নকুল চন্দ্র দে পাপ্পু, স্টাফ রিপোর্টার :
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মহারানী বিমলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত স্বর্ণকুন্ডশোভিত কারুকার্যমন্ডিত আনন্দময়ী জোড়া কালী ও শিবমন্দির আজ ধ্বংসের পথে । বিগত এক দশকে ঘটে যাওয়া কয়েক দফার ভূমিকম্পে পেছনের দিকে খানেকটা হেলে পড়েছে মন্দির দুটি । বড় বড় অংশ নিয়ে খসে পড়ছে মন্দিরের প্লাস্টার। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পূজা অর্চনা করছেন পূজারী ও ভক্তবৃন্দ ।মন্দিরে অর্ন্তভূক্তি হিন্দু উৎসব দুর্গা পূজা, শিব ও কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তাগাছা উপজেলা শহরের অভ্যন্তরের জমিদারবাড়ি সংলগ্ন কালীবাড়ি পুকুরপাড় নামক স্থানে জোড়া মন্দিরটি অবস্থিত।মন্দিরের সামনে রয়েছে পুকুর যা মন্দিরর সৌর্ন্দযরুপ প্রসারিত করেছে।
জানা যায়, ১৮২০ সালে মন্দির দু’টি স্থাপন করা হয়। একই মাপের মন্দির দুটির উচ্চতা প্রায় ১শ’ ফুট । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মন্দিরের মূল্যবান মালামাল লুন্ঠিত হয়ে যায় । ভাংচুর করা হয় বহু মূল্যবান পাথরের তৈরী বিগ্রহ । বর্তমানে জীর্ণ শীর্ণ যুগল মন্দির বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে । পেছনের দিকে হেলে পড়া মন্দির দু’টি থেকে খসে পড়ছে কারুকাজ ও খন্ড বিখন্ড অংশ । সংস্কারের অভাবে বর্ষাকালে ভেতরে পানি পড়ে । এতে পূজায় বিঘ্ন ঘটে ।
অভিযোগে প্রকাশ ,এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল মন্দিরের জমি-জমা ও পুকুর আত্মসাত করার পায়তারা চালাচ্ছে । জানা যায়, জমিদার রঘুনন্দনের স্ত্রী মহারানী বিমলা দেবী যুগল এই মন্দির ছাড়াও ১৮১২ সালে নিজ জমিদারির অন্তর্গত ময়মনসিংহের ত্রিশালের বালিপাড়া গ্রামে প্রজাদের জলকষ্ট নিবারনার্থে একটি বড় দীঘি এবং শ্বশুরের নামে রঘুনেশ্বর শিবমন্দির স্থাপন করেন ।
১৮২০ সালে মুক্তাগাছায় নিজ নামে বিমলেশ্বর শিবমন্দির স্থাপন করেন । এগুলোও আজ ধ্বংসের পথে । এলাকাবাসী জানান, উপরোক্ত স্থাপনা সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হলে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হবে ।
এই বিষয়ে মুক্তাগাছার সাংসদ এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেন, এই জোড়া মন্দিরটি মুক্তাগাছা তথা ময়মনসিংহ জেলার ঐতিহ্য। জোড়া মন্দিরটি শতবছরের পুরাতন হলেও এখন এর কাঠামোর দৃশ্য পর্যটকদেরকে আকৃষ্ট করে। সংস্কার কাজ হলে এর সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে । তাই খুব শীঘ্র জোড়া মন্দীরের সংস্কারের কাজ করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী ।