ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা। গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় খাদে প্রাইভেটকার, নিহত ৩ সিলেটে আগাম বন্যার আশঙ্কায়!! হাওরজুড়ে কৃষকের ব্যস্ততা শিশুদের মনোবিকাশে প্রয়োজন সংস্কৃতি চর্চা: মেয়র রেজাউল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার, প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই রোগী দেখে সবার মন জয় করেলেন ডাক্তার মোঃ হুমায়ুন রশিদ শাকিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বগুড়া জেলা আরজেএফ’র সুপেয় পানি স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ দুমকীতে খাল সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মসহ শত শতগাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ। বাকেরগঞ্জ বাসীর উন্নয়নমুলক সকল প্রত্যাশা পুরনে কাজ করব। ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ রাজীব আহমেদ তালুকদার।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ ২০২২ সালে পানিতে ডুবে ১৬৭১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৬২.৩৬ শতাংশ ছেলে এবং ৩৭.৬৪ শতাংশ মেয়ে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করেছে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু, ৯৬০ জন যা মোট মৃতের ৫৭.৪৮ শতাংশ।
শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন” টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ২০২২ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিবেদন শিরোনামে তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের ৫১টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের আলোকে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে – শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মুবাশ্বির খান লিখিত বক্তব্যে জানান, সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম জেলায় ১৩২ জন, দ্বিতীয়তে রয়েছে নেত্রকোনা ৬৭ জন, এরপর যথাক্রমে কক্সবাজার ৬৫ জন, চাঁদপুর ৫৫ জন ও সুনামগঞ্জ ৫৪ জন। মৃগী রোগী, আঘাত জনিত মৃত্যু বা দূর্ঘটনা, সাঁতার না জানা, অসচেতনতা এই চারটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে মৃত্যুর কারণ হিসেবে। মোট ঘটনার ৬২.৫ শতাংশ ঘটানার জন্য দায়ী অসচেতনতা। এমনও দু-একটি ঘটনা দেখা গিয়েছে যেখানে বালতি কিংবা পাতিলের পানিতে ডুবেও শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। মা-বাবা বা শিশুর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যখন কাজে ব্যস্ত থাকেন বা বিশ্রামরত থাকেন তখনই সিংহ ভাগ শিশুর মৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে সকালে কাজের সময় থেকে শুরু করে দুপুরের বিশ্রামের সময় পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাঁতার না জানার কারণে পাঁচ বছরের উপরে ৩১.০৭ শতাংশ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শিশু মারা গিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে ২২৮ জন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে জুলাই মাসে ২০০ জন এবং সবচেয়ে কম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফেব্রুয়ারী মাসে ৬৫ জন। যা হতে বোঝা যায় শীতকালের চেয়ে বর্ষা বা তুলনা মূলক গরমের সময় পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। শহর ও গ্রামের তুলনায় গ্রামের শিশুদের নদী, পুকুর বা ডোবায় গোসল করতে গিয়ে বেশি মৃত্যু বরণ করতে দেখা গিয়েছে। শহরের মারা যাওয়া বেশির ভাগ শিশুই পাঁচ বছরের উপরের এবং সিংহ ভাগ সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুঈদ হাসান তড়িৎ জানান, পত্রিকা ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংবাদ বিশ্লেষণ করে আমাদের এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অনেক ঘটনাই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়নি, যেগুলো হিসেব করলে মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী।
শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন এর প্রতিবেদন মতে, সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটছে অসচেতনতার কারণে। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে সংবাদ সম্মেলনে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে শিশুর যত্নে দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের সব সময় মা বাবা বা অন্য কারও দায়িত্বে রাখা, পুকুর বা ডোবার চারপাশে বেড়া দেয়া, দলবেধে বা একাকী শিশুকে জলাশয়ে গোসল করতে না দেয়া, বালতি বা পানি পূর্ণ পাত্র সব সময় ঢেকে রাখা, পাঁচ বছর বয়স হলে শিশুকে সাঁতার শেখানো, সাঁতার শেখার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা, নদীপথে যাত্রার সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা অবলম্বন করা, ঝুঁকিপূর্ণ নৌযাত্রা পরিহার করা, অভিভাবকদের সচেতন করা, পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় ও পরে ভুক্তভোগী ও প্রতক্ষ্যদর্শীর করণীয় সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেওয়া, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তা ব্যবহার করার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা , দেশব্যাপী গণসচেতনা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, শহরের শিশুদের বাধ্যতামূলক সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা করা, নিয়মিত তৃণমূল পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা, যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করা, এ সম্পর্কিত কাজে আগ্রহী সমাজকর্মী ও সংগঠন সমূহকে যথাযথ সহযোগিতা করা। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধ প্রকল্পের সদস্য মির্জা রিয়ান ও আতিয়া আদিবা জারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গতবছর ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১৬৭১ জন।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন

আপডেট টাইম ১০:২৪:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ ২০২২ সালে পানিতে ডুবে ১৬৭১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৬২.৩৬ শতাংশ ছেলে এবং ৩৭.৬৪ শতাংশ মেয়ে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করেছে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু, ৯৬০ জন যা মোট মৃতের ৫৭.৪৮ শতাংশ।
শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন” টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ২০২২ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিবেদন শিরোনামে তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের ৫১টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের আলোকে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে – শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মুবাশ্বির খান লিখিত বক্তব্যে জানান, সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম জেলায় ১৩২ জন, দ্বিতীয়তে রয়েছে নেত্রকোনা ৬৭ জন, এরপর যথাক্রমে কক্সবাজার ৬৫ জন, চাঁদপুর ৫৫ জন ও সুনামগঞ্জ ৫৪ জন। মৃগী রোগী, আঘাত জনিত মৃত্যু বা দূর্ঘটনা, সাঁতার না জানা, অসচেতনতা এই চারটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে মৃত্যুর কারণ হিসেবে। মোট ঘটনার ৬২.৫ শতাংশ ঘটানার জন্য দায়ী অসচেতনতা। এমনও দু-একটি ঘটনা দেখা গিয়েছে যেখানে বালতি কিংবা পাতিলের পানিতে ডুবেও শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। মা-বাবা বা শিশুর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যখন কাজে ব্যস্ত থাকেন বা বিশ্রামরত থাকেন তখনই সিংহ ভাগ শিশুর মৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে সকালে কাজের সময় থেকে শুরু করে দুপুরের বিশ্রামের সময় পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাঁতার না জানার কারণে পাঁচ বছরের উপরে ৩১.০৭ শতাংশ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শিশু মারা গিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে ২২৮ জন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে জুলাই মাসে ২০০ জন এবং সবচেয়ে কম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফেব্রুয়ারী মাসে ৬৫ জন। যা হতে বোঝা যায় শীতকালের চেয়ে বর্ষা বা তুলনা মূলক গরমের সময় পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। শহর ও গ্রামের তুলনায় গ্রামের শিশুদের নদী, পুকুর বা ডোবায় গোসল করতে গিয়ে বেশি মৃত্যু বরণ করতে দেখা গিয়েছে। শহরের মারা যাওয়া বেশির ভাগ শিশুই পাঁচ বছরের উপরের এবং সিংহ ভাগ সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুঈদ হাসান তড়িৎ জানান, পত্রিকা ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংবাদ বিশ্লেষণ করে আমাদের এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অনেক ঘটনাই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়নি, যেগুলো হিসেব করলে মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী।
শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন এর প্রতিবেদন মতে, সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটছে অসচেতনতার কারণে। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে সংবাদ সম্মেলনে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে শিশুর যত্নে দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের সব সময় মা বাবা বা অন্য কারও দায়িত্বে রাখা, পুকুর বা ডোবার চারপাশে বেড়া দেয়া, দলবেধে বা একাকী শিশুকে জলাশয়ে গোসল করতে না দেয়া, বালতি বা পানি পূর্ণ পাত্র সব সময় ঢেকে রাখা, পাঁচ বছর বয়স হলে শিশুকে সাঁতার শেখানো, সাঁতার শেখার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা, নদীপথে যাত্রার সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা অবলম্বন করা, ঝুঁকিপূর্ণ নৌযাত্রা পরিহার করা, অভিভাবকদের সচেতন করা, পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় ও পরে ভুক্তভোগী ও প্রতক্ষ্যদর্শীর করণীয় সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেওয়া, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তা ব্যবহার করার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা , দেশব্যাপী গণসচেতনা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, শহরের শিশুদের বাধ্যতামূলক সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা করা, নিয়মিত তৃণমূল পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা, যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করা, এ সম্পর্কিত কাজে আগ্রহী সমাজকর্মী ও সংগঠন সমূহকে যথাযথ সহযোগিতা করা। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধ প্রকল্পের সদস্য মির্জা রিয়ান ও আতিয়া আদিবা জারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গতবছর ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১৬৭১ জন।