ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুমকীতে খাল সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মসহ শত শতগাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ। বাকেরগঞ্জ বাসীর উন্নয়নমুলক সকল প্রত্যাশা পুরনে কাজ করব। ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ রাজীব আহমেদ তালুকদার। দেশ জুরে শুরু হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। মুরাদনগর উপজেলা মোট-১৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। টাঙ্গাইলে এইচআইভি ও এইডস রোগের সচেতনতা সৃষ্টিতে কর্মশালা অনুষ্ঠিত লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ বগুড়া শিবগঞ্জে নাতির রাম দা’র কোপে নানী খুন ফুটপাত উদ্ধার করতে হবে: মেয়র রেজাউল আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা”

জীবনের ঝুকি নিয়ে মেঘনা পারাপার : অর্ধশত বছরেও ফেরি সুবিধা পায়নি গজারিয়াবাসী

রাজুআহমেদ, গজারিয়া প্রতিনিধিঃ

মুন্সীগন্ঞ্জের গজারিয়ায় স্বাধীনতার ৫২ বছরেও ফেরি সার্ভিস চালু না হওয়ায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার দেড় লক্ষাধিক মানুষ চরম কষ্টে মেঘনা নদী পারাপার করছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা নদীবেষ্টিত গজারিয়া। জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র বাহন হচ্ছে ট্রলার। উত্তাল মেঘনা নদীর তীব্র ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজারো মানুষ মেঘনা নদী পার হচ্ছে বলে জানা যায়।
স্রোত সহনীয় ফেরি দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা ও নদীতে চলাচল করে থাকে। যেমন- দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, শিমুলিয়া, আরিচা, বাংলা বাজার, গোয়ালন্দ ঘাটে নিত্যদিন ফেরি চলাচল করলেও এ সুবিধা থেকে অর্ধশত বছর বঞ্চিত গজারিয়া উপজেলাবাসী। দেশের ছোট-বড় নদীতে সেতু নির্মিত হওয়ায় অনেক ফেরি পড়ে থাকলেও গজারিয়াবাসীর দুঃখ লাঘবে একটি ফেরিও ভাগ্য জুটে না বলেও হতাশা ব্যক্ত করেন নদীবেষ্টিত গজারিয়া উপজেলার একাধিক পেশাজীবী। তারা জানান, জেলা সদরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন জনপদ নদীবেষ্টিত গজারিয়া উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র বাহন হচ্ছে ট্রলার। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উপজেলার হাজারো মানুষ মেঘনা নদী পার হচ্ছে। নদী পারাপারে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় জেলার অপর ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়াবাসীর যোগাযোগে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সরজমিন মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নৌপথে গিয়ে দেখা যায়, জেলা সদরের উদ্দেশ্যে গজারিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত ট্রলার করে শত শত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছে। প্রায় সময় উত্তাল মেঘনা নদী পারাপারে ঢেউ বারবার যাত্রীবাহী ট্রলারে আচড়ে পড়ছে। যাত্রীরা পানির থেকে রক্ষা পেতে একদিকে জড়ো হওয়ার ফলে যাত্রীবাহী ট্রলারগুলো একদিকে হেলে পড়ছে। এতে যে কোনো মুহূর্তে ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই পথের যাত্রী আবুল হোসেন বলেন, মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নৌপথে একমাত্র বাহন এই ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। গজারিয়াবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল ঢেউ উপেক্ষা করে তাদের নিত্যনৈমিত্তিক কর্ম সারতে মুন্সীগঞ্জে আসেন। মুন্সীগঞ্জ শহরে তাদের উৎপাদিত শাকসবজি ও পণ্যদ্রব্য বিক্রি করেন। এছাড়া গজারিয়া উপজেলার সব আইনি ও অফিসিয়াল কার্যক্রম মুন্সীগঞ্জ শহরে। এসব জরুরি প্রয়োজনে ওই উপজেলাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন মেঘনা নদী।
মোবারক হোসনে নামে অপর যাত্রী বলেন, জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে জেলা শহরের পূর্বাঞ্চলের গজারিয়াকে মেঘনা নদী বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলাধীন চর কিশোরগঞ্জ এলাকার বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গজারিয়ায় প্রবেশের জন্য ট্রলার বা ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাত্রী পারাপার করে থাকে।
বর্ষা এলে মেঘনা উত্তাল হয়ে পড়ে। সঙ্গে দেখা দেয় ঝড়ো হাওয়া। এতে নৌপথের যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। এ নদীতে ফেরি সেবা চালু হলে জেলার ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়াবাসীর সড়কপথে অতিসহজেই গাড়িযোগে আসা-যাওয়া সম্ভব হবে। মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি সহজে লাঘব হয়ে যেতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করেন। ২০১৮ সালে ৩ জুন নদী পারাপারে স্বর্ণচাপা ও সন্ধ্যামালতী নামে দুটি মিনি ইউটিলিটি ফেরি চালু হলেও কয়েকদিন পর তা অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যায়। আবার পূর্বের মতো পারাপারে চরম ঝুঁকিতে গজারিয়াবাসী।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

দুমকীতে খাল সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মসহ শত শতগাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ।

জীবনের ঝুকি নিয়ে মেঘনা পারাপার : অর্ধশত বছরেও ফেরি সুবিধা পায়নি গজারিয়াবাসী

আপডেট টাইম ০৪:৫৩:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২

রাজুআহমেদ, গজারিয়া প্রতিনিধিঃ

মুন্সীগন্ঞ্জের গজারিয়ায় স্বাধীনতার ৫২ বছরেও ফেরি সার্ভিস চালু না হওয়ায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার দেড় লক্ষাধিক মানুষ চরম কষ্টে মেঘনা নদী পারাপার করছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা নদীবেষ্টিত গজারিয়া। জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র বাহন হচ্ছে ট্রলার। উত্তাল মেঘনা নদীর তীব্র ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজারো মানুষ মেঘনা নদী পার হচ্ছে বলে জানা যায়।
স্রোত সহনীয় ফেরি দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা ও নদীতে চলাচল করে থাকে। যেমন- দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, শিমুলিয়া, আরিচা, বাংলা বাজার, গোয়ালন্দ ঘাটে নিত্যদিন ফেরি চলাচল করলেও এ সুবিধা থেকে অর্ধশত বছর বঞ্চিত গজারিয়া উপজেলাবাসী। দেশের ছোট-বড় নদীতে সেতু নির্মিত হওয়ায় অনেক ফেরি পড়ে থাকলেও গজারিয়াবাসীর দুঃখ লাঘবে একটি ফেরিও ভাগ্য জুটে না বলেও হতাশা ব্যক্ত করেন নদীবেষ্টিত গজারিয়া উপজেলার একাধিক পেশাজীবী। তারা জানান, জেলা সদরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন জনপদ নদীবেষ্টিত গজারিয়া উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র বাহন হচ্ছে ট্রলার। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উপজেলার হাজারো মানুষ মেঘনা নদী পার হচ্ছে। নদী পারাপারে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় জেলার অপর ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়াবাসীর যোগাযোগে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সরজমিন মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নৌপথে গিয়ে দেখা যায়, জেলা সদরের উদ্দেশ্যে গজারিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত ট্রলার করে শত শত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছে। প্রায় সময় উত্তাল মেঘনা নদী পারাপারে ঢেউ বারবার যাত্রীবাহী ট্রলারে আচড়ে পড়ছে। যাত্রীরা পানির থেকে রক্ষা পেতে একদিকে জড়ো হওয়ার ফলে যাত্রীবাহী ট্রলারগুলো একদিকে হেলে পড়ছে। এতে যে কোনো মুহূর্তে ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই পথের যাত্রী আবুল হোসেন বলেন, মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নৌপথে একমাত্র বাহন এই ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। গজারিয়াবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল ঢেউ উপেক্ষা করে তাদের নিত্যনৈমিত্তিক কর্ম সারতে মুন্সীগঞ্জে আসেন। মুন্সীগঞ্জ শহরে তাদের উৎপাদিত শাকসবজি ও পণ্যদ্রব্য বিক্রি করেন। এছাড়া গজারিয়া উপজেলার সব আইনি ও অফিসিয়াল কার্যক্রম মুন্সীগঞ্জ শহরে। এসব জরুরি প্রয়োজনে ওই উপজেলাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন মেঘনা নদী।
মোবারক হোসনে নামে অপর যাত্রী বলেন, জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে জেলা শহরের পূর্বাঞ্চলের গজারিয়াকে মেঘনা নদী বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলাধীন চর কিশোরগঞ্জ এলাকার বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গজারিয়ায় প্রবেশের জন্য ট্রলার বা ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাত্রী পারাপার করে থাকে।
বর্ষা এলে মেঘনা উত্তাল হয়ে পড়ে। সঙ্গে দেখা দেয় ঝড়ো হাওয়া। এতে নৌপথের যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। এ নদীতে ফেরি সেবা চালু হলে জেলার ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়াবাসীর সড়কপথে অতিসহজেই গাড়িযোগে আসা-যাওয়া সম্ভব হবে। মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি সহজে লাঘব হয়ে যেতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করেন। ২০১৮ সালে ৩ জুন নদী পারাপারে স্বর্ণচাপা ও সন্ধ্যামালতী নামে দুটি মিনি ইউটিলিটি ফেরি চালু হলেও কয়েকদিন পর তা অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যায়। আবার পূর্বের মতো পারাপারে চরম ঝুঁকিতে গজারিয়াবাসী।