ঢাকা ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
টাঙ্গাইলে উপজেলা নির্বাচনের ৩য় ও ৪র্থ ধাপের প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় টাঙ্গাইলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃংখলা রক্ষার্থে নির্বাচনী ব্রিফিং অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার: তথ্য সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। বিড়ি শিল্প রক্ষায় পাবনা বিড়ি মজদুর ইউনিয়নের ৫ দফা দাবি ” ইউ, এস, জি, বি, সি, প্লাটিনাম সনদ অর্জন করলো এম,টি সোয়েটার্স” দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস মার্কার প্রচার প্রচারণায় জনতার ঢল । –২০১৮ সালে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা এলাকায় চাঞ্চল্যকর ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া স্কুল ছাত্র অন্তর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আজিজুল’কে দীর্ঘ ০৬ বছর পর ফরিদপুর জেলার ভাংগা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। বাকেরগঞ্জে জাহানারা মাহবুব মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন মহলের শুভেচ্ছা।।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে এসে সাংবাদিকদের হুমকি ছাত্রলীগ নেতার

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওঃ- ঠাকুরগাঁও সেনুয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতার সংবাদ সংগ্রহের সময় ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়া জেলার তিন আহত সাংবাদিককে এবার হাসপাতালে এসে মামলা না করার হুমকি দিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা।

হুমকিদাতা স্বরুপ কুমার সেন তন্ময় রুহিয়া থানা শাখার ছাত্রলীগের সদস্য সচিব পদে রয়েছেন।

এ তথ্য তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে নিশ্চিৎ হওয়া গেছে এবং সাংবাদিকদের উপর হামলার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজেও তাকে দেখা যায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানোর স্ট্যাটাসও দেখা যায় তার ফেসবুক আইডিতে।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের ৫০৩ নাম্বার কক্ষে প্রবেশ করে লোকসম্মুকে হুমকি দেয় এ ছাত্রলীগ নেতা।

আহত সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু জানান, হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন তারা। এ সময় তাদের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরাও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় মুখে মাক্স ও টুপিসহ জ্যাকেটে পড়ে তাদের চিকিৎসাধীন থাকা সার্জারি ওয়ার্ডের ৫০৩ নাম্বার কক্ষে প্রবেশ করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা স্বরুপ কুমার সেন তন্ময়। সে সময় ওই ছাত্রলীগ নেতা সবার সামনে বলে মামলা করলে পরিণতি ভালো হবেনা। বেশি বারাবারি করলে এরপর তিনজনের লাশও কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

এ কথা শোনার পর সাংবাদিক তানুর চাচাতো ভাই মাসুম রেজা তার মাক্স খুলতে বললে সে উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করে।

পরে ওই ওয়ার্ডে থাকা অন্যান্য রোগীর স্বজনেরা ওই ছাত্রলীগ নেতার আচরণে ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করেন এবং উপস্থিত সবার তোপের মুখে পড়ে দৌড় দিয়ে পালিয়ে যান।

এ সময় তাকে আটকানোর চেষ্টা করা হলে তার জ্যাকেটের টুপি হাসপাতালে পড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুলিশকে ওই টুপি দেয়া হয়।

মাসুম রেজা বলেন, এ কোন দেশে বাস করছি আমরা! যারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করলো তারা এখনো বুক উচিয়ে ঘুরছে এবং তারা হাসপাতালে এসে সাংবাদিকদের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে। এ সাহস কোথা থেকে আসে ছাত্রলীগের উশৃঙ্খল নেতাকর্মীদের।

উপস্থিত সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুর মা রানী আক্তার বলেন, আমার সাংবাদিক ছেলেরা তো খারাপ কিছু করেনি। তারা দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। ওরা কি এ দেশে বিচারও চাইতে পারবেনা। এ কেমন দু:সাহস!

আমার সামনে হুমকি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে নাকি সাংবাদিকদের লাশ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আমি হুমকিদাতা ও সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।

ওই ওয়ার্ডের অন্য এক রোগীর স্বজন কুশাল খন্দকার বলেন, হামলার পর আবার মামলা না করতে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার না করা হলে এ দেশে সাংবাদিকতা পেশাটি বিলুপ্ত পেশা হতে বেশিদিন সময় লাগবেনা। এর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনার পর নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে হামলার শিকার হওয়া তিন সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু, মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল ও সোহেল রানা।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে চিকিৎসারত সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। হুমকিদাতা পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি।

এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে তিন সাংবাদিককে হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ঘটনার দিন গতকাল শনিবার শহর চৌরাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাংবাদিক মহল ও সাধারণ মানুষ। এছাড়াও এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান হামলার শিকার হওয়া আহত সাংবাদিকগণ।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

টাঙ্গাইলে উপজেলা নির্বাচনের ৩য় ও ৪র্থ ধাপের প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময়

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে এসে সাংবাদিকদের হুমকি ছাত্রলীগ নেতার

আপডেট টাইম ০১:১৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওঃ- ঠাকুরগাঁও সেনুয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতার সংবাদ সংগ্রহের সময় ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়া জেলার তিন আহত সাংবাদিককে এবার হাসপাতালে এসে মামলা না করার হুমকি দিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা।

হুমকিদাতা স্বরুপ কুমার সেন তন্ময় রুহিয়া থানা শাখার ছাত্রলীগের সদস্য সচিব পদে রয়েছেন।

এ তথ্য তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে নিশ্চিৎ হওয়া গেছে এবং সাংবাদিকদের উপর হামলার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজেও তাকে দেখা যায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানোর স্ট্যাটাসও দেখা যায় তার ফেসবুক আইডিতে।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের ৫০৩ নাম্বার কক্ষে প্রবেশ করে লোকসম্মুকে হুমকি দেয় এ ছাত্রলীগ নেতা।

আহত সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু জানান, হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন তারা। এ সময় তাদের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরাও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় মুখে মাক্স ও টুপিসহ জ্যাকেটে পড়ে তাদের চিকিৎসাধীন থাকা সার্জারি ওয়ার্ডের ৫০৩ নাম্বার কক্ষে প্রবেশ করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা স্বরুপ কুমার সেন তন্ময়। সে সময় ওই ছাত্রলীগ নেতা সবার সামনে বলে মামলা করলে পরিণতি ভালো হবেনা। বেশি বারাবারি করলে এরপর তিনজনের লাশও কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

এ কথা শোনার পর সাংবাদিক তানুর চাচাতো ভাই মাসুম রেজা তার মাক্স খুলতে বললে সে উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করে।

পরে ওই ওয়ার্ডে থাকা অন্যান্য রোগীর স্বজনেরা ওই ছাত্রলীগ নেতার আচরণে ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করেন এবং উপস্থিত সবার তোপের মুখে পড়ে দৌড় দিয়ে পালিয়ে যান।

এ সময় তাকে আটকানোর চেষ্টা করা হলে তার জ্যাকেটের টুপি হাসপাতালে পড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুলিশকে ওই টুপি দেয়া হয়।

মাসুম রেজা বলেন, এ কোন দেশে বাস করছি আমরা! যারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করলো তারা এখনো বুক উচিয়ে ঘুরছে এবং তারা হাসপাতালে এসে সাংবাদিকদের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে। এ সাহস কোথা থেকে আসে ছাত্রলীগের উশৃঙ্খল নেতাকর্মীদের।

উপস্থিত সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুর মা রানী আক্তার বলেন, আমার সাংবাদিক ছেলেরা তো খারাপ কিছু করেনি। তারা দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। ওরা কি এ দেশে বিচারও চাইতে পারবেনা। এ কেমন দু:সাহস!

আমার সামনে হুমকি দেয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে নাকি সাংবাদিকদের লাশ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আমি হুমকিদাতা ও সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।

ওই ওয়ার্ডের অন্য এক রোগীর স্বজন কুশাল খন্দকার বলেন, হামলার পর আবার মামলা না করতে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার না করা হলে এ দেশে সাংবাদিকতা পেশাটি বিলুপ্ত পেশা হতে বেশিদিন সময় লাগবেনা। এর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনার পর নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে হামলার শিকার হওয়া তিন সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু, মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল ও সোহেল রানা।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে চিকিৎসারত সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। হুমকিদাতা পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি।

এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে তিন সাংবাদিককে হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ঘটনার দিন গতকাল শনিবার শহর চৌরাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাংবাদিক মহল ও সাধারণ মানুষ। এছাড়াও এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান হামলার শিকার হওয়া আহত সাংবাদিকগণ।