লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হাজারও প্রতিবন্ধকতা নিয়েও স্বপ্ন ছোঁয়া যায় এ স্বপ্ন ছোঁতে চলেছেন সংগ্রামী নারী তানিয়া আক্তার। হাটি হাটি পা পা করে গড়ে তুলেছেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন আরও ৭টি পরিবারের। তাদেরও স্বপ্নের ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছেন সংগ্রামী এ নারী এদের নিয়েই যেন তার এক সংসার শুধু তাই নয়, কাজ করে চলেছেন অসহায় দরিদ্র নারীদের জন্য চালাচ্ছেন অনেকের লেখা পড়ার খরচও। আবার কারও সংসারে অশান্তি হলে তাও মিটিয়ে দিচ্ছেন অকপটে। মহিয়সী এ নারী আর্থিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে এ বছর জয়িতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
তিনি বর্তমানে হবিগঞ্জের শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা পিত্রালয় শায়েস্তাগঞ্জে পিতা খিজির মিয়া, ৭ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ৫ম নিজের সংগ্রামের কথা জানাতে গিয়ে চোখের কোনে জল জমে যায় তানিয়া আক্তারের। তিনি বলেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সে ২০০৭ সালে ৯ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় তাকে বিয়ে দেয়া হয় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বালিকান্দি গ্রামের জনৈক সৌদিআরব প্রবাসীর সাথে পিতার যেমন সহায় সম্পদের ঘাটতি নেই, তেমনি শ^শুরালয়ে আছে বিত্তবৈভব বিয়ের পর জানতে পারেন শ^শুর বিয়ে করেছেন ৪টি নিজের শাশুড়িও নেই।
সংসারে আছে সীমাহীন অশান্তি কিন্তু সবকিছু থেকেও যেন তার এখন কিছুই নেই বিয়ের কিছুদিনের মাথায়ই নানান অশান্তি ও হাজারও কষ্ট বুকে নিয়ে পৃথক হতে হয়। বুক ভরা কষ্ট চাপা থাকলেও তিনি সংসারে অশান্তি হতে পারে এমন আশংকায় তা চাপিয়ে যান বার বারই অনুরোধ করেন সেগুলো প্রকাশ্যে না আনার এমনকি স্বামীর নামও তিনি প্রকাশ করতে চান না এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী তিনি স্বামী এখনও সৌদি আরবেই আছেন শহরের শায়েস্তানগরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সন্তানদের নিয়ে থাকেন তিনি।
নিজে পড়ালেখা করেছেন উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাশ করে এখন পড়ছেন বিএ এর মাঝে ২০২১ সালে রাজশাহী শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ থেকে নার্সিং ডিপ্লোমাও করেন সংসার চালানো, সন্তানদের লালন পালন করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ইন্টার্ণ করা হয়নি পৃথক হওয়ার পর প্রথমেই শেখেন সেলাই ঘরে বসেই কাজ করতেন। পরে এ বিষয়ে সনদের জন্য ভর্তি হন মহিলা অধিপ্তরের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ২০১৭ সালে শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকায় লাকি টেইলার্স এবং সারা জান্নান নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন ক্রমান্বয়ে তা বড় হয়েছে।
এখন সেটি মিনি গার্মেন্টসে পরিণত হয়েছে নিজের তৈরী কাপড় বিক্রি করেন আবার বাইরের অর্ডার এলে তাও তৈরী করে দেন। উই ই কমার্স প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে অনলাইনেও বিক্রি করেন নিজের তৈরী কাপড়। করোনার সময়ও অনলাইনে বেশ ভাল ব্যবসা করেছেন তানিয়া আক্তার বলেন, সমাজের অবহেলিত নির্যাতিত নারীদের পাশে থাকতে চান তিনি। পড়াশোনা করাতে চান দরিদ্রদের বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে কাজ করে চলেছেন। নারীদের কল্যানে কাজ করতে হবিগঞ্জ নারী কল্যাণ সংগঠন নামে একটি সংগঠনও গড়ে তুলছেন বর্তমানে সেটি নিবন্ধনের অপেক্ষায় আছে।