আমজাদ হোসেন, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি
———————————————————জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫নং পার্বতীনগর ইউনিয়নের মাছিমনগর গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলামের ছেলে সাংবাদিক শাহ মনির পলাশ (২৫),কে পিটিয়ে হত্যা করেন তারই দুই জেঠাতো ভাই একই গ্রামের ফকির বাড়ির আক্তারুজ্জামানের ছেলে আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদ । এ হত্যা মামলায় ২ আসামীকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত । গত- (২৬ জুলাই) মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়েরা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন । বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এডভোকেট জসিম উদ্দিন । মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে পলাশদের বাগানের গাছ কেটে নেওয়ার চেষ্টা করে তার দুই জেঠাতো ভাই আবু ইউছুফ ও আবু ছায়েদ । এ সময় তার বাবা মনিরুল ইসলাম অভিযুক্তদের বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন । এ সময় তরুণ সাংবাদিক শাহ মনির পলাশের বাবাকে ইট নিক্ষেপ করে তার জেঠাতো ভাইয়েরা । একপর্যায়ে তিনি ইটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন । এ ঘটনা দেখেই দৌঁড়ে গিয়ে বাবাকে মাটি থেকে তুলছিল সাংবাদিক পলাশ । এ সময় হঠাৎ পেছন থেকে লাঠি দিয়ে সাংবাদিক পলাশের মাথায় আঘাত করেন জেঠাতো ভাই । লাঠির আগাতে গুরুতর আহত হয় সাংবাদিক পলাশ । এ সময় তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় প্রেরণ করেন । ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি রক্ত বমি করলে তাকে নোয়াখালী হাসপাতালে নেওয়া হয় । সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে তার মৃত্যু হয় । ওইদিন সন্ধ্যায় নিহত পলাশের বাবা মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় আবু ইউসুফ, আবু ছায়েদ ও ফয়জুন্নেছাকে আসামি করে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন । ওই মামলায় আবু ইউসুফ কারাগারে থাকলেও অপর আসামি আবু ছায়েদ জামিনে ছিলেন । একই বছরের ৭ অক্টোবর সদর থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদ,কে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন । মামলার ৩য় আসামি ফয়জুন্নেছার বিরুদ্ধে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় এ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন ।আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবং, ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে এ রায় দেন । কিন্তু, আদালত রায় দেওয়ার পর সাংবাদিক পলাশের বাবা বাদী মনিরুল ইসলাম সন্তুষ্ট নয় বলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানিয়েছেন ।সাংবাদিক পলাশ পড়ালেখার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় পেশায় জড়িয়ে পড়েন । তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক রূপবাণী পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন । সে সময় তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের বিএ (ডিগ্রি) কোর্সের ফলাফল প্রার্থী ছিলেন ।