ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা। গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় খাদে প্রাইভেটকার, নিহত ৩ সিলেটে আগাম বন্যার আশঙ্কায়!! হাওরজুড়ে কৃষকের ব্যস্ততা শিশুদের মনোবিকাশে প্রয়োজন সংস্কৃতি চর্চা: মেয়র রেজাউল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার, প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই রোগী দেখে সবার মন জয় করেলেন ডাক্তার মোঃ হুমায়ুন রশিদ শাকিল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বগুড়া জেলা আরজেএফ’র সুপেয় পানি স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ দুমকীতে খাল সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মসহ শত শতগাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ। বাকেরগঞ্জ বাসীর উন্নয়নমুলক সকল প্রত্যাশা পুরনে কাজ করব। ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ রাজীব আহমেদ তালুকদার।

স্বাধীনতার ৫১ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি মাধবপুর বাসীর স্বপ্নের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর।

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

আজ ৪-এপ্রিল ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবস ১৯৭১ সালের এই দিনে তেলিয়াপাড়া চা বাগানে সেনা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ভারতীয় প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে সুসংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের সুচনা হয় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পেড়িয়ে গেলেও মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা বাগান ব্যবস্থা পকের বাংলোটিকে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর করার স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালীদের উপর নির্বিচারে বর্বরোচিত হামলা চালায় তখন বিক্ষিপ্তভাবে বাঙালীরা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে।

একপর্যায়ে প্রতিরোধ যোদ্ধারা একটি সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো বাংলোতে ২৭ জন সেনা কর্মকর্তা, স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও ভারতীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গঠন করা হয় জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর নেতৃত্বে একটি সুশৃঙ্খল মুক্তিবাহিনী। সারা দেশকে বিভক্ত করা হয় চারটি সেক্টরে। পরবর্তী ১০ ই এপ্রিল একই স্থানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় সেক্টরের সংখ্যা বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব সিদ্ধান্ত এসেছিল চা বাগানের এই বাংলো থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের নকশা প্রণয়ন এবং যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহন ও সম্মুখ সমরের পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক সরকার গঠনের উপরও গুরুত্বরোপ করা সহ মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত এখান থেকেই এসেছিল। তাই কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতার কোনো ইতিহাস লিখতে চাইলে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বাংলোটির কথা চলে আসে সর্বাগ্রে, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চারপাশে শুধুই সবুজের বেষ্টিত নির্জন এই স্থানকেই নিরাপদ মনে করেছিলেন স্বাধীনতাকামী ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দেশপ্রেমিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

৪ঠা এপ্রিলের ঐতিহাসিক সেই বৈঠকের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন তৎকালীণ কর্নেল এম এ রব, মেজর সি আর দত্ত, মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর কে এম সফিউল্লাহ, লে. কর্নেল সালাউদ্দীন মোহাম্মদ রেজা, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, মেজর নুরুল ইসলাম, মেজর শাফায়াত জামিল, মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরী, ক্যাপ্টেন নাসিম, লে. সৈয়দ ইব্রাহীম প্রমুখ। ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন ব্রিগেডিয়ার শুভ্রমানিয়ম, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পূর্বাঞ্চলীয় মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার ভি সি পান্ডে এবং আগরতলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওমেস সায়গল।

বৈঠক শেষে এমএজি ওসমানী নিজের পিস্তলের ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ওসমানী ও রবের নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধের নকশা প্রণয়ন এবং যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ করানো হয়। শপথবাক্য পাঠ করান এমএজি ওসমানী সেই সময় তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের বাংলোটিকে ৩ নম্বর সেক্টরের সদরদপ্তর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২১ জুনের পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণ শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তেলিয়াপাড়া চা-বাগান থেকে ওই কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মিশে আছে এই তেলিয়াপাড়া চা- বাগানের বাংলোয়।

হানাদার বাহিনীর সঙ্গে বেশ কিছু রক্তক্ষয়ী সম্মুকযুদ্ধেরও সাক্ষী বাংলোটি কিন্তু ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি আজও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপকদের বাংলো হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অবশ্য ২, ৩ ও ৪ নম্বর সেক্টরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বাংলোর পূর্ব-দক্ষিণ কোণে নির্মিত হয়েছে তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ। দক্ষিণ দিকে লাগানো ফলকটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত। সেখানে স্মৃতিফলকে রয়েছে রাজনৈতিক নেতা, সাবেক সেনা।

সরকারি কর্মকর্তা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা চা-বাগানের সবুজের বেষ্টনীতে স্মৃতিসৌধ ছাড়াও আছে একটি প্রাকৃতিক হৃদ। লাল–শাপলা ফোটা এই হৃদ বর্ষাকালে অপরূপ হয়ে ওঠে। স্মৃতিসৌধ থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই ঐতিহাসিক বাংলোটি স্থানীয় জনগন বহুকাল ধরেই মুক্তিযুদ্ধের জন্য তাৎপর্যময় বাংলোটিতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তৈরির দাবী করে আসছে, তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি আজো। ভবিষ্যতে কখনো বাস্তবায়ন হবে কিনা সে ব্যাপারেও রয়েছে ব্যাপক সন্দেহ।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ তফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর নাতি ও শহীদ বদরুল হোসেন চৌধুরীর ভাতিজা শিক্ষক নয়ন চৌধুরী বলেন, তেলিয়াপাড়া বাংলোটি আমাদের গর্বের বহু ত্যাগের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী। এটি এখনও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসেনি এখনও সেটি তেলিয়াপাড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপকের বাংলো হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলোটির নিয়ন্ত্রণ সরকারের কাছে নিয়ে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি বীর মুক্তিযুদ্ধা এনাম খান বলেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিরা এখানে এসে যাদুঘর হবে বলে আশ্বাস দিয়ে যায় কিন্তু এখনো কিছু হচ্ছে না।

স্মৃতিসৌধ এলাকায় অরক্ষিত থাকায় বাইরে থেকে লোকজন এসে এখানে মাদক সেবন করে, যা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দাবি এখানে যাদুঘর নির্মাণ করে মুক্তিযুদ্ধের এখানকার স্মৃতিগুলো সংরক্ষণ করা হোক। প্রতি বছর সরকারি ভাবে ৪ঠা এপ্রিল বৃহৎ পরিসরে যেন পালন করা হয়। তিনি আরও জানান পবিত্র রমজানের কারণে এবছর ৪ঠা এপ্রিলে কোন সভা সমাবেশ করা হবে না সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা।

স্বাধীনতার ৫১ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি মাধবপুর বাসীর স্বপ্নের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর।

আপডেট টাইম ০৮:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

আজ ৪-এপ্রিল ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবস ১৯৭১ সালের এই দিনে তেলিয়াপাড়া চা বাগানে সেনা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ভারতীয় প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে সুসংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের সুচনা হয় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পেড়িয়ে গেলেও মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা বাগান ব্যবস্থা পকের বাংলোটিকে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর করার স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালীদের উপর নির্বিচারে বর্বরোচিত হামলা চালায় তখন বিক্ষিপ্তভাবে বাঙালীরা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে।

একপর্যায়ে প্রতিরোধ যোদ্ধারা একটি সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো বাংলোতে ২৭ জন সেনা কর্মকর্তা, স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও ভারতীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গঠন করা হয় জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর নেতৃত্বে একটি সুশৃঙ্খল মুক্তিবাহিনী। সারা দেশকে বিভক্ত করা হয় চারটি সেক্টরে। পরবর্তী ১০ ই এপ্রিল একই স্থানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় সেক্টরের সংখ্যা বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব সিদ্ধান্ত এসেছিল চা বাগানের এই বাংলো থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের নকশা প্রণয়ন এবং যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহন ও সম্মুখ সমরের পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক সরকার গঠনের উপরও গুরুত্বরোপ করা সহ মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত এখান থেকেই এসেছিল। তাই কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতার কোনো ইতিহাস লিখতে চাইলে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বাংলোটির কথা চলে আসে সর্বাগ্রে, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চারপাশে শুধুই সবুজের বেষ্টিত নির্জন এই স্থানকেই নিরাপদ মনে করেছিলেন স্বাধীনতাকামী ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দেশপ্রেমিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

৪ঠা এপ্রিলের ঐতিহাসিক সেই বৈঠকের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন তৎকালীণ কর্নেল এম এ রব, মেজর সি আর দত্ত, মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর কে এম সফিউল্লাহ, লে. কর্নেল সালাউদ্দীন মোহাম্মদ রেজা, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর কাজী নুরুজ্জামান, মেজর নুরুল ইসলাম, মেজর শাফায়াত জামিল, মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরী, ক্যাপ্টেন নাসিম, লে. সৈয়দ ইব্রাহীম প্রমুখ। ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন ব্রিগেডিয়ার শুভ্রমানিয়ম, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পূর্বাঞ্চলীয় মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার ভি সি পান্ডে এবং আগরতলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওমেস সায়গল।

বৈঠক শেষে এমএজি ওসমানী নিজের পিস্তলের ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ওসমানী ও রবের নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধের নকশা প্রণয়ন এবং যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ করানো হয়। শপথবাক্য পাঠ করান এমএজি ওসমানী সেই সময় তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের বাংলোটিকে ৩ নম্বর সেক্টরের সদরদপ্তর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২১ জুনের পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণ শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তেলিয়াপাড়া চা-বাগান থেকে ওই কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মিশে আছে এই তেলিয়াপাড়া চা- বাগানের বাংলোয়।

হানাদার বাহিনীর সঙ্গে বেশ কিছু রক্তক্ষয়ী সম্মুকযুদ্ধেরও সাক্ষী বাংলোটি কিন্তু ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি আজও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপকদের বাংলো হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অবশ্য ২, ৩ ও ৪ নম্বর সেক্টরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বাংলোর পূর্ব-দক্ষিণ কোণে নির্মিত হয়েছে তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ। দক্ষিণ দিকে লাগানো ফলকটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত। সেখানে স্মৃতিফলকে রয়েছে রাজনৈতিক নেতা, সাবেক সেনা।

সরকারি কর্মকর্তা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা চা-বাগানের সবুজের বেষ্টনীতে স্মৃতিসৌধ ছাড়াও আছে একটি প্রাকৃতিক হৃদ। লাল–শাপলা ফোটা এই হৃদ বর্ষাকালে অপরূপ হয়ে ওঠে। স্মৃতিসৌধ থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই ঐতিহাসিক বাংলোটি স্থানীয় জনগন বহুকাল ধরেই মুক্তিযুদ্ধের জন্য তাৎপর্যময় বাংলোটিতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তৈরির দাবী করে আসছে, তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি আজো। ভবিষ্যতে কখনো বাস্তবায়ন হবে কিনা সে ব্যাপারেও রয়েছে ব্যাপক সন্দেহ।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ তফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর নাতি ও শহীদ বদরুল হোসেন চৌধুরীর ভাতিজা শিক্ষক নয়ন চৌধুরী বলেন, তেলিয়াপাড়া বাংলোটি আমাদের গর্বের বহু ত্যাগের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী। এটি এখনও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসেনি এখনও সেটি তেলিয়াপাড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপকের বাংলো হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলোটির নিয়ন্ত্রণ সরকারের কাছে নিয়ে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি বীর মুক্তিযুদ্ধা এনাম খান বলেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিরা এখানে এসে যাদুঘর হবে বলে আশ্বাস দিয়ে যায় কিন্তু এখনো কিছু হচ্ছে না।

স্মৃতিসৌধ এলাকায় অরক্ষিত থাকায় বাইরে থেকে লোকজন এসে এখানে মাদক সেবন করে, যা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দাবি এখানে যাদুঘর নির্মাণ করে মুক্তিযুদ্ধের এখানকার স্মৃতিগুলো সংরক্ষণ করা হোক। প্রতি বছর সরকারি ভাবে ৪ঠা এপ্রিল বৃহৎ পরিসরে যেন পালন করা হয়। তিনি আরও জানান পবিত্র রমজানের কারণে এবছর ৪ঠা এপ্রিলে কোন সভা সমাবেশ করা হবে না সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।