তানজিন আহমেদ সাদ কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি,
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে ড্রেন নির্মানের কাজ যেন ক্রেতা বিক্রেতা গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ি ও ক্রেতা বিক্রেতাদের মাঝে ক্ষোভ এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলতি বছরের ৬ এপ্রিল এ বাজারে ড্রেন নির্মান কাজ আরম্ভ করলেও মাটি খুঁরাখুরির পর ৩ মাস পার হলেও কাজের অগ্রগতি দেখাতে পারে নি এ কাজের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি কতর্ৃপক্ষ। অন্যদিকে এ বাজারের বণিক সমিতির আহব্বায়ক চন্দন বনিক নিজেই ড্রেন নিমার্নের ঠিকাদার হওয়ায় কাজের গুনগত মান নিয়েও সন্দিহান রয়েছে ব্যাবসায়ীদের মাঝে। উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৬ এপ্রিল এ বাজারে ৩৬লাখ ৪৬হাজার ৬০৫টাকা ব্যয়ে ২১৮মিটার ড্রেন নির্মানের কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস নাজমুল হাছান এন্টার প্রাইজ। পরে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজটি নিয়ে নেয় এ বাজার বনিক সমিতির আহব্বায়ক চন্দন বনিক। ড্রেন নির্মান কাজের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও তা আবার সময় বাড়িয়ে ২ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় বারের মতো নির্ধারিত সময় পর হলেও কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, এ উপজেলাসহ আশপাশের ৬টি উপজেলার ব্যবসায়িক প্রানকেন্দ কোম্পানীগঞ্জ বাজার। বৃহত্তম এই পাইকারি বাজার থেকে মালামাল ক্রয় করে পাইকাররা নিয়ে যায় এ উপজেলার আশপাশের ৬টি উপজেলায়। তাছাড়া সাপ্তাহিক রোবার ও বৃহস্পতিবার থাকে এ বাজাওে নির্ধারিত হাট তখন এ বাজাওে ক্রেতা সমাগম বেড়ে যায় দশগুন বেশি। তাছাড়া সপ্তাহের সব দিনই থাকে ক্রেতা ও পাইকারদেও বিপুল সমাগম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মুরাদনগর-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক থেকে গোমতি নদী বেরীবাধ পর্যন্ত ড্রেন নিমার্ণের কাজ শুরু হয়। কাজ করতে গিয়ে বাজারের দুপাশের গলির মাঝ বরাবর মাটি খুঁড়ে রাস্তার মাঝখানে রাখা হয়। এত করে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদেরে ভিড় ও ভোগান্তী ছিল নিত্যসঙ্গী। বাজারের সড়ক খোরাখুঁড়ি করে রাখায় সবাইকে ঝুঁকি নিয়ে ড্রেনের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ বাজারের গলি দিয়ে রিকশাসহ কোনো যান চলাচল করতে পারছে না। মো: ফারুক নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এ বাজারে রোজার ঈদের আগে ড্রেন নির্মাণ কাজ আরম্ভ কওে কতর্ৃপক্ষ। যার কারনে দুই ঈদেও কাঙ্খিত ক্রেতা মেলে নি আমাদের। ৩মাস পার হলেও এই মূর্হতে ও ধীরগতিতে কাজ চলায় ভোগান্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় ক্রেতা বিক্রেতারা বলেন, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, নবীনগর, বুড়িচংসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ বাজার সবচেয়ে বড়। এ বাজারে প্রশাসন সহ কতর্ৃপক্ষের সুদৃষ্টি দেওয়া দরকার। ব্যবসায়ী মো: সেলিম বলেন, এমনিতেই লকডাউনে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারপর এখন আবার ড্রেন নির্মাণের ধীরগতির কারণে এ এলাকায় প্রতিনিয়ত লেগে থাকছে যানজট। যে কারণে বাজারে আগত সকল ক্রেতা-বিক্রেতা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত যেন এ কাজটি সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির আহ্বায়ক চন্দন বণিক ড্রেন নিমার্ন কাজ নিজে করার কথা স্বীকার করে বলেন, বৃষ্টির কারনে কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জ বাজারের নানা সমস্যার কারনে এ কাজের যে মুল কন্ট্রাক্টর সে পালিয়ে গেছে। এ কারনে বাজারের উন্নয়নের কথা ভেবে আমাকে কাজটি করতে হচ্ছে। রাতের বেলায় কাজ করার কারনে কাজটি দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাজমুল হাছান সত্ত্বাধিকারী নাজমুল হাছান বলেন, কাজটি আমি বনিক সমিতির আহব্বায়ক চন্দন বনিককে
দিয়ে দিয়েছি। চলতি মাসে কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে আমরা আবার নতুন করে সময় বাড়িয়েছি। বর্তমানে কাজ চলমান রয়েছে। মুরাদনগর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ব্যবসায়ীরা কাজের সময় তাদের ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য ড্রেন নির্মানে বিলম্ব হচ্ছে। ড্রেনের নিচের বেইস ডালাইয়ের কাজটি শেষ করা হলেই দ্রুত ড্রেন নির্মান কাজ শেষ হবে
তানজিন আহমেদ সাদ
কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
মোবাইল :০১৬২৮৬০৫০৩৭
তারিখ ২৫-০৮-২২ ইং