ঢাকা ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

নিয়ামতপুরে নামেই পরিচালিত হচ্ছে পশু হাসপাতাল, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত।

স্টাফ রিপোর্টার মোঃ রুহুল আমিন শেখ নওগাঁর নিয়ামতপুরে পশু চিকিৎসায় মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কার্যক্রম। সরকারের সকল সেবা জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে দেয়া হয়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। দীর্ঘ দিন থেকে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার ছোট-বড় খামারী। কেবল নাম দিয়ে চলছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতালের কার্যক্রম। সরকারি কার্যক্রমের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সঠিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রতি মাসে দেয়া হয় হাজার হাজার টাকার সরকারী ঔষধ। সরকার ঔষধ দিলেও সেবা প্রত্যাশীদের মাঝে বিতরণের আগ্রহ কম থাকায় এবং লোকবল কম থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গরু-ছাগল সহ বিভিন্ন প্রাণির চিকিৎসা নিতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে এসে পাচ্ছে না সঠিক সেবা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রানীসম্পদ দপ্তরে ১১টি পদ থাকলেও দীর্ঘ দিন থেকে নেই কোন ভেটেরিনারি সার্জন। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে পশু চিকিৎসা বলে মন্তব্য করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
নওগাঁর সর্ব বৃহৎ উপজেলা হলেও প্রাণিসম্পদ সেক্টরের অবস্থা জরাজীর্ণ। এখানে সবসময় দেখা যায় পল্লী চিকিৎসকের ভীড়। আর পল্লী চিকিৎসক দ্বারা দেয়া হচ্ছে হাতে গণা কিছু লোকজনকে সেবা।
ভেটেরিনারি সার্জন না থাকায় অসুস্থ পশু নিয়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে গেলেও সেবা না নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে লোকজনকে। এভাবে প্রতি দিনই ব্যাহত হচ্ছে প্রাণির চিকিৎসা সেবা।

উপজেলার ঝাড়ুয়াপাড়া গ্রামের সরকার শাহ আলম ও মায়ামারী গ্রামের আবুল কাশেম সহ বেশ কয়েকজন গরু খামারী মালিক বলেন, আমরা সরকারী কোন ডাঃ দিয়ে গরুর চিকিৎসা করাতে পারিনা। গরুর কোন রোগ হলে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎককে দেখাতে হয়। কখনও ঔষধ প্রয়োজন হলে সাপ্লাই নেই বলে এড়িয়ে যান। ফলে নিজের টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ক্রয় করতে হয়।
সরকার শাহ আলম বলেন, আমার খামারে এখন পর্যন্ত কোন ডাক্তার পরিদর্শন আসেন নি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতা ছাড়াই নিজ উদ্যোগেই চলছে আমার খামার।
প্রণোদনার কথা বলেলে গরু খামারী আবুল কাশেম বলেন, আমার খামারের বয়স অনেক দিন এই করোনার সময়ে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাছাড়া নিয়ামতপুর সোনালী ব্যাংকে এই খামারের উপর ঋণ নেওয়া আছে। আমি প্রণোদনার টাকা পাইনি।
এদিকে যে সকল বাড়িতে ৫ টি বা ততোধিক গরু রয়েছে তাদেরকে একটি খামার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতোগুলো খামার থাকলেও সেগুলো দেখভালের কোন সরকারী পশু চিকিৎসক নাই। গ্রামাঞ্চলের মানুষের আমিষের বেশির ভাগ চাহিদা পূরণ হয় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী দিয়ে। এদিকে হাঁস-মুরগীর খামারীরাও পড়েছেন বিপাকে। খামারীদের দু একজন প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার করলেও বেশির ভাগেরই নেই পশু-পাখির রোগ ব্যাধি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান। ফলে খামারের হাঁস-মুরগী মারা যাওয়ায় গুনতে হচ্ছে লোকসান। তাদের অভিযোগ সরকারী প্রাণিসম্পদ দপ্তরে যদি ভালো ভেটেরিনারি সার্জন থাকে তাহলে সেখান থেকে পশু-পাখির বিভিন্ন রোগ ব্যাধি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারতো।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, নিয়ামতপুর উপজেলায় ছোট-বড়সহ মোট খামার আছে ৫৯৫টি। এ মধ্যে উপজেলায় গরুর খামার রয়েছে ২০০ টি।নিবদ্ধিত খামার ৭০টি অনিবদ্ধিত খামার ১৩০টি। গরু মোটা তাজা করন খামার নিবন্ধিত ৩০টি অনিবন্ধিত ১৫০টি, ছাগলের খামার নিবন্ধত ১০টি অনিবন্ধিত ১২০টি, ভেড়া খামার নিবন্ধত ০১টি অনিবন্ধিত ২১টি, বয়লার মুরগী খামার নিবন্ধত ১৫টি অনিবন্ধিত ১০টি, সোনালী মুরগী খামার নিবন্ধত ১০টি অনিবন্ধিত ১২টি, হাস খামার নিবন্ধত ০৪টি অনিবন্ধিত ১৪টি।
প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবীদ রতন কুমার কর্মকার বলেন, করোনাকালীর সময়ে খামারীদের ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যম্যে দুই পর্বে ৪১৭ জনকে ১০হাজার, ১৫হাজার, ২০হাজার করে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ ইয়ামীন আলী বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই অনেক পদ শূণ্য রয়েছে। এ সকল পদে জনবল প্রাপ্তির জন্য ওপর মহলে অনেক বার বলা হয়েছে। পর্যাপ্ত লোক না থাকায় সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে এ সকল পদে জনবল পেলে আর কোন সমস্যা থাকবেনা। খামারীদের প্রণোদনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার অফিসের কর্মকর্তা দিয়ে প্রণোদনার তালিকা করে বিতরণ হয়েছে। প্রণোদনার তালিকা তাঁর কাছে চাইলে তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

নিয়ামতপুরে নামেই পরিচালিত হচ্ছে পশু হাসপাতাল, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত।

আপডেট টাইম ০৮:১৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার মোঃ রুহুল আমিন শেখ নওগাঁর নিয়ামতপুরে পশু চিকিৎসায় মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কার্যক্রম। সরকারের সকল সেবা জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে দেয়া হয়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। দীর্ঘ দিন থেকে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার ছোট-বড় খামারী। কেবল নাম দিয়ে চলছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতালের কার্যক্রম। সরকারি কার্যক্রমের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সঠিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রতি মাসে দেয়া হয় হাজার হাজার টাকার সরকারী ঔষধ। সরকার ঔষধ দিলেও সেবা প্রত্যাশীদের মাঝে বিতরণের আগ্রহ কম থাকায় এবং লোকবল কম থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গরু-ছাগল সহ বিভিন্ন প্রাণির চিকিৎসা নিতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে এসে পাচ্ছে না সঠিক সেবা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রানীসম্পদ দপ্তরে ১১টি পদ থাকলেও দীর্ঘ দিন থেকে নেই কোন ভেটেরিনারি সার্জন। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে পশু চিকিৎসা বলে মন্তব্য করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
নওগাঁর সর্ব বৃহৎ উপজেলা হলেও প্রাণিসম্পদ সেক্টরের অবস্থা জরাজীর্ণ। এখানে সবসময় দেখা যায় পল্লী চিকিৎসকের ভীড়। আর পল্লী চিকিৎসক দ্বারা দেয়া হচ্ছে হাতে গণা কিছু লোকজনকে সেবা।
ভেটেরিনারি সার্জন না থাকায় অসুস্থ পশু নিয়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে গেলেও সেবা না নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে লোকজনকে। এভাবে প্রতি দিনই ব্যাহত হচ্ছে প্রাণির চিকিৎসা সেবা।

উপজেলার ঝাড়ুয়াপাড়া গ্রামের সরকার শাহ আলম ও মায়ামারী গ্রামের আবুল কাশেম সহ বেশ কয়েকজন গরু খামারী মালিক বলেন, আমরা সরকারী কোন ডাঃ দিয়ে গরুর চিকিৎসা করাতে পারিনা। গরুর কোন রোগ হলে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎককে দেখাতে হয়। কখনও ঔষধ প্রয়োজন হলে সাপ্লাই নেই বলে এড়িয়ে যান। ফলে নিজের টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ক্রয় করতে হয়।
সরকার শাহ আলম বলেন, আমার খামারে এখন পর্যন্ত কোন ডাক্তার পরিদর্শন আসেন নি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতা ছাড়াই নিজ উদ্যোগেই চলছে আমার খামার।
প্রণোদনার কথা বলেলে গরু খামারী আবুল কাশেম বলেন, আমার খামারের বয়স অনেক দিন এই করোনার সময়ে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাছাড়া নিয়ামতপুর সোনালী ব্যাংকে এই খামারের উপর ঋণ নেওয়া আছে। আমি প্রণোদনার টাকা পাইনি।
এদিকে যে সকল বাড়িতে ৫ টি বা ততোধিক গরু রয়েছে তাদেরকে একটি খামার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতোগুলো খামার থাকলেও সেগুলো দেখভালের কোন সরকারী পশু চিকিৎসক নাই। গ্রামাঞ্চলের মানুষের আমিষের বেশির ভাগ চাহিদা পূরণ হয় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী দিয়ে। এদিকে হাঁস-মুরগীর খামারীরাও পড়েছেন বিপাকে। খামারীদের দু একজন প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার করলেও বেশির ভাগেরই নেই পশু-পাখির রোগ ব্যাধি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান। ফলে খামারের হাঁস-মুরগী মারা যাওয়ায় গুনতে হচ্ছে লোকসান। তাদের অভিযোগ সরকারী প্রাণিসম্পদ দপ্তরে যদি ভালো ভেটেরিনারি সার্জন থাকে তাহলে সেখান থেকে পশু-পাখির বিভিন্ন রোগ ব্যাধি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারতো।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, নিয়ামতপুর উপজেলায় ছোট-বড়সহ মোট খামার আছে ৫৯৫টি। এ মধ্যে উপজেলায় গরুর খামার রয়েছে ২০০ টি।নিবদ্ধিত খামার ৭০টি অনিবদ্ধিত খামার ১৩০টি। গরু মোটা তাজা করন খামার নিবন্ধিত ৩০টি অনিবন্ধিত ১৫০টি, ছাগলের খামার নিবন্ধত ১০টি অনিবন্ধিত ১২০টি, ভেড়া খামার নিবন্ধত ০১টি অনিবন্ধিত ২১টি, বয়লার মুরগী খামার নিবন্ধত ১৫টি অনিবন্ধিত ১০টি, সোনালী মুরগী খামার নিবন্ধত ১০টি অনিবন্ধিত ১২টি, হাস খামার নিবন্ধত ০৪টি অনিবন্ধিত ১৪টি।
প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবীদ রতন কুমার কর্মকার বলেন, করোনাকালীর সময়ে খামারীদের ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যম্যে দুই পর্বে ৪১৭ জনকে ১০হাজার, ১৫হাজার, ২০হাজার করে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ ইয়ামীন আলী বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই অনেক পদ শূণ্য রয়েছে। এ সকল পদে জনবল প্রাপ্তির জন্য ওপর মহলে অনেক বার বলা হয়েছে। পর্যাপ্ত লোক না থাকায় সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে এ সকল পদে জনবল পেলে আর কোন সমস্যা থাকবেনা। খামারীদের প্রণোদনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার অফিসের কর্মকর্তা দিয়ে প্রণোদনার তালিকা করে বিতরণ হয়েছে। প্রণোদনার তালিকা তাঁর কাছে চাইলে তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।