল প্রতিষ্ঠানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তিপত্র নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করবো।
অন্যদিকে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, বর্জ্য পোড়ানোর জন্য আমরা পৌর ৪নং ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় ডাম্পিং স্টেশনের ব্যবস্থা করেছি, সেখানেই বর্জ্য অপসারণ করা হয়, রাস্তার উপর বর্জ্য ফেলে রেখে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে মেয়র মো. মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই চুক্তিপত্র করছি, সাবেক মেয়র এর সময়ে কিছু ত্রুটি ছিলো, সে গুলো আমরা সমাধান করেছি, আর যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য চুক্তিপত্র নেই, আমরা তাদেরকে বলবো আপনারা অচিরেই আমাদের কাছ থেকে চুক্তিপত্র করে নিন, তা-না হলে আমরা আমাদের প্রশাসনিক যে ব্যবস্থা রয়েছে, সেটি কার্যকর করতে বাধ্য হবো। কেঊ নিয়মের ঊর্ধ্বে না! সকল প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম মানতে হবে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, বর্জ্য সনদের বিষয়টি পৌরসভার এখতিয়ার, তারপরেও আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে এগুলোর বিহিত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, সরকারি ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাগার করার সুযোগ আছে, সে ক্ষেত্রে জায়গার প্রয়োজন, আমি মেয়র এর সাথে কথা বলে এটির ব্যবস্থা করবো। আর বর্জ্য চুক্তিপত্র কয়জনের আছে, আর কয় জনের নেই, সেটি দেখে তারপরে সঠিক একটি সিদ্ধান্ত নেব।
Show quoted text