ভাস্কর মজুমদার (নিজস্ব প্রতিবেদক); জমি নিয়ে বিরোধের জেরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন এলাকায় আলী আকবর নামক এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় তিনজনকে এদিন খালাস দেয়া হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মহিবুল এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. জসিম (২৮), সফিকুর রহমান (৩৫), রুবেল হোসেন (৩০), নূর মিয়া ব্যাপারী (৬৫) ও তৌহিদুর রহমান (৪০)। যাবজ্জীবন প্রাপ্তরা হলেন- জুয়েল, মোক্তার হোসেন ও রাহেলা বেগম।
২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর উপজেলায় উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড এলাকার স্টিল ব্রীজের দক্ষিণ পাশে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আলী আকবর কারি (৮৫) নামে এক বৃদ্ধ কৃষককে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, চাইনিজ কুড়াল রড বাঁশের লাঠি দা, ছেনি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ নূরুল ইসলাম ওরফে নূর মিয়ার পক্ষের লোকজন। নিহত আলী আকবর কারি চরবংশী গ্রামের মৃত আসাদ উল্যার ছেলে। ঘটনায় নিহতের পুত্র তহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে এগারো জনের নাম উল্লেখ করে রায়পুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পার্শ্ববর্তী হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ (বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত) পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আলমগীর হোসেন। প্রায় নয় মাস তদন্তের পরে ২০১৯ সনের ১ এপ্রিল তারিখে ১৪৩/৪৪৭/৩২৭/৩২৫/৩০৭/৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলায় অভিযোগ পত্র দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোঃ আলমগীর হোসেন কাছে এ মামলার রায় ঘোষণা করার পরে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, মামলার তদন্তের ভার আমার কাছে আসার পরে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সরেজমিনে গিয়ে যথাযথ সাক্ষী প্রমাণ সংগ্রহ করে ঘটনায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দায়ের করি।
আসামি পক্ষের আইনজীবী জানান, এ রায়ে আমরা মর্মাহত হয়েছি, আশাকরি উচ্চ আদালতে গিয়ে আমরা সু-বিচার পাবো।
মামলার বাদী তহিরুল ইসলাম জানান, আদালতের রায়ে আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট, খালাস পাওয়া তিনজনের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে গিয়ে তাদের শাস্তির জন্য আবেদন করবো। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো বলেন, ১৯৯২ সনে আমার বড় ভাইকে খুন করার পরে হওয়া মামলায় আজকের দন্ডপ্রাপ্ত নুরু গংদের যদি যথাযথ ভাবে শাস্তি দেওয়া হতো তাহলে আমার পিতাকে হারিয়ে আজ আমরা এতিম হয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরতাম না।