সাইফুর রহমান রিয়াজ, দুমকি(পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নে ভোটে জিতেই স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ঘটনায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন মৃধার(৫৪) বিরুদ্ধে দেড় বছরের শিশুকন্যাকে উদ্ধারসহ যৌতুকের মামলা দায়ের করেছে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগম(৪১)। গত ১৯ জুলাই বুধবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সমন জারী করেছে বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. হুমায়ুন কবির বাদশা। ঘটনা ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত ৫নং শ্রীরামপুর ইউপি নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন নাসির উদ্দিন মৃধা। ভোটে জয়লাভ করার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগমকে তার গর্ভজাত দেড়বছর বয়সের শিশুকন্যা নাফিজাকে রেখে তালাক দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় তালাকপ্রাপ্ত নার্গিস বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও যৌতুক নিরোধ আইনে পৃথক দু‘টি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে আরো জানা যায়, প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে ইউপি সদস্য নাসির মৃধা তিন বছর পূর্বে প্রথম পক্ষের স্বামীকে ডির্ভোস করিয়ে গোপনে নার্গিস বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে নাফিজা নামের দুই বছরের কম বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পরে বিভিন্ন অজুহাতে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন মৃধা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে নিয়েছে। নির্বাচনে খরচের নামে ও ধার দেনার কারনে আরও টাকা দাবি করা নিয়ে তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। ঘটনার দিন গত ১৮ জুলাই বসত ঘরে আটকে রেখে বেদম মারধর করে এবং সাদা ৪টি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর ও টিপ নিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। ওই সময় শিশুকন্যা নাফিজাকেও জোরপূর্বক তার কোল থেকে ছিনিয়ে রেখেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি ।
মামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, বেপরোয়া চলাচল ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ানোর কারনে পারিবারিক সমঝোতার ভিত্তিতে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক ও নগদ লেনদেন পরিশোধ পূর্বক তালাক দেয়া হয়েছে। তাঁর শিশু সন্তান নাফিজাকে জোরপূর্বক রেখে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ইচ্ছাকৃত ভাবেই শিশু সন্তান রেখে চলে গেছেন যার সপক্ষে যথেষ্ট প্রমান (ভিডিও ফুটেজ) রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী হাসি বেগম (৫০) জানান, তাঁদের যৌথ সমঝোতার ভিত্তিতেই তালাক সম্পন্ন হয়েছে। জোরপূর্বক কিছু করা হয়নি। ঘটনা স্থলে স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) মাওলানা জাকারিয়া উপস্থিত ছিলেন। নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) মাওলানা জাকারিয়া বলেন, আমার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতেই দু পক্ষের সম্মতিতে তালাক সম্পন্ন হয়েছে।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, তিনি বিষয়টি অবগত নন। তবে আদালতের আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।।