আঁধারের অন্তরালে নক্ষত্রের আলো
শাহানাজ পারভীন
আমি তিমিরের মানুষ,
হিসাব -নিকাশ করে চলতে পারি না,
আমি বুঝিনা কোথায় চোরাবালি, কোথায় দুঃখের মাইন।
মাটির বুক চিরে কোথায় পেরেক পোতা,
কোথায় ভাঙা কাঁচের স্তূপ,
এসব কিছুই বুঝিনা,
ওই যে দেখছো আলোক সভ্যতা,
ওখানে ক্ষুদ্র প্রাণী গুলো বন্যহস্তির পদতলে পিষ্ট হয় প্রতিনিয়ত,
বন্যহস্তিগুলো তার আপন জননীকে গিলে খায় মদের পেয়ালায়।
আলোর ঝলকানিতে জ্বলজ্বল করে ওঠে ওদের কামুকতার চোখ।
ওরা জানে ,মাটি খুঁড়ে কোথায় সম্পদ লুকিয়ে রাখতে হয়
কখন অর্থপাচার করতে হয় ,
কিভাবে লুটে নিতে হয় শ্রমিকের ঘাম,
আমি বাপু তিমিরের মানুষ অতশত বুঝিনা!
আমি শুনতে পাই না নিশুতরাত্রে নদীর কান্না
আমি জানিনা কোন্ ফসল খরায় পুড়ে,
কোন্ মাঠ তৃষ্ণায় ফাটল ধরে
কিন্তু আমি জানি,
কারা শ্রম দেয় মাঠে।
কৃষকের ফসল কাদের গুদাম ঘরে বন্দি থাকে ,
কালো কালো বিষাদের মেঘেরা কোথায় উড়ে যায়,
আমি জানি ,দাঁড় কাক কেন তৃষ্ণার্ত আঁখি মিলে থাকে,
রাস্তায় মাটিকাটা ওই রূপসী রমণী কেন তার দগদগে শরীরটা ঘোমটার আড়ালে লুকায়
কেন শামুক লুকায় দুর্বাঘাসে,
বৃক্ষরাও জানে।
শুধু কি বৃক্ষ?
ফুল -পাখি ,প্রজাপতি , জোনাকিরাও জানে মুখোশের সভ্যতা কতটা অমৃত।
শুধু জানে না ওই বন্যহস্তিগুলো।
কি ভাবছো ? এটা ওদের অক্ষমতা?
আরে না,না।
ওই সবুজ ফসল জানে, আঁধারের অন্তরালে কোথায় লুকিয়ে থাকে নক্ষত্রের আলো।