ঢাকা ১১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ বগুড়া শিবগঞ্জে নাতির রাম দা’র কোপে নানী খুন ফুটপাত উদ্ধার করতে হবে: মেয়র রেজাউল আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত। মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিড়ি শ্রমিকদের র‌্যালি ও সমাবেশ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড তীব্রতাপ প্রভায়ে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ

সিলেটে এবার বন্যায় তছনছ করে দিয়েছে মৎস্য খামার

আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: বিগত এক মাসের টানা বর্ষনে সিলেটে বন্যার ফলে তছনছ হয়ে গেছে মৎস্য খামার গুলো। অতিরিক্ত বন্যার পানির খামার গুলো তলিয়ে যাওয়ায় খামারিদের চাষ করা মাছগুলো পানির সাথে বেরিয়ে গেছে বলে জানান খামার ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় হাজারো মৎস্য খামারী এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন।
বিশেষ করে জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, বালাগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখা যায় শত-শত পুকুর বন্যার পানিতে ভাসছে। কোন কোন পুকুরের চিহৃন দেখা যাচ্ছে। আর বেশীরভাগ পুকুর বিশাল জলারাশির নিচে ঢাকা। খামারীরা শেষ চেষ্টা হিসেবে জাল ও নেট দিয়ে মাছগুলো আগলের রাখার শেষ চেষ্টা করলেও পানির তোড়ের কাছে তারা হার মানেন।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৭৪৯টি পুকুর, দিঘী, হ্যাচারি ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে ২ কোটি ১৩ লাখ মাছের পোনা এবং ২ হাজার ৩০৫ টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। মাছ ভেসে যাওয়া ছাড়াও হয়েছে অবকাঠামোগত ক্ষতি। এর ফলে সিলেট জেলার ১৫ হাজার ১৬৩ জন খামার মালিকের ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জৈন্তাপুর এলাকার এক মাছ চাষি বলেন, ‘পুকুরে মাছ চাষের জন্য ঋণ নিয়েছি। বন্যার শুরুতে পুকুরের চারদিকে ঘের দিয়ে মাছ বাঁচানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। বন্যার তোড়ে সব মাছ ভেসে গেছে।
একই উপজেলার আরেক মাছ চাষী বলেন, নির্ঘম রাত কাটিয়েও রক্ষা করতে পারিনি স্বপ্নের খামারটি। চোখের সামনেই ভেসে গেছে মাছ।
বন্যায় জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় মাছের খামারের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি।
জকিগঞ্জে ৬ হাজার ৩৫০টি মাছের খামার তলিয়ে ৬ কোটি ২২ লাখ টাকা, গোয়াইনঘাটে ২ হাজার ৫৯২টি খামার তলিয়ে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, কানাইঘাটে ২ হাজার ৩৫০টি খামার তলিয়ে ৬৪ লাখ টাকা, বিশ্বনাথে ২ হাজার ১৫০টি খামার তলিয়ে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, জৈন্তাপুরে ২ হাজার ১০০টি খামার তলিয়ে ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ও বিয়ানীবাজারে ১ হাজার ৪০২টি খামার তলিয়ে ২ কাটি ১৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া সিলেট সদর উপজেলায় ৫৩৫টি মাছের খামার, গোলাপগঞ্জে ৮৪৫টি, বালাগঞ্জে ৭০টি, কোম্পানীগঞ্জে ১৪৫টি ও দক্ষিণ সুরমায় ২১০টি খামার তলিয়ে গেছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, জেলায় মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা অপূরণীয়। আর এ ক্ষতির পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
এদিকে, বন্যার পানিতে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর এলাকা মাছ চাষিদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবারের বন্যায় ১ হাজার ৩১০টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এসব পুকুরে ১৬৮ মেট্রিক টন মাছ ও ৫০ মেট্রিক টন পোনা ছিল। জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় ক্ষতি হয়েছে বেশি। ছাতকে ৭৫০টি ও দোয়ারাবাজারে ৪৩৫টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারির সংখ্যা ১ হাজার ১৪৭।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ

সিলেটে এবার বন্যায় তছনছ করে দিয়েছে মৎস্য খামার

আপডেট টাইম ১০:২৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২

আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: বিগত এক মাসের টানা বর্ষনে সিলেটে বন্যার ফলে তছনছ হয়ে গেছে মৎস্য খামার গুলো। অতিরিক্ত বন্যার পানির খামার গুলো তলিয়ে যাওয়ায় খামারিদের চাষ করা মাছগুলো পানির সাথে বেরিয়ে গেছে বলে জানান খামার ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় হাজারো মৎস্য খামারী এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন।
বিশেষ করে জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, বালাগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখা যায় শত-শত পুকুর বন্যার পানিতে ভাসছে। কোন কোন পুকুরের চিহৃন দেখা যাচ্ছে। আর বেশীরভাগ পুকুর বিশাল জলারাশির নিচে ঢাকা। খামারীরা শেষ চেষ্টা হিসেবে জাল ও নেট দিয়ে মাছগুলো আগলের রাখার শেষ চেষ্টা করলেও পানির তোড়ের কাছে তারা হার মানেন।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৭৪৯টি পুকুর, দিঘী, হ্যাচারি ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে ২ কোটি ১৩ লাখ মাছের পোনা এবং ২ হাজার ৩০৫ টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। মাছ ভেসে যাওয়া ছাড়াও হয়েছে অবকাঠামোগত ক্ষতি। এর ফলে সিলেট জেলার ১৫ হাজার ১৬৩ জন খামার মালিকের ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জৈন্তাপুর এলাকার এক মাছ চাষি বলেন, ‘পুকুরে মাছ চাষের জন্য ঋণ নিয়েছি। বন্যার শুরুতে পুকুরের চারদিকে ঘের দিয়ে মাছ বাঁচানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। বন্যার তোড়ে সব মাছ ভেসে গেছে।
একই উপজেলার আরেক মাছ চাষী বলেন, নির্ঘম রাত কাটিয়েও রক্ষা করতে পারিনি স্বপ্নের খামারটি। চোখের সামনেই ভেসে গেছে মাছ।
বন্যায় জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় মাছের খামারের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি।
জকিগঞ্জে ৬ হাজার ৩৫০টি মাছের খামার তলিয়ে ৬ কোটি ২২ লাখ টাকা, গোয়াইনঘাটে ২ হাজার ৫৯২টি খামার তলিয়ে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, কানাইঘাটে ২ হাজার ৩৫০টি খামার তলিয়ে ৬৪ লাখ টাকা, বিশ্বনাথে ২ হাজার ১৫০টি খামার তলিয়ে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, জৈন্তাপুরে ২ হাজার ১০০টি খামার তলিয়ে ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ও বিয়ানীবাজারে ১ হাজার ৪০২টি খামার তলিয়ে ২ কাটি ১৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া সিলেট সদর উপজেলায় ৫৩৫টি মাছের খামার, গোলাপগঞ্জে ৮৪৫টি, বালাগঞ্জে ৭০টি, কোম্পানীগঞ্জে ১৪৫টি ও দক্ষিণ সুরমায় ২১০টি খামার তলিয়ে গেছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, জেলায় মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা অপূরণীয়। আর এ ক্ষতির পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
এদিকে, বন্যার পানিতে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর এলাকা মাছ চাষিদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবারের বন্যায় ১ হাজার ৩১০টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এসব পুকুরে ১৬৮ মেট্রিক টন মাছ ও ৫০ মেট্রিক টন পোনা ছিল। জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় ক্ষতি হয়েছে বেশি। ছাতকে ৭৫০টি ও দোয়ারাবাজারে ৪৩৫টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারির সংখ্যা ১ হাজার ১৪৭।