ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
টাঙ্গাইলে পাহাড়ি টিলা কাটছে মাটিখেকোরা, জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে “কুষ্টিয়ায় নকল আকিজ বিড়িসহ বিড়ি তৈরির উপকরণ জব্দ” চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিন খাতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চাইলেন মেয়র রেজাউল বরিশালে বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবরোধ করে শ্রমিকেরা। গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় খাদে প্রাইভেটকার, নিহত ৩ সিলেটে আগাম বন্যার আশঙ্কায়!! হাওরজুড়ে কৃষকের ব্যস্ততা শিশুদের মনোবিকাশে প্রয়োজন সংস্কৃতি চর্চা: মেয়র রেজাউল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হাতীবান্ধায় নির্বাচনী সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ আহত ১০ ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার, প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রথম দিনেই রোগী দেখে সবার মন জয় করেলেন ডাক্তার মোঃ হুমায়ুন রশিদ শাকিল

শরীয়তপুরে চলছে কৃষি জমি ধ্বংসের মহোৎসব।

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর জেলা বেশিরভাগ উপজেলায়ই কৃষি নির্ভর আর ছোট্র এ জেলায় গত দশ বছরে জেলার আয়তনের তুলনায় ব্যাপক হারে কৃষি জমি নষ্ট করা হয়েছে।

ড্রেজারের মাধ্যমে বালু দিয়ে ভরাট করে ও শত শত মাছ চাষের ঘের তেরী করে দুই ফসলি তিন ফসলি কৃসি জমি নষ্ট করার মহোৎসবে মেতেছেন এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা।

যদিও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সরকারের নির্দেশনা রয়েছে যেকোনো উপায়ে কৃষি জমি নষ্ট করা যাবেনা।

জেলার সদর ও জাজিরা উপজেলায় ড্রেজিং এবং ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, নড়িয়া, গোসাইরহাট উপজেলায় মাছ চাষের ঘের তৈরী করা হচ্ছে ব্যাপক হারে।

এই ড্রেজার ও মাছের ঘের ব্যবসায়ীরা এতোটাই ভয়ংকর যে তাদের স্বার্থের প্রয়োজনে মানুষকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করেনা।

গত ৩ ফেব্রয়ারী ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারা বুনিয়ার ইউনিয়নের মাল বাজার এলাকায় খাশ জমিতে অবৈধভাবে মাছ চাষের ঘের তৈরীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক হুংকার পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক সাংবাদিক খোরশেদ আলম বাবুলসহ তার সহকর্মীদের উপর হামলা করে দক্ষিণ তারা বুনিয়ার চেয়ারম্যান শাহ জালাল মালের সন্ত্রাসী বাহিনী।

এদিকে শরীয়তপুর জেলা শহর জুড়ে চলছে ড্রেজারের নৈরাজ্য, ড্রেজার দিয়ে এতিহ্যবাহী দিঘী, কৃষি জমি, খাল ভরাট করে ফেলছে ভূমি খেকোরা। অভিযোগ রয়েছে এই অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের ঐতিহ্যবাহী সরকারী পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করার।

এসব ড্রেজারের পাইপ শহরের বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার এবং ছয় গাঁও ইউনিয়নের কৃষি জমি ধ্বংস করে চলছে মাছের ঘের তৈরীর মহোৎসব।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, এদুটি ইউনিয়নের লাকার্তা, ভেনোপা, ছয় গাঁও গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নামমাত্র মুল্যে দিয়ে দখল করে মাছ চাষের জন্য প্রায় কৃষি জমি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলছে বলে জানান কৃষকরা।

কৃষকদের অভিযোগ এতে স্থানীয় কৃষকরা পড়েছে বিপাকে, ধানসহ দুই ফসলি জমি কেটে এধরনের বিশাল বিশাল মাছের ঘের নির্মান করে কৃষি জমি নষ্ট করে, কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যহত করায়, বেকার হয়ে পড়েছে অসংখ্য কৃষক।

এসব ঘের তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও বেশিরভাগ ঘেরেরই নেই অনুমতি।

এছাড়া দু-একটি ঘের তৈরীর অনুমতি থাকলেও তারা শর্ত না মেনে মাটির উপরিভাগ কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলায়, চার মাস ধান চাষ করার কথা থাকলেও তা করতে পারছেননা মাছ চাষীরা

কোনো কৃষক মাছ চাষীদের জমি না দিলে সে জমিকে এমন ভাবে জলাবদ্ধতায় ফেলে রাখে যাতে সে কোনো ফসল করতে না পারে এবং জমিটি যাতে ঘের তৈরীতে দিতে বাধ্য হয় কৃষক।

এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা ইসলাম বলেন, এধরণের কোনো মাছ চাষের ঘের তৈরীতে আমাদের অনুমতি কেউ নিতে আসেনা, আমরা ইচ্ছে করলেই ঘের তৈরী করা আটকাতে পারিনা, তারপরেও আমরা চেষ্টা করি যাতে কৃষকরা তাদের জমি মাছ চাষের ঘের তৈরীতে না দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাফীস বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ছয়গাঁ ইউনিয়নে বেশিরভাগ জমিতে মাছ চাষের ঘের তৈরী করে ফেলেছে, আমরা চেষ্টা করছি এ উপজেলার এ’দুটি ইউনিয়নের বাইরে যেনো এধরনের মাছ চাষের ঘের তৈরী করতে না পারে। এছাড়া আমাদের কাছে এধরণের অভিযোগ আসলে মাছ চাষের ঘের তৈরীর কাজ বন্ধ করাসহ জড়িমানা করি। তিনি আরো জানান, এসব ঘের তৈরীর জন্য বিভিন্ন রাজনেতিক নেতাদের হস্তক্ষেপের কারনে অনেকটা দ্বিধায় পড়তে হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

টাঙ্গাইলে পাহাড়ি টিলা কাটছে মাটিখেকোরা, জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে

শরীয়তপুরে চলছে কৃষি জমি ধ্বংসের মহোৎসব।

আপডেট টাইম ১০:০৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর জেলা বেশিরভাগ উপজেলায়ই কৃষি নির্ভর আর ছোট্র এ জেলায় গত দশ বছরে জেলার আয়তনের তুলনায় ব্যাপক হারে কৃষি জমি নষ্ট করা হয়েছে।

ড্রেজারের মাধ্যমে বালু দিয়ে ভরাট করে ও শত শত মাছ চাষের ঘের তেরী করে দুই ফসলি তিন ফসলি কৃসি জমি নষ্ট করার মহোৎসবে মেতেছেন এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা।

যদিও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সরকারের নির্দেশনা রয়েছে যেকোনো উপায়ে কৃষি জমি নষ্ট করা যাবেনা।

জেলার সদর ও জাজিরা উপজেলায় ড্রেজিং এবং ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, নড়িয়া, গোসাইরহাট উপজেলায় মাছ চাষের ঘের তৈরী করা হচ্ছে ব্যাপক হারে।

এই ড্রেজার ও মাছের ঘের ব্যবসায়ীরা এতোটাই ভয়ংকর যে তাদের স্বার্থের প্রয়োজনে মানুষকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করেনা।

গত ৩ ফেব্রয়ারী ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারা বুনিয়ার ইউনিয়নের মাল বাজার এলাকায় খাশ জমিতে অবৈধভাবে মাছ চাষের ঘের তৈরীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক হুংকার পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক সাংবাদিক খোরশেদ আলম বাবুলসহ তার সহকর্মীদের উপর হামলা করে দক্ষিণ তারা বুনিয়ার চেয়ারম্যান শাহ জালাল মালের সন্ত্রাসী বাহিনী।

এদিকে শরীয়তপুর জেলা শহর জুড়ে চলছে ড্রেজারের নৈরাজ্য, ড্রেজার দিয়ে এতিহ্যবাহী দিঘী, কৃষি জমি, খাল ভরাট করে ফেলছে ভূমি খেকোরা। অভিযোগ রয়েছে এই অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের ঐতিহ্যবাহী সরকারী পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করার।

এসব ড্রেজারের পাইপ শহরের বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার এবং ছয় গাঁও ইউনিয়নের কৃষি জমি ধ্বংস করে চলছে মাছের ঘের তৈরীর মহোৎসব।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, এদুটি ইউনিয়নের লাকার্তা, ভেনোপা, ছয় গাঁও গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নামমাত্র মুল্যে দিয়ে দখল করে মাছ চাষের জন্য প্রায় কৃষি জমি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলছে বলে জানান কৃষকরা।

কৃষকদের অভিযোগ এতে স্থানীয় কৃষকরা পড়েছে বিপাকে, ধানসহ দুই ফসলি জমি কেটে এধরনের বিশাল বিশাল মাছের ঘের নির্মান করে কৃষি জমি নষ্ট করে, কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যহত করায়, বেকার হয়ে পড়েছে অসংখ্য কৃষক।

এসব ঘের তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও বেশিরভাগ ঘেরেরই নেই অনুমতি।

এছাড়া দু-একটি ঘের তৈরীর অনুমতি থাকলেও তারা শর্ত না মেনে মাটির উপরিভাগ কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলায়, চার মাস ধান চাষ করার কথা থাকলেও তা করতে পারছেননা মাছ চাষীরা

কোনো কৃষক মাছ চাষীদের জমি না দিলে সে জমিকে এমন ভাবে জলাবদ্ধতায় ফেলে রাখে যাতে সে কোনো ফসল করতে না পারে এবং জমিটি যাতে ঘের তৈরীতে দিতে বাধ্য হয় কৃষক।

এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা ইসলাম বলেন, এধরণের কোনো মাছ চাষের ঘের তৈরীতে আমাদের অনুমতি কেউ নিতে আসেনা, আমরা ইচ্ছে করলেই ঘের তৈরী করা আটকাতে পারিনা, তারপরেও আমরা চেষ্টা করি যাতে কৃষকরা তাদের জমি মাছ চাষের ঘের তৈরীতে না দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাফীস বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ছয়গাঁ ইউনিয়নে বেশিরভাগ জমিতে মাছ চাষের ঘের তৈরী করে ফেলেছে, আমরা চেষ্টা করছি এ উপজেলার এ’দুটি ইউনিয়নের বাইরে যেনো এধরনের মাছ চাষের ঘের তৈরী করতে না পারে। এছাড়া আমাদের কাছে এধরণের অভিযোগ আসলে মাছ চাষের ঘের তৈরীর কাজ বন্ধ করাসহ জড়িমানা করি। তিনি আরো জানান, এসব ঘের তৈরীর জন্য বিভিন্ন রাজনেতিক নেতাদের হস্তক্ষেপের কারনে অনেকটা দ্বিধায় পড়তে হয়।