ঢাকা ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

বাউফলের তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়ায় নিষিদ্ধ জালে অবাধে মাছ শিকার।

আঃ মজিদ খান, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে নিষিদ্ধ বড় ও বহুদি জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চলছে। ভয়ংকর এই জাল দিয়ে শুধু মাছ শিকারই নয় ধংস করা হচ্ছে সকল প্রজাতির মাছের রনু। ফলে দিনে দিনে প্রকৃতিকভাবে তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেয়া হলে হারিয়ে যাবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে জানা যায়, বাউফলের তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিষিদ্ধ বহুদি ও বড় জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। একাধিক ডুবা চর এবং নদীর তীর ঘেঁষে কয়েক’শ মিটার দৈর্ঘের এক একটি বড় জাল জোয়ারের সময় পাতা হয়। ভাটার সময় পানি নেমে গেলে বড় জালে আটকা পড়ে ছোট বড় মাছের পাশাপাশি অসংখ্য মাছের রনু। অপরদিকে বহুদি জালকে স্থানীয় ভাষায় বাঁধা জাল বলা হয়। এই বাঁধা জাল পানির গভীরে আড়াআড়ি ভাবে পাতা হয়। বহুদি জালে আটকা পড়া মাছের সঙ্গে অংসখ্য রেনু মারা যায়। তেঁতুলিয়া নদীর চরব্যারেট, মমিনপুর, ধুলিয়া, নিমদি, চরওয়াডেল, বোরহানউদ্দিনের সাঁচড়া ও লালমাহনের নাজিরপুর পয়ন্টে এবং লোহালিয়া নদীর ঝিলনা ও বাহেরচর পয়ন্টে অংসখ্য বহুদি জাল দিয়া মাছ শিকার করা হচ্ছে। সরকারি নিয়মে ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটারের ফাঁসের জাল দিয়ে নদীতে মাছ শিকার করার নিয়ম। অথচ বড় জাল তরি করা হয় মশারী দিয়ে। অপরাদিকে বাঁধা জালের ফাঁস মশারীর ফাঁসের চেয়ে কিছুটা বড়। জেলেদের মধ্যে বড় ও বাঁধা জাল রাক্ষুস জাল হিসেবেও পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক শ্রণীর দাদন ব্যবসায়ী জেলেদের তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে নির্বিঘ্নে বড় ও বহুদি জাল দিয়ে মাছ শিকার করাছেন। ইতিমধ্যে একাধিক দাদন ব্যবসায়ী শূণ্য থেকে কোটিপতি হয়ে গেছেন। কালাইয়া লঞ্চঘাট এলাকার একাধিক দাদন ব্যবসায়ী শূণ্য থেকে এখন কোটিপতি।
সম্প্রতি বাউফলের চদ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরব্যারেট এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীর এপাড়-ওপাড় জুড়ে নিষিদ্ধ বাঁধা জাল (বহুদি) পেতে মাছ ধরার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন ৩ শতাধিক জেলে। বিক্ষোভ অংশ নেয়া জেলেরা জানান, ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাঁচড়া ইউনিয়নের শতাধিক জেলে তেঁতুলিয়া নদীর এপাড় ওপাড় জুড়ে প্রতিদিন নিষিদ্ধ বাঁধা জাল পেতে মাছ শিকার করছে। ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অসংখ্য রেনু ধংস হচ্ছে। অবিলম্বে ওই রাক্ষুস জালের ব্যবহার বন্ধ করার দাবী জানান জেলরা।
ইলিশ প্রজননের জন্যে ২২ দিন নিষধাজ্ঞার পর বর্তমান নদ-নদীতে ‘চাপিলা’ হিসেবে পরিচিত ইলিশের পোনায় সয়লাব হয়ে গেছে। প্রতিবছরই ইলিশের পোনা শিকার করার জন্য নিষিদ্ধ বাঁধা জাল ব্যবহার করে একটি অসাধু চক্র। এবারও তেঁতুলিয়া নদীতে বাঁধা জাল পাতা মাছ শিকারের মহাৎসবে মেতেছে চক্রটি।
এ প্রসঙ্গে বাউফল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, বাঁধা ও বড় জালের কারনে নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যহত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মৎস্য বিভাগ কম্বিং অপারশন পরিচালনা করে অবাধে জাল উদ্ধারের পর তা ধংস করেছে।
তিনি বলন, নদীতে অবাধে জালের ব্যবহার বন্ধর জন্য র‌্যাব ও কোষ্টগার্ডের অভিযান বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে অভিযান পরিচালনার জন্য সরকারকে আধুনিক ন্যজ ও চাহিদা মোতাবেক আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।###

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

বাউফলের তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়ায় নিষিদ্ধ জালে অবাধে মাছ শিকার।

আপডেট টাইম ০৯:০৮:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২

আঃ মজিদ খান, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে নিষিদ্ধ বড় ও বহুদি জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চলছে। ভয়ংকর এই জাল দিয়ে শুধু মাছ শিকারই নয় ধংস করা হচ্ছে সকল প্রজাতির মাছের রনু। ফলে দিনে দিনে প্রকৃতিকভাবে তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেয়া হলে হারিয়ে যাবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে জানা যায়, বাউফলের তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিষিদ্ধ বহুদি ও বড় জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। একাধিক ডুবা চর এবং নদীর তীর ঘেঁষে কয়েক’শ মিটার দৈর্ঘের এক একটি বড় জাল জোয়ারের সময় পাতা হয়। ভাটার সময় পানি নেমে গেলে বড় জালে আটকা পড়ে ছোট বড় মাছের পাশাপাশি অসংখ্য মাছের রনু। অপরদিকে বহুদি জালকে স্থানীয় ভাষায় বাঁধা জাল বলা হয়। এই বাঁধা জাল পানির গভীরে আড়াআড়ি ভাবে পাতা হয়। বহুদি জালে আটকা পড়া মাছের সঙ্গে অংসখ্য রেনু মারা যায়। তেঁতুলিয়া নদীর চরব্যারেট, মমিনপুর, ধুলিয়া, নিমদি, চরওয়াডেল, বোরহানউদ্দিনের সাঁচড়া ও লালমাহনের নাজিরপুর পয়ন্টে এবং লোহালিয়া নদীর ঝিলনা ও বাহেরচর পয়ন্টে অংসখ্য বহুদি জাল দিয়া মাছ শিকার করা হচ্ছে। সরকারি নিয়মে ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটারের ফাঁসের জাল দিয়ে নদীতে মাছ শিকার করার নিয়ম। অথচ বড় জাল তরি করা হয় মশারী দিয়ে। অপরাদিকে বাঁধা জালের ফাঁস মশারীর ফাঁসের চেয়ে কিছুটা বড়। জেলেদের মধ্যে বড় ও বাঁধা জাল রাক্ষুস জাল হিসেবেও পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক শ্রণীর দাদন ব্যবসায়ী জেলেদের তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে নির্বিঘ্নে বড় ও বহুদি জাল দিয়ে মাছ শিকার করাছেন। ইতিমধ্যে একাধিক দাদন ব্যবসায়ী শূণ্য থেকে কোটিপতি হয়ে গেছেন। কালাইয়া লঞ্চঘাট এলাকার একাধিক দাদন ব্যবসায়ী শূণ্য থেকে এখন কোটিপতি।
সম্প্রতি বাউফলের চদ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরব্যারেট এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীর এপাড়-ওপাড় জুড়ে নিষিদ্ধ বাঁধা জাল (বহুদি) পেতে মাছ ধরার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন ৩ শতাধিক জেলে। বিক্ষোভ অংশ নেয়া জেলেরা জানান, ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাঁচড়া ইউনিয়নের শতাধিক জেলে তেঁতুলিয়া নদীর এপাড় ওপাড় জুড়ে প্রতিদিন নিষিদ্ধ বাঁধা জাল পেতে মাছ শিকার করছে। ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অসংখ্য রেনু ধংস হচ্ছে। অবিলম্বে ওই রাক্ষুস জালের ব্যবহার বন্ধ করার দাবী জানান জেলরা।
ইলিশ প্রজননের জন্যে ২২ দিন নিষধাজ্ঞার পর বর্তমান নদ-নদীতে ‘চাপিলা’ হিসেবে পরিচিত ইলিশের পোনায় সয়লাব হয়ে গেছে। প্রতিবছরই ইলিশের পোনা শিকার করার জন্য নিষিদ্ধ বাঁধা জাল ব্যবহার করে একটি অসাধু চক্র। এবারও তেঁতুলিয়া নদীতে বাঁধা জাল পাতা মাছ শিকারের মহাৎসবে মেতেছে চক্রটি।
এ প্রসঙ্গে বাউফল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, বাঁধা ও বড় জালের কারনে নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যহত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মৎস্য বিভাগ কম্বিং অপারশন পরিচালনা করে অবাধে জাল উদ্ধারের পর তা ধংস করেছে।
তিনি বলন, নদীতে অবাধে জালের ব্যবহার বন্ধর জন্য র‌্যাব ও কোষ্টগার্ডের অভিযান বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে অভিযান পরিচালনার জন্য সরকারকে আধুনিক ন্যজ ও চাহিদা মোতাবেক আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।###