( বাকেরগঞ্জ) বরিশাল। প্রতিনিধি।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের ১৫৮ নং চর আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন লোহার দরজা, জানালা, বেঞ্চ গ্রিলসহ মূল্যবান আসবাবপত্র গোপনে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিবুল্লার বিরুদ্ধে।
এদিকে এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-ম্যানেজিং কমিটি সহ অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গারুড়িয়া ইউনিয়নের ১৫৮ নং চর আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি পরিতক্ত হলে কিছুদিন আগে উপজেলা প্রশাসন ওপেন টেন্ডার দিলে ভবনটি ক্রয় করেন হারুন খান নামের ঠিকাদার। বিদ্যালয়টি টেন্ডারে বিক্রি হওয়ার খবর শুনে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের পুরাতন লোহার বেঞ্চ ও জানালা গ্রিলসহ মূল্যবান আসবাবপত্র গোপনে বিক্রি করেন।
পুরাতন স্কুল ভবনের ক্রেতা হারুন খান জানান, কিছুদিন আগে উপজেলায় ওপেন টেন্ডার হলে ২ লাখ ৯ হাজার টাকায় আমি বিদ্যালয়টি ক্রয় করি। এখন শ্রমিক নিয়ে বিদ্যালয়টির মালামাল ভেঙ্গে বিক্রি করতে গেলে দেখা যায় পুরাতন অনেক মালামাল প্রধান শিক্ষক নিজেই বিক্রি করে দিয়েছেন। বিদ্যালয় ভবনটি দ্বিতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। দ্বিতীয় পক্ষ জানায়, বিদ্যালয় পুরাতন ভবনটি ক্রয় করে আমি প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসানে পড়েছি।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে একটি নতুন ভবনের অনুমোদন হয়েছে। ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যায় ধরা হয়েছে ভবনটি নির্মাণে। নতুন ভবন নির্মাণ কাজ পেয়েছেন মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পুরাতন স্কুল ভবনটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রয় হয়েছে। বিক্রয়ের আগে বিদ্যালয়ের পুরাতন মালামাল দরজা জানলা কেউ বিক্রি করলে বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
২১ /৮/২০২৩ ইং সোমবার চর আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে কথা হয় প্রধান শিক্ষক মহিবুল্লাহর সাথে। বিদ্যালয়ের পুরাতন মালামাল দরজা, লোহার জানলা,লোহার তৈরি চেয়ার বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ অন্যান্য সদস্যদের জানিয়ে পুরাতন মালামাল ৯ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফোরকান উল আলম সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মালামাল বিক্রয়ের বিষয় আমাদেরকে কিছু জানায়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় ২৫ বছরের একটি পুরানো ভবনে গারুড়িয়া ১৫৮ নং চরা আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্লাস নিতে হতো। জরজীর্ণ ভবনটিতে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলতো। টেন্ডারের মাধ্যমে পুরাতন স্কুল ভবনটি বিক্রি করা হয়েছে। পুরাতন ভবনের কিছু মালামাল প্রধান শিক্ষক বিক্রি করেছেন এমন মৌখিক অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে সত্যটা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।