ঢাকা ০৪:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা। গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় খাদে প্রাইভেটকার, নিহত ৩ সিলেটে আগাম বন্যার আশঙ্কায়!! হাওরজুড়ে কৃষকের ব্যস্ততা শিশুদের মনোবিকাশে প্রয়োজন সংস্কৃতি চর্চা: মেয়র রেজাউল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার, প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই রোগী দেখে সবার মন জয় করেলেন ডাক্তার মোঃ হুমায়ুন রশিদ শাকিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বগুড়া জেলা আরজেএফ’র সুপেয় পানি স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ দুমকীতে খাল সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মসহ শত শতগাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ। বাকেরগঞ্জ বাসীর উন্নয়নমুলক সকল প্রত্যাশা পুরনে কাজ করব। ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ রাজীব আহমেদ তালুকদার।

ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরন হলে দুরত্ব কমবেশি ৮৬ কি: মি:

রিপন বিশ্বাস (নড়াইল জেলা ক্রাইম রিপোর্টার)

স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানী থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে সড়ক পথে কলকাতা যাওয়ার পথ অনেকটা সহজ হয়েছে । তবে ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত না হওয়ায় খুলনা ঘুরে ৮৬ কিলোমিটার পথ বেশি পাড়ি দিয়ে রাজধানী থেকে বেনাপোল বন্দর হয়ে কলকাতা যেতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে । এতে সময় ও অর্থ দুটিই ব্যয় হচ্ছে ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন , মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৮৬ কিলোমিটার ।
সড়ক ও জনপথ ( সওজ ) অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে , ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল ১৩০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য ১১ হাজার কোটি টাকার | প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে । তবে অর্থায়নের অভাবে এ প্রকল্প কবে নাগাদ শুরু হবে তা দায়িত্বশীল কেউ জানাতে পারেননি । ভারত সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের এক কর্মকর্তা বলেন , ভারত সরকার এ প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে । আমরা চেয়েছি , ১ হাজার মিলিয়ন । অর্থের বিষয়টি নিশ্চিত হলে দ্রুত এ কাজ শুরু হবে ।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোলের দূরত্ব ( ভায়া নড়াইল ) মাত্র ২০০ কিলোমিটার । যার মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৩০ কিলোমিটার । ব্যস্ততম এ সড়কের | প্রশস্ত মাত্র ১৮-২৪ ফুট । এ সড়ক দিয়ে ঢাকা বিভাগের ফরিদপুরের একাংশ , গোপালগঞ্জ এবং খুলনা বিভাগের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ মোট ১১ জেলার যানবাহন চলাচল করে ।
পরিবহন চালক টিপু সুলতান জানান , বেনাপোল থেকে খুলনা হয়ে ঢাকার দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার । ভাঙ্গা যশোর – বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতি করলে তখন এ সড়ক দিয়ে বেনাপোল থেকে ঢাকার দূরত্ব হবে মাত্র ২০০ কিলোমিটার । সড়কটি ব্যবহার করতে পারলে ৮৬ কিলোমিটার পথ কমে যাবে ।
আরেক চালক রিপন মোল্লা বলেন , বর্তমানে ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত পুরনো এ সড়ক মাত্র ১৮-২৪ ফুট প্রশস্ত । এ সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি ১০-১৪ ফুট প্রশস্ত সেতু রয়েছে । ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেতু দিয়ে পাঁচ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল সরকারিভাবেই নিষেধ । এত পুরনো ও কম প্রশস্ত সড়কে দুর্ঘটনা বাড়তে পারে – সে আশঙ্কায় তারা সড়কটি ব্যবহার না করে খুলনা ঘুরে বেনাপোল থেকে ঢাকা যাতায়াত করেন ।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায় , ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার ভাঙ্গা – যশোর বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণে মোট ১১ হাজার কোটি টাকার ডিপিপি প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে । মহাসড়কের নকশার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই । এর মধ্যে পাঁচটি ফ্লাইওভার রয়েছে এবং নড়াইল ও যশোর অংশে রয়েছে দুটি বাইপাস । সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে , এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে বেনাপোল – ঢাকার দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার কমবে । তখন রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের দূরত্ব হবে ২০০ কিলোমিটার এবং ভারতের কলকাতার দূরত্ব হবে মাত্র ২৮৪ কিলোমিটার । সড়কটি ব্যবহার করতে পারলে পরিবহনযোগে রাজধানী থেকে ৩ – সাড়ে ৩ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যাবে । বেনাপোল আর কলকাতা যেতে সময় লাগতে পারে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টা । একইভাবে ঢাকার সঙ্গে যশোরের শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়া এবং মোংলা বন্দর , সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলার দূরত্বও কমে যাবে।

সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো . আশরাফুজ্জামান বলেন , পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ভাঙ্গা – যশোর বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে । প্রকল্পের কাজ চলমান । বিষয়টি সরকার অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে । পদ্মা সেতু চালু | হওয়ার পর থেকেই ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল সড়কে গাড়ির চাপ অনেক বেড়ে গেছে । যানবাহনের আপাতত চাপ সামলাতে কালনা থেকে যশোর পর্যন্ত বর্তমান সড়কটি আরো ছয় ফুট প্রশস্ত করা হবে । দেড় বছরের মধ্যে এ সড়কের কাজ শেষ হবে । ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হলে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে । চার লেনের মহাসড়কটি নির্মাণ হলে বেনাপোলের গাড়িগুলোর চালকদের খুলনা ঘুরে যেতে হবে না । বেনাপোলের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব অনেক কমে যাবে । তখন পদ্মা সেতুর পুরোপুরি সুফল পাবে এলাকাবাসী ।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা।

ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরন হলে দুরত্ব কমবেশি ৮৬ কি: মি:

আপডেট টাইম ০৩:৫৬:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২

রিপন বিশ্বাস (নড়াইল জেলা ক্রাইম রিপোর্টার)

স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর রাজধানী থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে সড়ক পথে কলকাতা যাওয়ার পথ অনেকটা সহজ হয়েছে । তবে ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত না হওয়ায় খুলনা ঘুরে ৮৬ কিলোমিটার পথ বেশি পাড়ি দিয়ে রাজধানী থেকে বেনাপোল বন্দর হয়ে কলকাতা যেতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে । এতে সময় ও অর্থ দুটিই ব্যয় হচ্ছে ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন , মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৮৬ কিলোমিটার ।
সড়ক ও জনপথ ( সওজ ) অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে , ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল ১৩০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য ১১ হাজার কোটি টাকার | প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে । তবে অর্থায়নের অভাবে এ প্রকল্প কবে নাগাদ শুরু হবে তা দায়িত্বশীল কেউ জানাতে পারেননি । ভারত সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের এক কর্মকর্তা বলেন , ভারত সরকার এ প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে । আমরা চেয়েছি , ১ হাজার মিলিয়ন । অর্থের বিষয়টি নিশ্চিত হলে দ্রুত এ কাজ শুরু হবে ।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোলের দূরত্ব ( ভায়া নড়াইল ) মাত্র ২০০ কিলোমিটার । যার মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৩০ কিলোমিটার । ব্যস্ততম এ সড়কের | প্রশস্ত মাত্র ১৮-২৪ ফুট । এ সড়ক দিয়ে ঢাকা বিভাগের ফরিদপুরের একাংশ , গোপালগঞ্জ এবং খুলনা বিভাগের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ মোট ১১ জেলার যানবাহন চলাচল করে ।
পরিবহন চালক টিপু সুলতান জানান , বেনাপোল থেকে খুলনা হয়ে ঢাকার দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার । ভাঙ্গা যশোর – বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতি করলে তখন এ সড়ক দিয়ে বেনাপোল থেকে ঢাকার দূরত্ব হবে মাত্র ২০০ কিলোমিটার । সড়কটি ব্যবহার করতে পারলে ৮৬ কিলোমিটার পথ কমে যাবে ।
আরেক চালক রিপন মোল্লা বলেন , বর্তমানে ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত পুরনো এ সড়ক মাত্র ১৮-২৪ ফুট প্রশস্ত । এ সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি ১০-১৪ ফুট প্রশস্ত সেতু রয়েছে । ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেতু দিয়ে পাঁচ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল সরকারিভাবেই নিষেধ । এত পুরনো ও কম প্রশস্ত সড়কে দুর্ঘটনা বাড়তে পারে – সে আশঙ্কায় তারা সড়কটি ব্যবহার না করে খুলনা ঘুরে বেনাপোল থেকে ঢাকা যাতায়াত করেন ।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায় , ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার ভাঙ্গা – যশোর বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণে মোট ১১ হাজার কোটি টাকার ডিপিপি প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে । মহাসড়কের নকশার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই । এর মধ্যে পাঁচটি ফ্লাইওভার রয়েছে এবং নড়াইল ও যশোর অংশে রয়েছে দুটি বাইপাস । সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে , এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে বেনাপোল – ঢাকার দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার কমবে । তখন রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের দূরত্ব হবে ২০০ কিলোমিটার এবং ভারতের কলকাতার দূরত্ব হবে মাত্র ২৮৪ কিলোমিটার । সড়কটি ব্যবহার করতে পারলে পরিবহনযোগে রাজধানী থেকে ৩ – সাড়ে ৩ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যাবে । বেনাপোল আর কলকাতা যেতে সময় লাগতে পারে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টা । একইভাবে ঢাকার সঙ্গে যশোরের শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়া এবং মোংলা বন্দর , সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলার দূরত্বও কমে যাবে।

সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো . আশরাফুজ্জামান বলেন , পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ভাঙ্গা – যশোর বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে । প্রকল্পের কাজ চলমান । বিষয়টি সরকার অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে । পদ্মা সেতু চালু | হওয়ার পর থেকেই ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল সড়কে গাড়ির চাপ অনেক বেড়ে গেছে । যানবাহনের আপাতত চাপ সামলাতে কালনা থেকে যশোর পর্যন্ত বর্তমান সড়কটি আরো ছয় ফুট প্রশস্ত করা হবে । দেড় বছরের মধ্যে এ সড়কের কাজ শেষ হবে । ভাঙ্গা – যশোর – বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হলে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে । চার লেনের মহাসড়কটি নির্মাণ হলে বেনাপোলের গাড়িগুলোর চালকদের খুলনা ঘুরে যেতে হবে না । বেনাপোলের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব অনেক কমে যাবে । তখন পদ্মা সেতুর পুরোপুরি সুফল পাবে এলাকাবাসী ।