ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশ জুরে শুরু হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। মুরাদনগর উপজেলা মোট-১৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। টাঙ্গাইলে এইচআইভি ও এইডস রোগের সচেতনতা সৃষ্টিতে কর্মশালা অনুষ্ঠিত লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ বগুড়া শিবগঞ্জে নাতির রাম দা’র কোপে নানী খুন ফুটপাত উদ্ধার করতে হবে: মেয়র রেজাউল আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয় রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন প্রার্থী ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যানের (চার প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই জনের মধ্যে।) “কেরানীগঞ্জে এক হাজার পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করলেন সাংবাদিকরা” লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক দিঘলিয়ায় মে দিবস পালিত।

হবিগঞ্জে ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

হবিগঞ্জ জেলায় ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষক চলতি বোরো মৌসুমে ধানের দাম না পাওয়া হতাশ হবিগঞ্জের কৃষকরা। মাত্র সাড়ে ৬০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা মনে ধান কিনছেন পাইকাররা। কৃষকদের দাবি- এই দামে ধান বিক্রি করে তাদের খরচই ওঠছে না কৃষকরা জানান, ধান লাগানো থেকে শুরু করে সার-ওষুধ-কিটনাশক বা কাটা পর্যন্ত প্রতি কেরে (২৮ শতকে ১ কের) কৃষকের খরচ হয়েছে ১১/১২ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হয়েছে ১৫/১৭ মন। এখন তা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা মন। সেই হিসেবে প্রতি কেরে কৃষককে লোকসান গুণতে হচ্ছে ১হাজর থেকে ৩ হাজার টাকা সেই সাথে পরিবারের সকলের শ্রমতো আছেই ধানের দামের এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন হবিগঞ্জের চাষিরা।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর হবিগঞ্জে বোরা ধান চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। তবে, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬২ শতাংশ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। বাকি ধান চলতি মে মাসের বেতর ঘরে তুলতে পারবেন সাধারণ কৃষক এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এবার হবিগঞ্জে সরকারি ভাবে ১৬ হাজার ২০৬ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। যার প্রতিমন ১ হাজার ৮০ টাকা করে কিনবে সরকার তবে সরকারি ভাবে ধান ক্রয় উদ্বোধন করা হলেও এখনও পুরোদমে ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি আগামী।

কিছু দিনের বেতরে শুরু হবে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তবে বাড়তি ঝামেলার কারণে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ নেই সাধারণ কৃষকদের
তারা বলছেন, সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পুরোপুরি শুকিয়ে গোদামে নিয়ে আসতে। পরে তার যাচাই বাচাই শেষে ধান ভালো হলে তা ক্রয় করা হয় যদি ধানে কিছুটাও চিটা থাকে সে ধান আর ক্রয় করেন না খাদ্য নিয়নন্ত্রন অধিদপ্তর। এতে উল্টো কৃষকের যাতায়াত খরছ ও শ্রমিক খরছও নিজের ঘারে পরছে লাখাইয়ের বুল্লা গ্রামের কৃষক মো. শরিফ উদ্দিন বলেন, আমি প্রায় ২০ কের জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু ধানের দাম মাত্র ৬শ থেকে ৭শ টাকা। বর্তমানে একজন দিনমজুরের বেতন দিতে হয় প্রতি দিন ৫ থেকে ৬শ টাকা।

ধানের দাম আর আমাদের খরছের টাকা মিলে কোন ভাবেই আমাদের পুষিয়ে উটতে পারছি না। যদি ধানের দাম ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা মনে ধান বিক্রি করতে পারি তাহলে কিছুটা লাভ হবে তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করলেও লাভবান হতে পারবো না। কারণ সরকার ধান কিনবে ১ হাজার ৮০ টাকায় তাও আবার ধান গোদামে নিজ খরছে নিয়ে দিয়ে আসতে হয়। আর সরকার এই ধান বিভিন্ন পরিক্ষা করে ভালো হলে তার পর রাখে। ধানে অল্প চিটা থাকলে তা তারা রাখেন না। তাহলে সেই ধান আবার আমরা বাড়িতে ফিরত নিয়ে আসতে হয় যার ফলে গোদামে নিতে যে খরছ সেটাও নিজের ঘারেই পরে।

তিনি আরও বলেন আমরা পাইকারের কাছে ধান বিক্রি করি তাহলে পাইকাররা জমি থেকে মাড়াই দেয়ার পর যে ধান বের হয় সেটাই ক্রয় করে। সেখানে চিটা থাকলেও তা কোন সমস্য হয় না আমরা গ্রামের মধ্যে ধান শুকাই সেখানে কিছুটা চিটা থাকবেই। যে কারণে আমরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে রাজি হই না। এতে আমাদের অনেক পরিশ্রমও কম হয় খরছও কম হয়। ধানের দাম বৃদ্ধি করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি
পূর্ব বুল্লা গ্রামের কৃষক জাহির উদ্দিন বলেন, আমরা প্রায় ২০ কের জমিতে ধান চাষ করেছি এতে আমার প্রতি কেরে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খরছ হয়েছে। খরছের অনুপাতে আমার ভালো ফসল হয়নি অন্য বছর থেকে এবার প্রতি কেরে ৫/৭ মন ধান কম হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্রি ২৮ জাতের ধানওতো অনেক নষ্ট হয়েছে যা অকাল্পনিয়। এছাড়া এবার ধানের দামও কম। আমার যে ধান ফলন হয়েছে তা ৮শ টাকা মন এমনিতেই খরছ হয়েছে। আমি একটা হিসাব করে দেখেছি প্রতি কেরে প্রায় ৫ হাজার টাকা করে লোকশান হবে। এবার যদি ধানের দাম ১ হাজার টাকা থাকতো তাহলে কিছুটা লাভবান হতে পারতাম মিয়া ধন মিয়া নামের আরও এক কৃষক বলেন, আমি ১০ কের জমিতে ধান করেছি এবার ধানের ভালো ফলন হয়নি। অনেক ধান নষ্ঠ হয়েগেছে। যে জমিতে ধান হওয়ার কথা কের প্রতি ১৭ মন সেখানে হয়েছে ১০ মন। এর মধ্যে ধানের দামও কম আমি কিস্তি তুলে জমিতে ধান চাষ করেছিলাম এখন ঋণই কোথা থেকে পরিশোধ করবো আর নিজেই কি খাবো কিছু বুঝতে পারছি না।

কিরান দাস বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়নি ধানের মধ্যে ২/৩ জাতের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। একটি বিজ থেকে আর অন্যটি পোকায় নষ্ঠ করেছে তিনবার চারবার ঔষধ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। আর ধানের দামকম হওয়াতে আমার প্রতি কেরে ৫/৭ হাজার টাকা লোকশান গুনতে হবে, এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা চাই থোয়াই প্রু মার্মা বলেন, ইতোমধ্যে ধান সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে ঈদের ছুটির কারণে ধান সংগ্রহ করতে বিছুটা বিলম্ব হয়েছে এখন থেকে আবার পুরোদমে ধান সংগ্রহ শুরু হবে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশ জুরে শুরু হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। মুরাদনগর উপজেলা মোট-১৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।

হবিগঞ্জে ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।

আপডেট টাইম ০৮:২৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

হবিগঞ্জ জেলায় ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষক চলতি বোরো মৌসুমে ধানের দাম না পাওয়া হতাশ হবিগঞ্জের কৃষকরা। মাত্র সাড়ে ৬০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা মনে ধান কিনছেন পাইকাররা। কৃষকদের দাবি- এই দামে ধান বিক্রি করে তাদের খরচই ওঠছে না কৃষকরা জানান, ধান লাগানো থেকে শুরু করে সার-ওষুধ-কিটনাশক বা কাটা পর্যন্ত প্রতি কেরে (২৮ শতকে ১ কের) কৃষকের খরচ হয়েছে ১১/১২ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হয়েছে ১৫/১৭ মন। এখন তা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা মন। সেই হিসেবে প্রতি কেরে কৃষককে লোকসান গুণতে হচ্ছে ১হাজর থেকে ৩ হাজার টাকা সেই সাথে পরিবারের সকলের শ্রমতো আছেই ধানের দামের এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন হবিগঞ্জের চাষিরা।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর হবিগঞ্জে বোরা ধান চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। তবে, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬২ শতাংশ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। বাকি ধান চলতি মে মাসের বেতর ঘরে তুলতে পারবেন সাধারণ কৃষক এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এবার হবিগঞ্জে সরকারি ভাবে ১৬ হাজার ২০৬ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। যার প্রতিমন ১ হাজার ৮০ টাকা করে কিনবে সরকার তবে সরকারি ভাবে ধান ক্রয় উদ্বোধন করা হলেও এখনও পুরোদমে ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি আগামী।

কিছু দিনের বেতরে শুরু হবে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তবে বাড়তি ঝামেলার কারণে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ নেই সাধারণ কৃষকদের
তারা বলছেন, সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পুরোপুরি শুকিয়ে গোদামে নিয়ে আসতে। পরে তার যাচাই বাচাই শেষে ধান ভালো হলে তা ক্রয় করা হয় যদি ধানে কিছুটাও চিটা থাকে সে ধান আর ক্রয় করেন না খাদ্য নিয়নন্ত্রন অধিদপ্তর। এতে উল্টো কৃষকের যাতায়াত খরছ ও শ্রমিক খরছও নিজের ঘারে পরছে লাখাইয়ের বুল্লা গ্রামের কৃষক মো. শরিফ উদ্দিন বলেন, আমি প্রায় ২০ কের জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু ধানের দাম মাত্র ৬শ থেকে ৭শ টাকা। বর্তমানে একজন দিনমজুরের বেতন দিতে হয় প্রতি দিন ৫ থেকে ৬শ টাকা।

ধানের দাম আর আমাদের খরছের টাকা মিলে কোন ভাবেই আমাদের পুষিয়ে উটতে পারছি না। যদি ধানের দাম ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা মনে ধান বিক্রি করতে পারি তাহলে কিছুটা লাভ হবে তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করলেও লাভবান হতে পারবো না। কারণ সরকার ধান কিনবে ১ হাজার ৮০ টাকায় তাও আবার ধান গোদামে নিজ খরছে নিয়ে দিয়ে আসতে হয়। আর সরকার এই ধান বিভিন্ন পরিক্ষা করে ভালো হলে তার পর রাখে। ধানে অল্প চিটা থাকলে তা তারা রাখেন না। তাহলে সেই ধান আবার আমরা বাড়িতে ফিরত নিয়ে আসতে হয় যার ফলে গোদামে নিতে যে খরছ সেটাও নিজের ঘারেই পরে।

তিনি আরও বলেন আমরা পাইকারের কাছে ধান বিক্রি করি তাহলে পাইকাররা জমি থেকে মাড়াই দেয়ার পর যে ধান বের হয় সেটাই ক্রয় করে। সেখানে চিটা থাকলেও তা কোন সমস্য হয় না আমরা গ্রামের মধ্যে ধান শুকাই সেখানে কিছুটা চিটা থাকবেই। যে কারণে আমরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে রাজি হই না। এতে আমাদের অনেক পরিশ্রমও কম হয় খরছও কম হয়। ধানের দাম বৃদ্ধি করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি
পূর্ব বুল্লা গ্রামের কৃষক জাহির উদ্দিন বলেন, আমরা প্রায় ২০ কের জমিতে ধান চাষ করেছি এতে আমার প্রতি কেরে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খরছ হয়েছে। খরছের অনুপাতে আমার ভালো ফসল হয়নি অন্য বছর থেকে এবার প্রতি কেরে ৫/৭ মন ধান কম হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্রি ২৮ জাতের ধানওতো অনেক নষ্ট হয়েছে যা অকাল্পনিয়। এছাড়া এবার ধানের দামও কম। আমার যে ধান ফলন হয়েছে তা ৮শ টাকা মন এমনিতেই খরছ হয়েছে। আমি একটা হিসাব করে দেখেছি প্রতি কেরে প্রায় ৫ হাজার টাকা করে লোকশান হবে। এবার যদি ধানের দাম ১ হাজার টাকা থাকতো তাহলে কিছুটা লাভবান হতে পারতাম মিয়া ধন মিয়া নামের আরও এক কৃষক বলেন, আমি ১০ কের জমিতে ধান করেছি এবার ধানের ভালো ফলন হয়নি। অনেক ধান নষ্ঠ হয়েগেছে। যে জমিতে ধান হওয়ার কথা কের প্রতি ১৭ মন সেখানে হয়েছে ১০ মন। এর মধ্যে ধানের দামও কম আমি কিস্তি তুলে জমিতে ধান চাষ করেছিলাম এখন ঋণই কোথা থেকে পরিশোধ করবো আর নিজেই কি খাবো কিছু বুঝতে পারছি না।

কিরান দাস বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়নি ধানের মধ্যে ২/৩ জাতের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। একটি বিজ থেকে আর অন্যটি পোকায় নষ্ঠ করেছে তিনবার চারবার ঔষধ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। আর ধানের দামকম হওয়াতে আমার প্রতি কেরে ৫/৭ হাজার টাকা লোকশান গুনতে হবে, এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা চাই থোয়াই প্রু মার্মা বলেন, ইতোমধ্যে ধান সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে ঈদের ছুটির কারণে ধান সংগ্রহ করতে বিছুটা বিলম্ব হয়েছে এখন থেকে আবার পুরোদমে ধান সংগ্রহ শুরু হবে।