ঢাকা ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

মাদ্রাসায় ২ শিশুর রহস্য জনক মৃত্যু ১জন চিকিৎসাধীন

স্টাফ রিপোর্টার মো: রুহুল আমিন শেখ

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে সাদিয়া খাতুন (৯), আসমা আক্তার সুইটি (১৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর এক শিশু শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুন (১১) নিজ বাড়িতে কবিরাজের কাছে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পুস্তইল সাহাপুর রিয়াজুল জান্নাহ মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায়। মৃত সাদিয়া খাতুন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পানিহারা গ্রামের নাজিম বাবুর একমাত্র মেয়ে এবং আসমা আক্তার সুইটি গোমাস্তাপুর উপজেলার পূর্ব ব্রাক্ষন গ্রামের আবু সায়েমের একমাত্র মেয়ে।
তবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দাবি মাদ্রাসায় “জিনের আসর” রয়েছে। গত বছর “মাথাব্যথার ” কারণে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগও তোলেন তাঁরা।
মাদ্রাসার হুজুর জুলাইখা জানান, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ জন। মাদ্রাসা করার পর থেকেই কোন না কোন সমস্যা আসতেই থাকে। মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রায় তিন বছর। এই তিন বছরে শিশু শিক্ষার্থীদের মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, রাতের বেলা বাচ্চারা ঘুমিয়ে গেলে ঘুমের মধ্যে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করা এমন ঘটনা প্রায় ঘটে। পরে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে নেওয়া হয়েছে। বাচ্চাদের সাথে এমন ঘটনা ঘটলেও হুজুর জুলাইখার সাথে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি বলে জানান তিনি। সোমবার রাতে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে উঠি, এক শিক্ষার্থী বলে সাপ কামড় দিয়েছে এমন কথা শুনে সকল শিক্ষার্থীকে ডাক দিই। কিছু ক্ষন পর আরও দুটি শিক্ষার্থী বলে আমাদের ও সাপ কামড় দিয়েছে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে অভিভাবকদের জানানো হয়। পরে তাদের মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারছি না।
শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুনের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় “দুশান্ত জিনের” আসর রয়েছে। বাচ্চাদের বিভিন্ন সময় স্বপ্নে দেখাতো এই মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যেতে। তা না হলে বাচ্চাদের মেরে ফেলা হবে। আবার অনেক সময় রাতের বেলা মাদ্রাসার বাইরে ডাকে কিন্তু বের হয়ে আর কেউ দেখতে পায় না কাউকে। গত বছর এই সময়েই মাথা ব্যথা নিয়ে দুজন শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে। মেয়ে সুস্থ হলে আর ওই মাদ্রাসায় পাঠাবো না।
ওই এলাকার কবিরাজ একরামুল হক। তিনি বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর কবিরাজি করছি। মাদ্রাসার জায়গাটা অনেক দুশান্ত। জিনের বসবাস রয়েছে এখানে। বাচ্চাদের সবসময় ভয়ের মধ্যে রাখতো তাঁরা।
নিয়ামতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনজন শিক্ষার্থীকে সাপে কামড়েছে। তার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অপরজন চিকিৎসাধীন। পরিবারের কারও কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

মাদ্রাসায় ২ শিশুর রহস্য জনক মৃত্যু ১জন চিকিৎসাধীন

আপডেট টাইম ০৫:৫২:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার মো: রুহুল আমিন শেখ

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে সাদিয়া খাতুন (৯), আসমা আক্তার সুইটি (১৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর এক শিশু শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুন (১১) নিজ বাড়িতে কবিরাজের কাছে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পুস্তইল সাহাপুর রিয়াজুল জান্নাহ মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায়। মৃত সাদিয়া খাতুন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পানিহারা গ্রামের নাজিম বাবুর একমাত্র মেয়ে এবং আসমা আক্তার সুইটি গোমাস্তাপুর উপজেলার পূর্ব ব্রাক্ষন গ্রামের আবু সায়েমের একমাত্র মেয়ে।
তবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দাবি মাদ্রাসায় “জিনের আসর” রয়েছে। গত বছর “মাথাব্যথার ” কারণে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগও তোলেন তাঁরা।
মাদ্রাসার হুজুর জুলাইখা জানান, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ জন। মাদ্রাসা করার পর থেকেই কোন না কোন সমস্যা আসতেই থাকে। মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রায় তিন বছর। এই তিন বছরে শিশু শিক্ষার্থীদের মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, রাতের বেলা বাচ্চারা ঘুমিয়ে গেলে ঘুমের মধ্যে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করা এমন ঘটনা প্রায় ঘটে। পরে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে নেওয়া হয়েছে। বাচ্চাদের সাথে এমন ঘটনা ঘটলেও হুজুর জুলাইখার সাথে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি বলে জানান তিনি। সোমবার রাতে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে উঠি, এক শিক্ষার্থী বলে সাপ কামড় দিয়েছে এমন কথা শুনে সকল শিক্ষার্থীকে ডাক দিই। কিছু ক্ষন পর আরও দুটি শিক্ষার্থী বলে আমাদের ও সাপ কামড় দিয়েছে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে অভিভাবকদের জানানো হয়। পরে তাদের মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারছি না।
শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুনের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় “দুশান্ত জিনের” আসর রয়েছে। বাচ্চাদের বিভিন্ন সময় স্বপ্নে দেখাতো এই মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যেতে। তা না হলে বাচ্চাদের মেরে ফেলা হবে। আবার অনেক সময় রাতের বেলা মাদ্রাসার বাইরে ডাকে কিন্তু বের হয়ে আর কেউ দেখতে পায় না কাউকে। গত বছর এই সময়েই মাথা ব্যথা নিয়ে দুজন শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে। মেয়ে সুস্থ হলে আর ওই মাদ্রাসায় পাঠাবো না।
ওই এলাকার কবিরাজ একরামুল হক। তিনি বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর কবিরাজি করছি। মাদ্রাসার জায়গাটা অনেক দুশান্ত। জিনের বসবাস রয়েছে এখানে। বাচ্চাদের সবসময় ভয়ের মধ্যে রাখতো তাঁরা।
নিয়ামতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনজন শিক্ষার্থীকে সাপে কামড়েছে। তার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অপরজন চিকিৎসাধীন। পরিবারের কারও কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।