ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।। বরিশালে সুলভ মুল্যে বসুন্ধরা পন্য পেয়ে ক্রেতারা খুশী। বাবুগঞ্জে স্কুল ছুটির পরে বাড়ি যাওয়ার সময় দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ। আমার বাবাও মায়ের দেওয়া উপদেশ বড়দের সম্মান কর ছোটদের স্নেহ করো। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী নারী উদ্যোক্তা মেলা শুরু। টাঙ্গাইলে তিনদিন ব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা শুরু বাকেরগঞ্জে প্রধান মন্ত্রীর ছবি ব্যঙ্গক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করায় হায়দর সিপাই গ্রেফতার। বাকেরগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের কৃত মামলায় স্বামী পারভেজ খান গ্রেফতার।। বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষী হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী রুদ্র গাজী গ্রেফতার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত

নবীনগরে ৭ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রার্থীর জয় ও পরাজয়ের কারন। ৪টিতে নৌকা,১ টিতে বিদ্রোহী ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী

মোঃখলিলুর রহমান জেলা প্রতিনিধি
31 জানুয়ারি 2022 রোজ সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার 7 টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথমবারের মতো সবগুলো ইউনিয়নের সবগুলো কেন্দ্র ইভিএমে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয় ইভিএমে ভোট গ্রহণ এলাকার ভোটারদের মধ্যে ছিল নতুনকে জানার এবং উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে ভোট দেবার অবাধ সুযোগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী চারটিতে জয়লাভ করলেও তিনটি ইউনিয়নে পরাজিত হয় নবীনগরের সর্ব উত্তরের বড়াইল ইউনিয়ন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন জাকির হোসেন জাকির হোসেন 2016 সালের নৌকা প্রতীক নিয়ে নিয়ন্ত্রিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আজ ৩১ জানুয়ারী
বড়াইল ইউনিয়নে জাকির হোসেন- নৌকা প্রতিক নিয়ে ৪৯০৪ ভোট পেয়ে ২য় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মুস্তাফিজুর রহমান নান্নু -মোটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে ১৫৭৩ভোট ভোট পায়।জাকির হোসেনের জয় লাভের মূল কারন তিনি এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সাধারন জনগনের জন্য কাজ করেছেন।উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ প্রচার প্রচারনায় ব্যাপক ভাবে অংশগ্রহন না করলেও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আল মামুন সরকার নিজে প্রচার প্রচারনায় এসেছেন।জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের প্রচারনায় থাকায় জাকির হোসেনের জয় লাভ সহজ হয়।
বিদ্যাকুট ইউনিয়নে মোঃ জাকারুল হক নৌকা প্রতিক এ ৫৬৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ভিপি এনামুল হক -আনারস প্রতিকে৪৯৫৫ভোট পায়। বিদ্যাকুট ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এলাকায় নবাগত হওয়ায় জনশ্রুতি ছিল নির্বাচনে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনের মাঠে সরগরম প্রচারণা শুরু হয়। নৌকার প্রার্থী এর পক্ষে বিদ্যাকুট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খোকা ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবু, নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা পিন্টু ভদ্র,জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড মাহবুব আলম খোকন ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এড সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়ে যার যার এলাকায় রাত দিন ভোট প্রার্থনা করেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও জেলা নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যের মাধ্যমে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয়। তাছাড়া বিদ্যাকোট ইউনিয়ন দুটি অঞ্চলে বিভক্ত ভাটি অঞ্চলে নৌকার মনোনীত প্রার্থী জাকারুল ব্যতীত অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় ভাটি অঞ্চলের সমগ্র ভোট নৌকার প্রার্থীর পক্ষে আসে, আর উজান অঞ্চল বলে পরিচিত সেমন্তঘর, মেরকোটা,বিদ্যাকুট ও গঙ্গা নগরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এনামুল হক, বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল হোসেন ও বিদ্রোহী প্রার্থী হান্নান সরকারের বাড়ি হওয়ায় ওই এলাকার ভোট ভাগাভাগি হয়ে যায় এতে করে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয়ে যায়।
নাটঘর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী আক্তারুজ্জামান মোটর সাইকেল প্রতিকে৫৫০৫ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামীলীগ মনোনিত সাইফুল আলম-নৌকা প্রতিকে৫০৪৬ ভোট পায়।নৌকা প্রতিক ৪৫১ ভোট কম পেয়ে মটর সাইকেলের নিকট পরাজিত হয়। নাটঘর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলমের বাড়ি নাটগর গ্রামে আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আখতারুজ্জামানের বাড়ি কুড়িঘরগ্রামে। নাটঘর থেকে কুড়িঘর গ্রামের মোট ভোটার সংখ্যা বেশি, তাছাড়া নাটঘর ইউনিয়নউত্তর ও দক্ষিণ এলাকা দুই ভাগে বিভক্ত। উত্তর এলাকার প্রার্থী দক্ষিণ এলাকা থেকে বেশি ভোট পায় না, অপরদিকে দক্ষিণ এলাকার প্রার্থীও উত্তর এলাকা থেকে বেশি ভোট পায় না। এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলমের দক্ষিন এলাকার মোট ভোট উত্তর এলাকা থেকে কম। উত্তর এলাকা থেকে নৌকা প্রতিক আশানুরূপ ভোট পায় নায়। আখতারুজ্জামান অন্যদিকে দক্ষিণ এলাকা থেকে মটর সাইকেল প্রতিকে ৬০০ ভোট পায় এটি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পরাজয়ের মূল কারণ। অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান জোড়া খুনে নিহত এরশাদুল হক এর ছোট ভাই হওয়ায় আখতারুজ্জামানের প্রতি কুড়িঘর গ্রামবাসীর সহানুভূতিটা কাজ করেছে। এতে করে আক্তারের জয় লাভ সহজ হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান কাশেম ডাক্তার নির্বাচন মাঠের পাক্কা খেলোয়ার হওয়ায় তার ছেলে আখতারুজ্জামানের জয় লাভ সহজ হয়।
শিবপুরে এম আর মুজিব-আনারস প্রতিকে৬৮৫১ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন সরকার-নৌকা প্রতিকে ৪২১৭ টি ভোট পায়। বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী এম আর মজিদের জন্মস্থান কনিকাড়ায় একক প্রার্থী হওয়ায় মজিদের জয় লাভের পথ সহজ হয়ে যায়। কনিকাড়া গ্রামের সকল দলের সকল মতের মানুষ ঐক্য মতে আসতে সম্ভব হয়, কনিকাড়ার মানুষের একতার কারণে মজিদ নির্বাচনী বৈতরণী অতি সহজে পার হয়ে যায়। কনিকাড়ায় নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সরোয়ার চৌধুরীর কে নৌকার পক্ষে ভূমিকা রাখেন নায়। তাছাড়া এম আর মজিদ এর আগেও দুইটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয় মজিদের বিষয়ে জুলায়পাড়া ও ওয়ারুকে সহানুভূতি কাজ করেছে। অপরদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাহিন সরকারের পক্ষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অলি মাষ্টার জামাল ডাঃ, রানা শামিম রতন কোনো কাজ না করায় ও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অনেক নেতাকর্মী নিশ্চুপ থাকায় প্রচার-প্রচারণায় বের না হওয়ায় নৌকা প্রতীকের পরাজয়ের কারণ। শাহিন সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নিজের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে যতোটুকু সম্ভব ততটুকু ভোট সংগ্রহ করেন কিন্তু এই ভোট জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।তাছাড়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের ভোট দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বিএনপি ঘরানার ভোটারা মজিদের পক্ষে ভোট প্রদান করেন এতে মজিদ সহজে জয়লাভ করে।
বিটঘরে গোলাম দস্তগীর-নৌকা প্রতিকে ৬৭২৮ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম কিবরিয়া – ঘোড়া প্রতিকে ৩৮৯২ ভোট পায়। বিটঘর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ঐক্যমতের ভিত্তিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাফর দস্তগীরের পক্ষে কাজ করেন। মেহেদী জাফর দস্তগীরের পক্ষে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগের ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দ প্রচার প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করেন।বিটঘর একটি বৃহৎ গ্রাম হওয়ায়এই গ্রামের মধ্যে মেহেদী জাফর দস্তগীরের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছাতে সম্ভব হয়। এতে করে মেহেদির নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়, তাছাড়া মেহেীকে কে কটাক্ষ করে অদক্ষ চালক বলে জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখার পর এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে বিটঘর গ্রামবাসী।তখন গ্রামবাসী তাদের আশে পাশের প্রতিবেশী গ্রামগুলোতে রাতদিন ভোট প্রার্থনা করতে থাকেন, তারা ভোট প্রার্থনা করে তাদেরকে বুঝিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট আদায় করতে সক্ষম হন, এতে করে নৌকার প্রার্থী জাফর দস্তগীর জয়লাভ সহজ হয়।
কাইতলা (দঃ)-শওকত আলী-নৌকা প্রতিকে২৬৮১ ভোট পেয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী আবু সালেহ মোটরসাইকেল ১৫৪২ ভোট পেয়েছেন।শওকত আলীর ব্যক্তি ইমেজ নৌকা প্রতিকের জয় লাভের মূল কারন।
কৃষ্ণনগরে মুফতী আমজাদ হোসেন আশরাফী-চশমা প্রতিকে৬৮১৭ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী মাসুকুর রহমান-নৌকা প্রতিকে৪৩৫০টি ভোট পায়।মাশুকুর রহমানের পরাজয়ের মূল কারন তিনি আগে দুই বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন করেন নাই। তিনি ন্যায় বিচারক ও সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত হলেও এলাকার উন্নয়নে কাজ করেন নাই বলে এলাকার লোকজনদের মনে তার বিষয়ে একটি বিরূপ প্রভাব আছে। তাছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জিল্লু বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মলাই হোসেন বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মীরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাসুকুর রহমান মাসুদ পরাজয় বরণ করেন। অপরদিকে চশমা প্রতীকের প্রার্থী জয়লাভ এর মূল কারণ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের জনগণ মাসুকুর রহমান এর বিষয়ে তিনি কোন কাজ করেন না এমন একটি ধারণা পোষণ করেন, অপরদিকে জিল্লু চেয়ারম্যানের বিষয়ে দাঙ্গার সাথে জড়িত এমন একটি ধারণা পোষন করেন, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন বাসী এমন একজন মানুষকে নির্বাচিত করতে চেয়েছেন যিনি হবেন নতুন প্রার্থী, দাঙ্গার বিষয়ে চিন্তা করবেন না, এটিই চশমা প্রতিকের প্রার্থীর জয় লাভের মূল কারন।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জে ড. আবদুস সালাম মল্লিক ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

নবীনগরে ৭ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রার্থীর জয় ও পরাজয়ের কারন। ৪টিতে নৌকা,১ টিতে বিদ্রোহী ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী

আপডেট টাইম ০৮:২৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

মোঃখলিলুর রহমান জেলা প্রতিনিধি
31 জানুয়ারি 2022 রোজ সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার 7 টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথমবারের মতো সবগুলো ইউনিয়নের সবগুলো কেন্দ্র ইভিএমে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয় ইভিএমে ভোট গ্রহণ এলাকার ভোটারদের মধ্যে ছিল নতুনকে জানার এবং উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে ভোট দেবার অবাধ সুযোগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী চারটিতে জয়লাভ করলেও তিনটি ইউনিয়নে পরাজিত হয় নবীনগরের সর্ব উত্তরের বড়াইল ইউনিয়ন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন জাকির হোসেন জাকির হোসেন 2016 সালের নৌকা প্রতীক নিয়ে নিয়ন্ত্রিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আজ ৩১ জানুয়ারী
বড়াইল ইউনিয়নে জাকির হোসেন- নৌকা প্রতিক নিয়ে ৪৯০৪ ভোট পেয়ে ২য় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মুস্তাফিজুর রহমান নান্নু -মোটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে ১৫৭৩ভোট ভোট পায়।জাকির হোসেনের জয় লাভের মূল কারন তিনি এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সাধারন জনগনের জন্য কাজ করেছেন।উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ প্রচার প্রচারনায় ব্যাপক ভাবে অংশগ্রহন না করলেও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আল মামুন সরকার নিজে প্রচার প্রচারনায় এসেছেন।জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের প্রচারনায় থাকায় জাকির হোসেনের জয় লাভ সহজ হয়।
বিদ্যাকুট ইউনিয়নে মোঃ জাকারুল হক নৌকা প্রতিক এ ৫৬৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ভিপি এনামুল হক -আনারস প্রতিকে৪৯৫৫ভোট পায়। বিদ্যাকুট ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এলাকায় নবাগত হওয়ায় জনশ্রুতি ছিল নির্বাচনে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনের মাঠে সরগরম প্রচারণা শুরু হয়। নৌকার প্রার্থী এর পক্ষে বিদ্যাকুট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খোকা ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবু, নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা পিন্টু ভদ্র,জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড মাহবুব আলম খোকন ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এড সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়ে যার যার এলাকায় রাত দিন ভোট প্রার্থনা করেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও জেলা নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যের মাধ্যমে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয়। তাছাড়া বিদ্যাকোট ইউনিয়ন দুটি অঞ্চলে বিভক্ত ভাটি অঞ্চলে নৌকার মনোনীত প্রার্থী জাকারুল ব্যতীত অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় ভাটি অঞ্চলের সমগ্র ভোট নৌকার প্রার্থীর পক্ষে আসে, আর উজান অঞ্চল বলে পরিচিত সেমন্তঘর, মেরকোটা,বিদ্যাকুট ও গঙ্গা নগরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এনামুল হক, বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল হোসেন ও বিদ্রোহী প্রার্থী হান্নান সরকারের বাড়ি হওয়ায় ওই এলাকার ভোট ভাগাভাগি হয়ে যায় এতে করে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হয়ে যায়।
নাটঘর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী আক্তারুজ্জামান মোটর সাইকেল প্রতিকে৫৫০৫ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামীলীগ মনোনিত সাইফুল আলম-নৌকা প্রতিকে৫০৪৬ ভোট পায়।নৌকা প্রতিক ৪৫১ ভোট কম পেয়ে মটর সাইকেলের নিকট পরাজিত হয়। নাটঘর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলমের বাড়ি নাটগর গ্রামে আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আখতারুজ্জামানের বাড়ি কুড়িঘরগ্রামে। নাটঘর থেকে কুড়িঘর গ্রামের মোট ভোটার সংখ্যা বেশি, তাছাড়া নাটঘর ইউনিয়নউত্তর ও দক্ষিণ এলাকা দুই ভাগে বিভক্ত। উত্তর এলাকার প্রার্থী দক্ষিণ এলাকা থেকে বেশি ভোট পায় না, অপরদিকে দক্ষিণ এলাকার প্রার্থীও উত্তর এলাকা থেকে বেশি ভোট পায় না। এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলমের দক্ষিন এলাকার মোট ভোট উত্তর এলাকা থেকে কম। উত্তর এলাকা থেকে নৌকা প্রতিক আশানুরূপ ভোট পায় নায়। আখতারুজ্জামান অন্যদিকে দক্ষিণ এলাকা থেকে মটর সাইকেল প্রতিকে ৬০০ ভোট পায় এটি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পরাজয়ের মূল কারণ। অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান জোড়া খুনে নিহত এরশাদুল হক এর ছোট ভাই হওয়ায় আখতারুজ্জামানের প্রতি কুড়িঘর গ্রামবাসীর সহানুভূতিটা কাজ করেছে। এতে করে আক্তারের জয় লাভ সহজ হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান কাশেম ডাক্তার নির্বাচন মাঠের পাক্কা খেলোয়ার হওয়ায় তার ছেলে আখতারুজ্জামানের জয় লাভ সহজ হয়।
শিবপুরে এম আর মুজিব-আনারস প্রতিকে৬৮৫১ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন সরকার-নৌকা প্রতিকে ৪২১৭ টি ভোট পায়। বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী এম আর মজিদের জন্মস্থান কনিকাড়ায় একক প্রার্থী হওয়ায় মজিদের জয় লাভের পথ সহজ হয়ে যায়। কনিকাড়া গ্রামের সকল দলের সকল মতের মানুষ ঐক্য মতে আসতে সম্ভব হয়, কনিকাড়ার মানুষের একতার কারণে মজিদ নির্বাচনী বৈতরণী অতি সহজে পার হয়ে যায়। কনিকাড়ায় নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সরোয়ার চৌধুরীর কে নৌকার পক্ষে ভূমিকা রাখেন নায়। তাছাড়া এম আর মজিদ এর আগেও দুইটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয় মজিদের বিষয়ে জুলায়পাড়া ও ওয়ারুকে সহানুভূতি কাজ করেছে। অপরদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাহিন সরকারের পক্ষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অলি মাষ্টার জামাল ডাঃ, রানা শামিম রতন কোনো কাজ না করায় ও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অনেক নেতাকর্মী নিশ্চুপ থাকায় প্রচার-প্রচারণায় বের না হওয়ায় নৌকা প্রতীকের পরাজয়ের কারণ। শাহিন সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নিজের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে যতোটুকু সম্ভব ততটুকু ভোট সংগ্রহ করেন কিন্তু এই ভোট জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।তাছাড়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের ভোট দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বিএনপি ঘরানার ভোটারা মজিদের পক্ষে ভোট প্রদান করেন এতে মজিদ সহজে জয়লাভ করে।
বিটঘরে গোলাম দস্তগীর-নৌকা প্রতিকে ৬৭২৮ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম কিবরিয়া – ঘোড়া প্রতিকে ৩৮৯২ ভোট পায়। বিটঘর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ঐক্যমতের ভিত্তিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাফর দস্তগীরের পক্ষে কাজ করেন। মেহেদী জাফর দস্তগীরের পক্ষে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগের ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দ প্রচার প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করেন।বিটঘর একটি বৃহৎ গ্রাম হওয়ায়এই গ্রামের মধ্যে মেহেদী জাফর দস্তগীরের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছাতে সম্ভব হয়। এতে করে মেহেদির নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়, তাছাড়া মেহেীকে কে কটাক্ষ করে অদক্ষ চালক বলে জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখার পর এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে বিটঘর গ্রামবাসী।তখন গ্রামবাসী তাদের আশে পাশের প্রতিবেশী গ্রামগুলোতে রাতদিন ভোট প্রার্থনা করতে থাকেন, তারা ভোট প্রার্থনা করে তাদেরকে বুঝিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট আদায় করতে সক্ষম হন, এতে করে নৌকার প্রার্থী জাফর দস্তগীর জয়লাভ সহজ হয়।
কাইতলা (দঃ)-শওকত আলী-নৌকা প্রতিকে২৬৮১ ভোট পেয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী আবু সালেহ মোটরসাইকেল ১৫৪২ ভোট পেয়েছেন।শওকত আলীর ব্যক্তি ইমেজ নৌকা প্রতিকের জয় লাভের মূল কারন।
কৃষ্ণনগরে মুফতী আমজাদ হোসেন আশরাফী-চশমা প্রতিকে৬৮১৭ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী মাসুকুর রহমান-নৌকা প্রতিকে৪৩৫০টি ভোট পায়।মাশুকুর রহমানের পরাজয়ের মূল কারন তিনি আগে দুই বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন করেন নাই। তিনি ন্যায় বিচারক ও সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত হলেও এলাকার উন্নয়নে কাজ করেন নাই বলে এলাকার লোকজনদের মনে তার বিষয়ে একটি বিরূপ প্রভাব আছে। তাছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জিল্লু বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মলাই হোসেন বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মীরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাসুকুর রহমান মাসুদ পরাজয় বরণ করেন। অপরদিকে চশমা প্রতীকের প্রার্থী জয়লাভ এর মূল কারণ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের জনগণ মাসুকুর রহমান এর বিষয়ে তিনি কোন কাজ করেন না এমন একটি ধারণা পোষণ করেন, অপরদিকে জিল্লু চেয়ারম্যানের বিষয়ে দাঙ্গার সাথে জড়িত এমন একটি ধারণা পোষন করেন, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন বাসী এমন একজন মানুষকে নির্বাচিত করতে চেয়েছেন যিনি হবেন নতুন প্রার্থী, দাঙ্গার বিষয়ে চিন্তা করবেন না, এটিই চশমা প্রতিকের প্রার্থীর জয় লাভের মূল কারন।