স্টাফ রিপোর্টার।

কুমিল্লায় পুলিশ কর্তব্যরত অবস্থায় পিকআপ ভর্তি ১৫ লাখ টাকা মুল্যের কাপড় ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের জেলার ব্রাহ্মনপাড়া থানাধীন মকিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ছিনতাই হওয়া পিকআপের চালক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ব্রাহ্মনপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার একদিন পর ছিনতাই হওয়া পিকআপ ভ্যানটি জেলার কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ গোমতী নদী থেকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু এ ঘটনার ৬দিন অতিবাহিত হলেও ছিনতাই হওয়া কাপড় এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে চালকের দেয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটকের পর রহস্য জনক কারণে তাদের ছেড়ে দিয়েছে ব্রাহ্মনপাড়া থানা পুলিশ। ছিনতাইয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থদের।

অভিযোগে জানা যায়, গত ১৫ মার্চ ঢাকার বঙ্গবাজারস্থ জাকিয়া রেজা গার্মেন্ট থেকে বেনারসি শাড়ী, থ্রি-পিছ, বুটিকস, জর্জেটসহ পিকআপ ভর্তি প্রায় ১৫ লাখ টাকা মুল্যের কাপড় কুমিল্লায় প্রেরণ করা হয়। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা এবং দাউদকান্দি এলাকায় যানজট থাকায় কাপড়বাহী পিকআপটি ব্রাহ্মনবাড়ীয়া হয়ে কুমিল্লা আসছিল। রাত প্রায় তিনটার দিকে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ব্রাহ্মনপাড়া থানাধীন মকিমপুর এলাকায় এসে পিকআপটি ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। একটি প্রাইভেটকার এবং একটি মাইক্রোবাস দিয়ে ব্যাড়িকেড সৃস্টি করে পিকআপটি ছিনিয়ে নেয়া হয়। এ সময় কিআপের চালক মিজানুর রহমানকে মারধর করে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যায় ছিনতাইকারীরা। ঘটনার সময় এর অদুরেই পুলিশ কর্তব্যরত ছিল। কিন্তু রহস্য জনক কারণে ছিনতাই হওয়া পিকআপটিকে তারা উদ্ধার করেনি বলে অভিযোগ সংশ্লিস্টদের। এদিকে কাপড় ভর্তি পিকআপটি ছিনতাই করে ব্রাহ্মনপাড়া থানার সামনে দিয়ে নিয়ে একই থানার বলদা বাজারের অদুরে কাপড় গুলো অন্য একটি পিকআপে তুলে নেয়। সে সময়ও ওই এলাকায় পুলিশ টহলরত ছিল। পরে ছিনতাই হওয়া পিকআপটি বুড়িচং থানার সামনে দিয়ে কোতয়ালী মডেল থানাধীন ছত্রখিল এলাকায় গোমতী নদীতে ফেলে দেয় ছিনতাইকারীরা। দুটি থানা এলাকায় অর্ধশতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা থাকলেও পুলিশ এসব ক্যামেরা থেকে ফুটেজ সংগ্রহ না করে ঘটনার ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছিনতাইকালে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারসহ নাইম এবং রাকিব নামে দুজনকে আটক করলেও পরে রহস্যজনক কারণে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আটককৃতরা বাদীকে ছিনতাই হওয়া পন্যের মুল্য পরিশোধের আশ্বাস দিলেও পুলিশ এটিকে এড়িয়ে গেছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন না করে উল্টো বাদীকে হুমকি ধমকি দেযা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ব্রাহ্মনপাড়া থানার ওসি অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে আমরা তদন্ত করেছি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দেবিদ্বার সার্কেল) আমিরুল্লাহ স্যারসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, কিন্তু ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় আটক দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বলেন, অভিযোগকারী চালক গড়মিল তথ্য দিচ্ছে তাই ঘটনাটি আমাদের কাছে সাজানো মনে হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)আব্দুর রহিম বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি ব্রাহ্মনপাড়া থানার ওসি আমাকে অবগত করেছে, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায়নি বলে আমাকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে আমরা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে ঘটনাটি তদন্ত করে এর রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করবো।

তারিখ :-২০-০৩-২২ ইং