ভাস্কর মজুমদারের (নিজস্ব প্রতিবেদক); লক্ষ্মীপুরের রায়পুর- পানপাড়া ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার ৪ মাসের মাথায় উঠে আসছে পিচ। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়কটি নির্মাণ করায় এমনটি হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সড়কটি নির্মাণে সরকারের ৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। বিষয়টিতে এলাকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করায় কাজ শেষ হওয়ার চার মাসের মাথায় সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) উঠে গেছে। পাথর, বিটুমিনসহ চলমান সংস্কারকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে যান চলাচল শুরু হওয়ায় এ কার্পেটিং অনেক জায়গায় উঠে গেছে।
সড়ক তৈরির নিয়ম অনুসারে কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করে প্রাইম কোট দিয়ে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হওয়ার কথা। অভিযোগ উঠেছে, তা না করে ঠিকাদাররা গাছের পাতা ও ময়লার উপরই চালিয়েছিলেন কার্পেটিংয়ের কাজ। সড়কের তিন কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নমানের বিটুমিন, বালি, পাথরের মিশ্রণে কাজ করায় যানবাহন চলাচলের সময় চাকার সঙ্গে অনেক জায়গার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে পল্লী সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্ট মেরামতকরণ জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্পের আওতায় খানাখন্দে ভরা ছয় কিলোমিটার সড়কের সংস্কার অনুমোদন হয়।
রায়পুর এলজিইডি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সড়কটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এলজিইডি মন্ত্রণালয় থেকে আরসিআইপি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স তমা এন্টারপ্রাইজ ও এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং দেড় বছর আগে কাজটি শুরু করেছিল। প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কে ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় শেষ সময়ে এসে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে কাজটি শেষ করেছে ঠিকাদারি দুই প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার আবু তাহের বলেন, ‘এটি লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর এলজিইডি প্রকৌশলীরা দেখভাল করেন। সড়কে কেন পিচ উঠে গেল, তা বলতে পারছি না। ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে না লিখে, পক্ষে লিখিয়েন।’
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ বলেন, গুরুত্বপুর্ণ সড়কটির সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সড়কের দুই পাশে মাটি বরাদ্দও এসেছে। ঠিকমতো কাজ না হলে ঠিকাদারের বিল দেয়া হবে না।